জাবিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
এ সময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, আবাসিক হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, বিভিন্ন হল প্রভোস্ট এবং অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন
বঙ্গভবনে যাওয়ার দাওয়াত পেয়েও প্রত্যাখ্যান করল রাবির সমন্বয়ক
রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিনের আমন্ত্রণ পেয়ে প্রত্যাখ্যান করলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।
পোস্টে তিনি লিখেন, ‘খুনি চুপ্পুর দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করছি। যদিও দাওয়াতটা খুবই দরকার ছিল। কারণ ৬ হাজার ১৪৩ জন শিক্ষার্থীর পোষ্য কোটা বাতিলের পক্ষে স্বাক্ষর করা স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছানোর সুযোগ দরকার ছিল। কিন্তু এই আমন্ত্রণে যাওয়া মানে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি ঠেকাতে আরেকটা বেইমানের সহযোগিতা নেওয়ার মতো ব্যাপার হবে। তাই যাচ্ছি না। তবে রাবির শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আমি মন্ত্রণালয়ে উঠিয়ে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।’
কীসের জন্য ইনভাইটেশন তা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘এটা একটি রাষ্ট্রীয় দাওয়াত ছিল। যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪০ জনকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। রাজশাহী থেকে শুধু আমাকেই দাওয়াত দেন। আমরা সারা বাংলাদেশের ৪০ জন সমন্বয়কই তা প্রত্যাখ্যান করলাম। প্রধান উপদেষ্টা দাওয়াতে আমরা যাব। কিন্তু খুনি চুপ্পুর দাওয়াতে আমরা যাব না।’
আরটিভি/এমকে/এআর
রাজনীতিবিদরা প্রতারণা করছেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ
রাজনীতিবিদরা প্রতারণা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের ‘সাতচল্লিশ-একাত্তর-চব্বিশ: আমাদের বিজয়ের পথপরিক্রমা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
হাসনাত বলেন, রাজনীতিবিদরা আমাদের সঙ্গে যে প্রতারণা করছেন এটা আমরা দেখছি। আমরা যেভাবে অতীতকে বর্তমানের কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছি ঠিক একইভাবে আপনাদের বর্তমান ভবিষ্যতে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমাদের বর্তমানে রাজনীতিবিদ যারা রয়েছেন আপনারা সংসদভবনমুখী হচ্ছেন, মিনিস্ট্রি দখল করবেন, গাড়িতে পতাকা উড়বে; কোনো সমস্যা নেই। আমরা রক্ত দিয়েছিলাম যেন আপনাদের যাদের গাড়িতে পতাকা ওঠার যোগ্য, তারাই আসেন। তবে আপনারা আমাদের সঙ্গে যে প্রতারণা করছেন এটা আমরা দেখছি।
তিনি বলেন, আজকের প্রোগ্রামের টাইটেল ‘৪৭, ‘৭১ এবং ‘২৪-এর বিজয়ের পরিক্রমা। ৪৭ এ যদি বিজয় হতো তাহলে ৭১ হতো না, আবার একাত্তরে বিজয় অর্জন হলে ২৪ হতো না। এটা আসলে বিজয়ের পরিক্রমা না, এটা হচ্ছে জাতি হিসেবে আমরা যে প্রতারিত হয়েছি, সেই প্রতারণার পরিক্রমা। আমরা ৪৭, ৭১-এ প্রতারিত হয়েছি। ২৪-এ প্রতারিত হচ্ছি কি না সেটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বারবার প্রতারিত হয়েছি বলেই আমাদের চব্বিশের অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জা নেই। যে সংবিধান রাজনীতিবিদদের রাজনীতি করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, ৫ আগস্ট পরে কিছু কিছু রাজনীতিবিদদের সেই সংবিধানের প্রতি বিশাল মমত্ববোধ তৈরি হয়েছে। এটা জাতি হিসেবে আবার আমাদেরকে প্রতারণার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
হাসনাত বলেন, ৭২ সালে আমাদের একটি সংবিধান বানাইছে, এটা স্রেফ একটা গার্বেজ। আজকে রাষ্ট্রপতির দাওয়াত ছিল, যে রাষ্ট্রপতি এই সংবিধান থেকে আসছে। ৫ আগস্ট এই সংবিধান শেষ। ওইদিনই রাষ্ট্রপতি শেষ। ফলে ওনার দপ্তর থেকে দাওয়াতে আমি যাব এটা আমার নিজের সঙ্গে প্রতারণা। আজকে যারা রাষ্ট্রপতির দাওয়াতে গিয়েছে তারা বিপ্লবে বিশ্বাস করে না অথবা তারা মনে করে সংবিধানে তাদের একটা স্টেক আছে।
৭২ এর সংবিধান বিদেশ থেকে আমদানি করা মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, গণপরিষদ করা হলো, বিদেশে ঘুরতে গেলাম জনগণকে রিসার্চ করলাম না, জনগণের সঙ্গে কথা বললাম না। বিদেশ থেকে এখানে ইমপোর্ট করলাম এটা। এভাবে প্রতারিত হয়েছি বলেই ২৪’এর অবতারণা হয়েছে।
সভায় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে কোনো মাইনরিটি নেই। মাইনরিটি তারাই যারা বাংলাদেশ ধারণায় বিশ্বাস করে না। দেশে কেউ ধর্মীয় বা জাতিগত কারণে মাইনরিটি হতে পারে না। আপনি মুসলমান হয়ে যদি আপনি বাংলাদেশ ধারণায় বিশ্বাস না করেন আপনি মাইনরিটি, তখন আপনি যে ধর্মেরই হন আপনি মাইনরিটি। যখনই তাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় দরকার প্রয়োজন হয়েছে, তারা মাইনরিটি কার্ড খেলেছে।
