• ঢাকা শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১
logo

হলের পুরোনো নাম ফেরত চেয়ে ছাত্রীদের বিক্ষোভ

বাকৃবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:৩০
হলের পুরোনো নাম ফেরত চেয়ে ছাত্রীদের বিক্ষোভ
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) জুলাই ৩৬ হলের ছাত্রীরা হলের পূর্ব নাম বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তবে বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন বাকৃবির সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাতে জুলাই ৩৬ হলের শিক্ষার্থীরা তাদের হলের পুরোনো নাম ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা প্রভোস্ট কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাকৃবির সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে জুলাই ৩৬ রাখা হয়। কিন্তু হলের ছাত্রীরা এটি মেনে নেননি। শুরুতে হলের ভেতরে তারা বিক্ষোভ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ছাত্রীরা হল থেকে বের হয়ে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীরা তাদের লিখিত অভিযোগে বলেন, ‘প্রভোস্ট ম্যাম অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে পারেন নাই। প্রক্টরিয়াল বডি এবং ছাত্র-বিষয়ক উপদেষ্টা হলে এসেই ফ্যাসিবাদের দোসর ট্যাগ দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থী কারা? এমন উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে আইডি এবং ফ্যাকাল্টি জানতে চায় এবং হুমকি দিয়েছেন ভাইভা বোর্ডে ফেইল করিয়ে দেওয়ার। সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন স্যার, ‘বঙ্গমাতার সঙ্গে এতো পিরিত কেন?’ এমন বক্তব্য দিয়েছেন হলের নাম মেনে না নেওয়ায়। সহকারী প্রক্টর আনিসুর রহমান মজুমদার (টিটু) স্যার ব্যক্তিগত অ্যাটাক করেন। একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন এবং ‘তুমি ছাত্রলীগ’ এমন অপবাদ দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, নতুন প্রবর্তিত নাম ‘জুলাই ৩৬’ চাই না, পূর্বের নাম ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ বহাল চাই। সিন্ডিকেটের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা হোক এবং সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত পূর্বের নাম বহাল থাকবে।

এ বিষয়ে বাকৃবির সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন বলেন, ‘ছাত্রীদের আমরা বলি, যেহেতু এটা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত তাই আমাদের কিছু করার নেই, তোমাদের কোনো অভিযোগ থাকলে তোমরা লিখিত দাও। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের গালিগালাজ করে এবং বলে, সিন্ডিকেটকে এখানে ডাকেন, হলের আগের নামটি আমাদের আবেগ। আপনারা কি করবেন, আমাদের ফেইল করিয়ে দেবেন, দেন।’

সহকারী প্রক্টর আরও বলেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের বুঝাতে, তবে তারা উল্টো আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে। এখনো ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারীর দোসররা আছে, তাদের ইন্ধনেই এসব ঝামেলা হচ্ছে।’

বাকৃবির জুলাই ৩৬ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. তাহসিন ফারজানা বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের অনেক বুঝাতে চেষ্টা করেছি যে বিষয়টি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত। তবে তারা কিছুতেই বোঝতে রাজি হয়নি এবং পরবর্তীতে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে চলে যায়। তখন আমি অনেক্ষণ অপেক্ষা করে সেখান থেকে চলে যাই। তবে আমি সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি।

ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো শহীদুল হক বলেন, সেখানে উপস্থিত একজন শিক্ষক বলেছিলেন যারা জুলাই ৩৬ হলের পূর্বের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল চায় তারা স্বৈরাচারের দোসর। এ ছাড়া আর কোন কিছু বলেছে এমন মনে পড়ছে না। আমি সেখানে উপস্থিত ছাত্রীদের বলেছিলাম, হলের নাম পরিবর্তন চাইলে লিখিত আবেদন যেন করে।

ছাত্রীদের ছাত্রলীগ ট্যাগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এমন কিছু বলতে শুনি নাই।’

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৩২৭তম অধিবেশনে গৃহীত ৭নং সিদ্ধান্তমূলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান/নির্মাণাধীন হলসমূহ, নতুন ভবন এবং স্থানের নাম পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তিত নামসমূহ হলো- বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের পরিবর্তিত নাম জুলাই ৩৬ হল, রোজী জামাল হল থেকে কৃষিকন্যা হল, নির্মাণাধীন নতুন ছাত্রী হল (অথবা অন্য যে নামেই থাকুক না কেন) থেকে বেগম খালেদা জিয়া হল, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া পিএইচডি ডরমেটরির পরিবর্তিত নাম শহীদ সাদ ইবনে মমতাজ পিএইচডি ডরমেটরি, নতুন অতিথি ভবন/গেস্ট হাউজ থেকে কৃষিবিদ গেস্ট হাউজ এবং বঙ্গবন্ধু চত্বরের পরিবর্তিত নাম সমাবর্তন চত্বর।

আরটিভি/এমকে

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • শিক্ষা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাকৃবিতে রঙিন গোলাকার মুলার পরীক্ষামূলক উৎপাদন
বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে সফল বাকৃবির গবেষক দল
বাকৃবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু ৯ ডিসেম্বর
ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হতে পারে আমের আঁটি