শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, রাবিতে বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল থেকে মিছিল নিয়ে এসে বুদ্ধিজীবী চত্বরে মিলিত হয় শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা ‘নিপীড়নদের বিরুদ্ধে, লড়াই হবে একসাথে’, ‘রাবিয়ানদের একশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘সাগরদের (সাদিকুল ইসলাম সাগর) ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ধর্ষকদের আস্তানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেনত 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ' নামক ফেসবুক গ্রুপে এক বোন পোস্ট দিয়েছে। তিনি আইন বিভাগের শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম সাগরের হাতে ধর্ষণে শিকার হয়েছে। যৌন নিপীড়ন বিরোধী যেই সেল আছে, তিনি সেই সেলেরই একজন সদস্য। অথচ তিনি নিজেই একজন ধর্ষক। এদেরকে এই স্থানে বসানোর মতো স্পর্ধা গত ১৫ বছরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা দেখেছি। আমাদের জুবেরী ভবন শিক্ষকদের গেস্ট খানা নয়, আসলে সেটা ধর্ষকদের আস্তানা। যতদিন পর্যন্ত ধর্ষকদের বিচার না হবে, ততোদিন পর্যন্ত এই আস্তানা বন্ধ থাকবে। এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে যত ধর্ষণ হয়েছে অধিকাংশই জুবেরী ভবনে হয়েছে। অথচ শিক্ষকরা এনিয়ে কিছুই বলেনা।
রাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক যৌন নিপীড়নের ঘটনায় পার পেয়েছেন কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বর্তমানে স্বৈরাচারের কোনো দোসর, যৌন নিপীড়ক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পার পাবে না। কোনো যৌন নিপীড়ককে ছেড়ে দেওয়া হবে না। যেসব শিক্ষক যৌন নিপীড়নের সাথে এবং জড়িত ছিলো তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে এবং নারী শিক্ষার্থীদের সাথে যৌন নিপীড়নের যে ঘটনাগুলো এর আগে ঘটেছে সেসব সামনে আনার আহ্বান জানান এই সমন্বয়ক।
এর আগে সকাল ১১ টার দিকে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামের একটি ফেইসবুক গ্রুপে নাফিসা নাহিন নামক একটি ফেইসবুক আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরকে ধর্ষক সম্বোধন করে একটি পোস্ট করেন। মুহুর্তেই পোস্টটি ছড়িয়ে পড়ে অনেকের কাছে।
ওই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। একটি বিষয় আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে শেষ করে দিচ্ছে। আইন বিভাগের সাদিকুল ইসলাম সাগর আমাকে ধর্ষণ করেছে। নানা ভাবে উত্যক্ত করে আমাকে জুবেরী গেস্ট হাউসে নিয়ে অনেক দিন অত্যাচার করেছে। আপনারা যদি জুবেরি ভবনের কর্তৃপক্ষকে চেপে ধরেন, আসল সত্যটা জানতে পারবেন। লম্পট দুশ্চরিত্র এই লোকের বিচার চাই, হয়তো আমি বাঁচবো না, বেঁচে থাকার ইচ্ছা আমার নেই। এখনো মানসিক পীড়ায় রেখেছে। ক্যাম্পাসে তার ভয়ে যেতে পারি না। আমার জন্য বিচার চাই না, যেন আর কোন মেয়ের জীবন ধ্বংস না হয়! আমার জানামতে ডিপার্টমেন্টের বাইরেও অনেক মেয়েকে তিনি ব্লাকমেইল করে, জোর করে বেডে নিয়ে যায়। ইদানিং আমার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। বিচার যখন করছেন আপনারা, এই কার্লপ্রিটের বিচার করবেন।’
মন্তব্য করুন