নরেন্দ্র মোদির বিজয় দিবস নিয়ে স্ট্যাটাসের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিজয়কে তিনি ভারতের বিজয় বলে দাবি করছেন। যদি এটা ভারতের বিজয় হয়ে থাকে তাহলে একাত্তরে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান করেছে তারা কি সঠিক ছিল? আর যদি তা না হয় তাহলে ভারত মিথ্যাচার করছে।
সভায় ঢাবি শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমের সভাপতিত্বে যুক্তরাজ্যের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্যা গালিব, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহিন সরকার বক্তব্য রাখেন।
আরটিভি/একে/এআর
মাহিনের আইন মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা, সারজিস-হাসনাতের একাত্মতা
বিডিআর হত্যার বিচার দাবিতে অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকারের আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশন বাতিল করায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. মাহিন সরকার কমিশন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার যে ঘোষণা দিয়েছে, তার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আগামীকাল সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা হবে, ইনশাআল্লাহ।
এর আগে মাহিন সরকারের পোস্ট শেয়ার ও একাত্মতা প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার ভাই মাহিনের পক্ষে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে। (হ্যাশট্যাগ) আইএমউইথমাহিন।’
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে বিডিআর হত্যার বিচার দাবিতে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে বলেও তিনি জানান।
ফেসবুক পোস্টে মাহিন সরকার বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে কমিশন গঠনে গড়িমসি করে এই সরকার দেশের তামাম জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যা স্পষ্টতই প্রহসনের শামিল।
তিনি বলেন, একাত্তরে বাংলাদেশের আপামর মুক্তিকামী জনতার অর্জিত বিজয়কে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত তাদের নিজেদের জয় বলে আখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে অবহেলা করা এবং ভারতের এমন ইতিহাস বিকৃতির স্পষ্ট প্রতিবাদ না জানানো স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। এরই প্রতিবাদে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একজন নগণ্য অংশীদার হিসেবে আমি মাহিন সরকার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ভিকটিম পরিবারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আগামীকাল (১৭ ডিসেম্বর) আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করবো। আমার সঙ্গে যদি কেউ না-ও যায়, এমনকি পুরো বাংলাদেশের একজনও যদি আমার পক্ষে না থাকে তবু আমি আমার এই দৃঢ় অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র পিছু হটবো না।
তিনি আরও বলেন, কোনও ভিনদেশি পরাশক্তি কিংবা হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতায় আসীন হওয়া এই অন্তর্বর্তী সরকারও যদি আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তবু আমি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে আমৃত্যু লড়ে যাবো। এই বিচার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সংস্কার কার্যক্রম কিংবা কমিশন গঠনের নামে দীর্ঘসূত্রতার কোনও পদক্ষেপকে আমি গ্রাহ্য করবো না।
আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করতে ছাত্র-জনতাকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসার আহবান জানিয়ে মাহিন আরও বলেন, আগামীকাল সকাল ১১টায় সচেতন ছাত্র-নাগরিকের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।
আরটিভি/কেএইচ
তিন শিক্ষার্থীকে ‘গুপ্তহত্যার’ প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষার্থীকে ‘গুপ্তহত্যা’র প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে মিছিলটি শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের এই মিছিলের ব্যানারে লেখা ছিল ‘জুলাই অভ্যুত্থান ও ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনের তিন সহযোদ্ধার গুপ্তহত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল।’
