‘ছেলেটার আর ইঞ্জিনিয়ার হওয়া হলো না’
স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করার। কিন্তু তা আর হয়নি রাজধানীর গেণ্ডারিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার কবির আনাসের। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিন চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই তাদের পরিবারে শোকের আবহ।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ছেলে খুবই ভদ্র ছিল। স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবে। ছেলেটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া হলো না। পুলিশের গুলি ওর জীবন নিলো। আমার ছেলে শহীদের মর্যাদা পাক, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাক।
এর আগে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিন বাবা-মায়ের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় আনাস।
চিঠিটি আরটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘মা, আমি মিছিলে যাচ্ছি। নিজেকে আর আটকিয়ে রাখতে পারলাম না। সরি আব্বুজান, তোমার কথা অমান্য করে বের হলাম। স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। আমাদের ভাইয়েরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নেমে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিচ্ছে।
একটি প্রতিবন্ধী কিশোর, সাত বছরের বাচ্চা, ল্যাংড়া মানুষ যদি সংগ্রামে নামতে পারে, তাহলে আমি কেন বসে থাকব ঘরে!
একদিন তো মরতেই হবে। তাই মৃত্যু ভয় করে স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে না থেকে সংগ্রামে নেমে গুলি খেয়ে বীরের মতো মৃত্যুও অধিক শ্রেষ্ঠ। যে অন্যের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দেয়, সেই প্রকৃত মানুষ। আমি যদি বেঁচে না ফিরি, তবে কষ্ট না পেয়ে গর্বিত হইয়ো। জীবনের প্রতিটি ভুলের জন্য ক্ষমা চাই। ’
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ। তিনি গুলিবিদ্ধ আনাসকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান।
সৌরভ বলেন, আমরা একই জায়গায় আন্দোলন করছিলাম। পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি করছিল। আনাসের বুক-পেট বরাবর গুলি লাগে। হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন