জাবিতে দিনব্যাপী প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত
‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রজাপতি মেলা-২০১৯। এ উপলক্ষে র্যালি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ, বক্তৃতা, প্রজাপতি বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং প্রজাপতির উপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী করা হয়।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ব শাখারে উদ্যোগে দিনব্যাপী এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রজাপতির অসাধারণ সৌন্দর্য খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে দেশের দুর-দূরান্ত থেকে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছুটে আসেন কয়েক হাজার দর্শনার্থী। প্রজাপতির সুরে কথা বলতে ও তার রূপে মুগ্ধ হতে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ক্যাম্পাসে ঢল নেমেছে প্রজাপতি প্রেমীদের। কিন্তু প্রজাপতি দেখতে এসে রীতিমতো হতাশ দর্শনার্থীরা। যেই প্রজাপতিদের নিয়ে মেলা তার ছিটে ফোঁটাও নেই মেলায়। এ নিয়ে দর্শনার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশে সাড়ে তিন শ’ থেকে চার শ’ প্রজাতির প্রজাপতি দেখা যায়। এরমধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখা যায় প্রায় এক শ’ দশ প্রজাতির প্রজাপতি। কিন্তু প্রজাপতি বিচরণ ও বাসযোগ্য পরিবেশ ব্যাহত হওয়ায় বর্তমানে এই সংখ্যা ৭০ থেকে ১০ প্রজাতির কোটায় নেমেছে।
প্রতিবছর মেলা প্রাঙ্গণের সামনে অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি দর্শনের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে জীবন্ত প্রজাপতি দেখে মন পুলকিত হতো হাজারো দর্শনার্থীর। তবে এবছর দর্শনার্থীদের বিমুখ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
রাজধানীর মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে মেলা দেখতে আসা মো. লতিফুর রহমান জানান, ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে এসেছিলাম একসঙ্গে অনেক প্রজাপতি দেখব বলে কিন্তু এখানে এসে দেখি কোথাও প্রজাপতি নেই। ধামরাই সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, পুরো মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে কোথাও প্রজাপতি পাই নি। তাই হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। সাভার মর্নিং গ্লোরি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী আনিতা বলেন, প্রজাপতি দেখতে এসেছিলাম। কোথাও প্রজাপতি নেই। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে একাধিক দর্শনার্থীর এমনি মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে মেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন বলেন, পরিবেশ, জলবায়ু ও অবকাঠামোগত কারণে কমছে প্রজাপতির সংখ্যা। এরসঙ্গে আমাদের দায়িত্বহীনতাও দায়ী। ক্যাম্পাসে প্রজাপতির বাসযোগ্য পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। প্রজাপতি বিচরণের সুষ্ঠু পরিবেশ পাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড়গুলো উজাড় করা থেকে বিরত থেকে কীটপতঙ্গের বাসযোগ্য পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে হবে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক প্রজাপতি রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
আজকের মেলা থেকে প্রজাপতি গবেষণায় সার্বিক অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. এ. বাশারকে বাটার ফ্লাই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া বাটার ফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন সবুজবাগ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী অরুরাভ ব্রনো।
এজে
মন্তব্য করুন