বিক্ষোভকারীরা সম্প্রতি দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এআইইউবি) শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্ত ও ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবির হোসেন শিহান ও ভাষানটেক সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুজানা হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেন।
মিছিলটি ভিসি চত্বর ও হলপাড়া হয়ে আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, যে বিপ্লবীদের কাঁধে ভর দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই বাংলাদেশে বিপ্লবীদের লাশ রাস্তায় পড়ে থাকে। বিপ্লবীদের রক্ত মাড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ক্ষেত্রে নির্বিকার-নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে। এটা অশনিসংকেত। আমাদের স্বপ্নের কথা, প্রত্যাশার কথা আপনারা ভুলে গেছেন। ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেট নিয়ে এ দেশে রাজনীতি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিগত সময়ে দেখেছি- আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীরা বলতেন দুর্নীতিবাজরা কোথায় দেখিয়ে দিন, আজকেও দেখেছি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন- ওবায়দুল কাদের কোথায় বলেন, আমরা গ্রেপ্তার করি। বিগত সময়ে কোথাও কোনো ভিন্নমতাবলম্বী মানুষজন ফিসফাস করে সেটা এক মিনিটে জেনে যায়। এখন পুলিশ প্রশাসন মন্ত্রী আমলারা কী করে, আমরা জবাব চাই। ছাত্রলীগ এখনও ৩২ এ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় হামলা, মিটিং, মিছিল, ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। অথচ প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, আমরা ধিক্কার জানাই।
ভূতত্ব বিভাগের ছাত্র আবদুল কাদের বলেন, আমাদের শরীরের শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব। গুপ্তহত্যা করে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা এখানে কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি জানাতে এসেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী, এই নতুন বাংলাদেশে কেন বিপ্লবীদের রক্ত ঝরে তার জবাব দিতে হবে প্রশাসন দিতে হবে। আমাদের বিপ্লবীদের রক্ষা এই সরকারকে করতে হবে। নাহলে এই সরকারের বিরুদ্ধেই আমরা আন্দোলন করব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মঞ্জু বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতেহা শারমিন এ্যানি, নিতু আক্তার।
সমাবেশ শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় বলেন, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাতনামা একজনের নির্মম মৃত্যু আমাদের সমাজের নিরাপত্তাব্যবস্থার ভয়ানক চিত্র তুলে ধরেছে। ওয়াজেদ সীমান্ত ও তাজবির হোসেন শিহানের মতো স্বপ্নময় তরুণেরা দুর্বৃত্তদের হাতে প্রাণ হারাচ্ছেন, যা একদিকে জাতির ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করছে, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় আমরা গভীর শোকাহত। কিন্তু শোকের সঙ্গে আমাদের ক্ষোভও আছে। গাজীপুরের তাজবির হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, যা ন্যায্য ও যুক্তিসংগত। এই দাবি বাস্তবায়নই পারে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রতি প্রশাসনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হলেও এখনও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বাকের মজুমদার বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই, অপরাধীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুন। রাজধানীসহ সারা দেশে টহল জোরদার করুন, যাতে আর কোনো মা-বাবার সন্তান এভাবে প্রাণ না হারান।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজবির হোসেন শিহানকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। একইদিন নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সীমান্ত। এর দুইদিন পর শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সবশেষ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের লেক থেকে ভাষানটেক সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুজানার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আরটিভি/কেএইচ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল দাহ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বিজয় দিবস’ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। মিছিল শেষে মোদীর কুশপুতুল দাহ করে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) মিছিলটি কলাভবন-সূর্য সেন হল-মল চত্বর-স্মৃতি চিরন্তন হয়ে টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দাদারা ব্রিটিশদের ও বাবারা পাকিস্তানের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। আমাদের তরুণ দামালদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন ভারতের আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী লীগের দোসর উৎপাটন করতে আপনারা প্রস্তুত হন। ১৯৭১ সালে ভারত সহযোগিতা করেছিল তাদের স্বার্থের কারণে এবং আমরা সাহায্য নিয়েছিলাম সেই স্বার্থের কারণে আমরা সাহায্য নিয়েছিলাম। বিজয় দিবসে মোদী যে বক্তব্য রেখেছেন, আমার মনে হয় ভারতের জনগণ এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হবেন না। সরকার যাবে, সরকার আসবে ভারত-বাংলাদেশের মানুষের যে সম্পর্ক সেটি থাকবে কিন্তু সরকারের কথায় ব্যবহার হওয়া যাবে না।’
