জাবিতে ছাত্রশিবিরের ৪১ দফা প্রস্তাবনা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে (জাবি) সংস্কারের জন্য ৪১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
রোববার (৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
এ সময় সংগঠনটির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন সাকিরের সঞ্চালনায় শিবির সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি এবং শিবির সেক্রেটারি মুহিবুর রহমান মুহিব ৪১ দফা লিখিত প্রস্তাবনা পাঠ করেন।
ক্যাম্পাস সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো হলো, জুলাইয়ে আহত বিপ্লবীদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নির্যাতন ও আক্রমণের তদন্ত এবং বিচারের ব্যবস্থা, ১৬ জুলাইকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন ও জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি সংরক্ষণ, জাকসু চালু, হল সংসদ ও বিভাগওয়ারী শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন, ভিসি ফারজানা ইসলামের আমলে সংঘটিত উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতিসহ স্বৈরাচার আমলের সকল ভিসির দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ, হল দখল, ছাত্র নিপীড়ন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিচার, খুন ও হত্যার বিচারের নিশ্চয়তা, আবাসিক হলের নিয়মতান্ত্রিক আসন বণ্টন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সকল প্রকার মাদক ব্যবসা এবং মাদক সেবনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার, লাইব্রেরি সেবার মান আধুনিকায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮-এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিল করে নতুন আঙ্গিকে এ অধ্যাদেশ সংস্কার করতে হবে ইত্যাদি।
প্রস্তাবনা পাঠ শেষে শিবির নেতারা বলেন, আমরা আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু, নিরাপদ এবং আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ছাত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করে যাওয়া, যেখানে সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ ও সম্মান থাকবে। আমাদের বিশ্বাস, একটি কার্যকরী ও সমন্বিত শিক্ষাব্যবস্থা কেবল শিক্ষার গুণগত মান বাড়াবে না, বরং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শক্তিশালী, সচেতন এবং নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের দলের রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার প্রতিশ্রুতি জানাচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও বিশ্বাস নির্বিশেষে ইনসাফ নিশ্চিত করা। এর মাধ্যমে আমরা একটি কার্যকর ও প্রতিনিধিত্বমূলক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি যা সকল শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা করবে।
তারা আরও উল্লেখ করেন, তাদের এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, ক্যাম্পাসের পরিবেশ হবে নিরাপদ ও আনন্দময় এবং শিক্ষার গুণগত মান পাবে উৎকর্ষতা।
এ ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রূপে গড়ে তুলতে প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়নে সকল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রত্যাশা করেন তারা।
আরটিভি/এমকে-টি
মন্তব্য করুন