জাবিতে নেপালি শিক্ষার্থী আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৬ নম্বর কক্ষে মাদক সেবনরত অবস্থায় এক নেপালি শিক্ষার্থীকে আটক করেছে মীর মশাররফ হোসেন হল প্রশাসন।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে মাদকসেবনরত অবস্থায় আটক করা হয়।
আটককৃতের নাম আশির্বাদ যাদব। তিনি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। তার বাড়ি নেপালের কাঠমান্ডুতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩১৬ নম্বর কক্ষ থেকে গাঁজার দুর্গন্ধ পেয়ে আমরা হল প্রাধ্যক্ষকে জানাই। পরে প্রাধ্যক্ষ স্যার হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওই কক্ষে অভিযান চালান এবং তাকে গাঁজাসহ হাতেনাতে আটক করে। এ সময় তার কাছে ৪ প্যাকেটে ১০ গ্রাম গাঁজা ও গাঁজা খাওয়ার সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
আটককৃত আশির্বাদ যাদবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে মার্কেটিং ৪৭ ব্যাচ শিক্ষার্থী খালেদ সিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করে মীর মশাররফ হোসেন হলে রাতযাপনের জন্য আসেন। পরে খালেদ সিয়াম তাকে হলের ৩১৬/বি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করেন। ওই কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বাস্কেট বল খেলোয়াড় কামরুল থাকেন।
তিনি জানান, বাস্কেটবল খেলার সূত্রে তারা তিনজন পূর্বপরিচিত।
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা মাদকবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইনফরমারদের তথ্যমতে ৩১৬/বিতে অভিযান চালাই। সে প্রথমে অস্বীকার করে, কিন্তু অভিযানে তাকে গাঁজাসহ পাওয়া যায়। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সে হলে এর আগেও এসেছে। আমরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলমের উপস্থিতিতে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করি।
এ বিষয়ে জানতে ৩১৬/বি কক্ষের আবাসিক ছাত্র ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় কামরুলকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে খালিদ সিয়ামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে হল প্রাধ্যক্ষকে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, মাসখানেক আগে বাস্কেটবল খেলার সূত্র ধরে আমাদের পরিচয় হয়। আজকে ভোরবেলা সে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়েছে। আমি এখন ঢাকায় আছি। অভিযানে কামরুলের কক্ষে মাদকসেবনের বিভিন্ন উপকরণ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ৩১৬/বি কক্ষের আবাসিক ছাত্র কামরুল বলেন, আমি হল ছেড়েছি গত সেপ্টেম্বর। হল থেকে মালামাল নিয়ে আসিনি। তাই আমার চাবিটা খালিদের কাছে দিয়ে আসি। আমি আশির্বাদ যাদবকে চিনি। তবে সে যে বৃহস্পতিবার আমার রুমে ছিল এটা আমি জানি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, তাকে মাদকসহ পাওয়া গেছে। আমরা তাকে এভাবে ছেড়ে দিতে পারি না। তাই তাকে আমরা আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হল প্রাধ্যক্ষকে বলেছি।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার এস আই মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা তাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
আরটিভি/এএএ/এস
মন্তব্য করুন