তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সকল আন্তর্জাতিক নদীর ন্যায্য হিস্যার দাবিতে আকস্মিক গজলডোবা বাঁধ খুলে রংপুর বিভাগে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন নোবিপ্রবিতে অধ্যয়নরত রংপুর বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা তিস্তা প্রকল্প দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বেলা ১১টায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে রংপুর বিভাগ থেকে আগত শিক্ষার্থীরা।
উজানের পাহাড়ি ঢল আর বিগত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা।
জানা গেছে, তিস্তা নদীবেষ্টিত ৫০টি গ্রামের ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফলে এসব এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গ্রামীণ রাস্তাঘাট ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। বন্যার আতঙ্কে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে। এমন আকস্মিক বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়ছে বানভাসিরা। এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো বন্যার কবলে পড়ল তিস্তাপাড়ের মানুষ।
সমাবেশে শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে জনমনে প্রচলিত থাকলেও আমরা কখনোই ভারতের কাছ থেকে এমন আচরণ পাইনি। বিগত কিছুদিন আগে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা শুনেছিলাম যার ফলে তিস্তা পাড়ের মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল কিন্তু পতিত স্বৈরাচার হাসিনা টালবাহানার কারণে সেটা আর বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা আশা করছি, ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যে নতুন সরকার এসেছে তারা তিস্তা পাড়ের মানুষের কথা চিন্তা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, ভারত সরকারকে অবিলম্বে তিস্তা নদীসহ ৫১টি অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চাই কিন্তু আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে অটল থাকবো। সর্বোপরি আমরা ফেনী নোয়াখালী অঞ্চলে বন্যার সময় যেভাবে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি ঠিক তেমনি উত্তরাঞ্চলের বন্যার এই দুঃসময়ে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।’
সমাবেশে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমরা খুব উদ্বোগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি ভারত নিয়মতান্ত্রিক ভাবে কিছুদিন আমাদের উত্তরাঞ্চল আবার দক্ষিণাঞ্চলে কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে আকস্মিকভাবে বন্যার মুখোমুখি করছে। যা মানবাধিকারের সরাসরি লঙ্ঘন। আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে অনুরোধ করবো দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের মানুষকে এ দুরাবস্থা থেকে মুক্তি দেয়।’
আরটিভি/এমকে /এআর
মন্তব্য করুন