এতে অন্যান্যদের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের সিনিয়র সভাপতি নাহিদুদ্দিন তারেক, ঢাবি শাখা সদস্য সচিব রাকিবুল হাসান, আহ্বায়ক সানাউল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরটিভি/এসএপি
জাবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন শুরু ১ জানুয়ারি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনার কমিটির সদস্য সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলী রেজা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে ২১ মে রাত ১২টায় শেষ হবে। পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবার মোট ১০ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ, বি, সি ও ডি ইউনিটের প্রতিটির জন্য ৯০০ টাকা, ই ইউনিটের জন্য ৭৫০ টাকা, সি-১, এফ, জি ও এইচ ইউনিটের জন্য ৬০০ টাকা এবং আই ইউনিটের জন্য ৫০০ আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, এ ইউনিটের অধীনে গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ, বি ইউনিটের অধীনে সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদ, সি ইউনিটের অধীনে কলা ও মানবিকী অনুষদ, সি-১ ইউনিটে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ এবং চারুকলা বিভাগ, ডি ইউনিটের অধীনে জীববিজ্ঞান অনুষদ, ই ইউনিটের অধীনে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ, এফ ইউনিটের অধীনে আইন অনুষদ, জি ইউনিটের অধীনে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, এইচ ইউনিটের অধীনে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং আই ইউনিটের অধীনে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
আরটিভি/এএএ
গাড়িচাপায় বুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু: মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন গ্রেপ্তার তিনজন
রূপগঞ্জের ৩০০ ফিট এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ (২২)। এ ঘটনায় ডোপ টেস্ট করা হয়েছে গ্রেপ্তার তিন আসামির, যেখানে তাদের মদ্যপ অবস্থায় থাকার প্রমাণ মিলেছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী।
আসামিদের মধ্যে আছেন প্রাইভেটকারের চালক মুবিন আল মামুন (২০)। তিনি রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার বাসিন্দা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুনের ছেলে। গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন ওই গাড়িতে থাকা মিরপুর পীরেরবাগ এলাকার রিজওয়ানুল করিমের ছেলে মিরাজুল করিম (২২) এবং উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের বাহাউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে আসিফ চৌধুরী। গ্রেপ্তার তিনজনই শিক্ষার্থী। তাদের গাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে একটি মদের খালি বোতল ও এক ক্যান বিয়ার পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে আসামিরা মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন এবং গাড়ির কাগজপত্র না দেখাতে পারায় তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
এদিকে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন, বুয়েটের আহসানউল্লাহ হলের অমিত সাহা (২২) ও মেহেদী হাসান (২১)। মাসুদসহ তারা তিনজনই বুয়েটের সিএসই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, মাসুদের বাসা রাজধানীর কলাবাগানে। অমিত ও মেহেদী হাসান বুয়েটের আহসানউল্লাহ হলে থাকেন। রাতে তিনজন মোটরসাইকেল নিয়ে ৩০০ ফিট এলাকায় ঘুরতে যান। সেখানে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় তিনজন আহত হন। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মাসুদকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া, আহত অমিতকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে এবং মেহেদীকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর