• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১
logo

প্রশাসনের অবহেলায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে খাবার, রাবি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

রাবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:২৯
ছবি : আরটিভি

ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ হোটেলগুলোতে খাবারের দাম বাইরের থেকে বেশি রাখছেন বলে অভিযোগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের তুলনায় ভিতরে খাবারের দাম চড়া দিয়ে কিনছেন তারা। এছাড়া প্রশাসন বিষয়টি তদারকি করতে ব্যর্থ বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

সরজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের দোকানগুলোতে সিঙ্গারার দাম পাঁচ টাকা রাখা হলেও ক্যাম্পাসের ভিতরে টুকিটাকি তে রাখছেন ৭ টাকা করে। যদিও বিগত প্রশাসন ৬ টাকা করে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিলেন। চপের দাম বাহিরে পাঁচ টাকা হলেও টুকিটাকি ও সিলসিলাতে ৭-৮ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এমন চিত্র শুধু টুকিটাকি বা সিলসিলাতেই নয় ক্যাম্পাসের সব দোকানেই দাম বেশি রাখছেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে পিঁয়াজুর দাম ৬ টাকা রাখলেও সাইজ অনেক ছোট। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি চায়ের দোকানের চা এক টাকা বাড়িয়ে ছয় টাকায় বিক্রি করছেন ক্যাম্পাসের দোকানীরা। এছাড়া সকালের নাস্তা, পরোটা ও ভাজিতেও দাম বাড়ানো হয়েছে। বিগত প্রশাসন ৮ টাকার পরোটা ২ টাকা কমিয়ে ৬ টাকা করলেও ডাল ভাজির দাম নির্দিষ্ট করেননি। যার ফলে ডাল ও ভাজির দাম ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা করে দেন দোকানীরা। দুইটি পরোটা আর ডাল ভাজি ২২ টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হচ্ছিল। তবে বর্তমানে আবারও দাম বৃদ্ধি করে দোকানীরা। বর্তমানে ২৫ টাকা দিয়ে দুটি পরোটা ও ডাল ভাজি কিনে খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আগের থেকে সাইজ অনেক ছোট করাও হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ সংলগ্ন হোটেলগুলোতে অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে খাবার। দেড় প্লেট ভাত খেতে লাগছে ৩৫ টাকা যা বাহিরে ২০-২৫ টাকায় পাওয়া যায়। মাছ-মাংস থেকে শুরু করে সব রকমের তরকারিতেও দাম বাড়িয়ে রাখা হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনগুলোতেও রাখা হচ্ছে চড়া দাম। প্রতি পিস ডিমের দাম ১১ টাকা হলেও ডিমভাজি করে ২০ টাকা বিক্রি করছেন দোকানিরা।

তবে রাবি প্রশাসনের অবহেলার অভাবেই এমনটা হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসন যদি নিয়মিত ক্যাম্পাসের দোকানগুলো তদারকি করত তাহলে দোকানীরা বেশি দাম রাখার সাহস পেতো না। দোকানের ভাড়া বেশি দিয়ে বাহিরের দোকানিরা যদি কম টাকায় বিক্রি করতে পারে তাহলে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ভাড়া ছাড়া কেন তারা পারবে না? তারা যার কাছ থেকে যেভাবে পারে সেই ভাবেই দাম নিচ্ছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এসব শিক্ষার্থীরা।

খাবারের দাম বৃদ্ধি ও মান খুবই নিন্মমানের বিষয়ে ইসলামিক স্টাডিজের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের জাকিয়া জান্নাত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসনের অবহেলার কারণেই দোকানিরা বেশি দাম রাখে। সঠিক তদারকি থাকলে দোকানীরা এমন করার সাহস পেত না। আর দোকানগুলোর পরিবেশ খুবই খারাপ এবং নোংরা।

টুকিটাকি চত্বরের মনির নামের এক দোকানী অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, আমরা চাইলেও দাম কম রাখতে পারছি না। কারণ এখানে আমরা কোনো ধরণের সুবিধা পাচ্ছি না। প্রশাসন আমাদের বিদ্যুৎ বা পানি কিছুই দিচ্ছে না। ক্যাম্পাসে এত বাতি জলে, কিন্তু আমরা বিল দিতে চাইলেও আমাদের ২ ঘণ্টা বাতি জালাতে প্রশাসন দেয় না। আমাদের চার্জার লাইট ব্যাবহার করতে হয়। শুধু পানির জন্যই আমাদের ১৬০০ টাকা দিয়ে ২জন লোক রাখতে হয়। প্রশাসন যদি আমাদের একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দেয়, তাহলে আমাদের লোকও কম লাগবে, কম দামেও খাবার বিক্রি করতে পারব।

সবুজ আলী নামের আরেক দোকানী জানান, আসলে আমরা যার কাছ থেকে যেভাবে পারি সে ভাবেই নেই। কেউ যদি এক প্লেট ভাত খেয়ে ১২ টাকা দিতে চায় তাহলে ১২ টাকাই নেই। কেউ কম দেয় আবার কেউ বেশি এভাবেই আমাদের চলছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান বলেন, কোনো দোকানে চা ৬ টাকা করে রাখে? আমরা তো ৫ টাকা করেই রং চা খাই। যদি বেশি দাম রাখে তাহলে আমরা দেখব বিষয়টি।

দোকানীদের পরিবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তো চাচ্ছি না এতো দোকান। তাদের থাকতে বলছে কে? তবে আমরা নতুন করে একটা মূল্য তালিকা দেওয়ার চিন্তা করছি।

আরটিভি/এএএ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • ক্যাম্পাস এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাবিতে শুরু হলো শৈত্যোৎসব ও পিঠা পুলি মেলা 
কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে রাবিতে গণকোরআন তিলাওয়াত
রাবি পাঠক ফোরামের সভাপতি সাদেকুল, সম্পাদক শামিম
রাবি শিবিরের সভাপতি জাহিদ, সেক্রেটারি মুজাহিদ