নার্সদের কর্মবিরতি স্থগিত
দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে সারাদেশে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) পর্যন্ত কর্মবিরতি স্থগিত করেছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক ড. মো. শরিফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা নার্সিং কলেজের সভাকক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই কথা জানান তিনি।
এর আগে, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন নার্সরা। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। দাবি দ্রুত সময়ে না মানলে আগামী দুই দিনও কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা।
কর্মবিরতির বাইরে রয়েছে হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগ এবং আইসিইউ ও সিসিইউর মতো গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো।
আরটিভি/এমএ/এআর
মন্তব্য করুন
ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ১০ জনের
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮৬ জন।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৩৭৩ জন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯৩৮ জন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৫ হাজার ৭১২ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮১ হাজার ৪৫৬ জন। মারা গেছেন ৪৪৮ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
আরটিভি/আরএ-টি
বিদেশে চিকিৎসা নিতে বছরে ব্যয় ৪৮ হাজার কোটি টাকা: ডিসিসিআই
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চিকিৎস্যাসেবা নিতে ২০১২ সালে ব্যয় হয়েছে চার বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা)। এখন তা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই এর আয়োজনে ‘স্বাস্থ্য খাতে বিদেশমুখিতা কমাতে দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এসব কথা জানান তিনি।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু ব্যয় হয় ৪০১ মার্কিন ডলার বলে উল্লেখ করে মালিক তালহা ইসমাইল বারী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের মাথাপিছু ব্যয় ১১০ মার্কিন ডলার। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতার কারণে দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিশ্বের অন্যান্য দেশের সেবা নিয়ে থাকে এবং ২০১২ সালে বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ায় বাংলাদেশিদের ব্যয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
উন্নত স্বাস্থ্য সেবার প্রতিবন্ধকতা হিসেবে অবকাঠামোর স্বল্পতা, দক্ষ ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানের অভাব, সরকারি হাসপাতালে সেবা প্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা, উন্নত সেবার জন্য ইন্স্যুরেন্স কভারেজের অনুপস্থিতি প্রভৃতি অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ডিসিসিআইয়ের এই সহ-সভাপতি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ৫ হাজার ৪৬১ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে, যার মধ্যে এক হাজার ৮১০টি ঢাকা বিভাগে অবস্থিত, পাশাপাশি ৩৬টি স্পেশালাইজড হাসপাতালের মধ্যে ১৯টি ঢাকাতে অবস্থিত হওয়ায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী লোকজন উন্নত স্বাস্থ্যসেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত ঢাকার ওপর চাপ বাড়ছে।
ক্রমবর্ধমান হারে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সম্প্রতি বিদেশে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে যাচ্ছে উল্লেখ করে আশরফ আহমেদ বলেন, যদিও অনেক চিকিৎসা স্থানীয়ভাবেও পাওয়া যায়। রোবোটিক সার্জারির মতো স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা সেবা পাওয়া সম্ভব হলেও তুলনামূলকভাবে কম আত্মবিশ্বাস এবং গ্রাহকদের সন্তুষ্টির অভাবে বিদ্যমান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, গ্রাহক সন্তুষ্টি কেবল চিকিৎসা থেকে আসে না। বরং পুরো হাসপাতালের ইকো-সিস্টেম যথা: নার্স, প্রশাসন, টেকনোলজিস্ট সবাই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। মানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ব্র্যান্ডিং-এর জন্য, বিদেশি ডাক্তার, নার্স ও টেকনোলজিস দেশে আসার প্রক্রিয়া আরো সহজতর করতে হবে।
দেশে পরিচালিত ল্যবারেটরি সমূহের মান উন্নয়নের উপর তিনি জোরারোপ করে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি’র সভাপতি অধ্যাপক এ কে খান আজাদ বলেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা স্বল্পতা, চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থার স্বল্পতা, সর্বোপরি কমফোর্টের অভাবে অসংখ্য লোক দেশের বাইরে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে, এগুলো যথাযথভাবে চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের মাধ্যমে রোগীদের বিদেশমুখিতা হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল শক্তিশালীকরণের উপর তিনি জোরারোপ করে অধ্যাপক এ কে খান আজাদ বলেন, যেহেতু প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞান একটি সর্বদা পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া, এমতাবস্থায় বর্তমানে আমরা যা আমরা প্রত্যক্ষ করছি আগামী ২৫ বছর পর এ ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে, তাই সেরা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি গ্রহণ করার জন্য আমাদের একটি সঠিক পাঠ্যক্রম থাকা জরুরি। দেশে পরিচালিত ল্যাবরেটরিগুলোর মান উন্নয়ন, বাজেট সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে চিকিৎসাশাস্ত্রের গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে।
উন্নত সেবা প্রদানে রোগীদের প্রতি ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিকতা পরিবর্তন একান্ত অপরিহার্য উল্লেখ করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-এর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ডা. মো. লিয়াকত হোসাইন বলেন, দেশীয় ডাক্তার ও নার্সদের দক্ষতা উন্নয়নের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপনের কোন বিকল্প নেই। তবে বিদ্যমান সমাধানে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি কার্যকর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারি, যার মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কমবে পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ের মাধ্যমে রিজার্ভ বৃদ্ধি সম্ভব।
বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে গ্রামীণ পর্যায়ে আরও বেশি মানের হাসপাতাল স্থাপন করা উচিত বলে তিনি মত প্রকাশ করে বিএসএমএমইউ-এর প্রসূতি ও স্ত্রীরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, আস্থা এই সেক্টরের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই আমাদের স্বাস্থ্যসেবাকে স্বাস্থ্যসেবা পর্যটনে রূপান্তর করতে হবে।
চিকিৎসা যন্ত্র উৎপাদনে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স-এর সেক্রেটারি ডা. আবুল বাসার মো. জামাল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ওষুধ উৎপাদনকারী দেশ এবং আমরা বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও করি। এমতাবস্থায় এ খাতে আরও ভালো করতে হলে দক্ষ জনশক্তি ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। বাংলাদেশে এক লাখ ৩৪ হাজার চিকিৎসক রয়েছে। এবং এর মধ্যে মাত্র ৩৩ হাজার সরকারি চিকিৎসক। তবে এটা সন্তোষজনক যে এখানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ১০ হাজারের বেশি বিদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।
বিশ্বমানের ডাক্তারদের সাথে জরুরি যত্নের প্ল্যাটফর্ম বাড়াতে এবং আস্থা তৈরির সুবিধার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইমার্জেন্সি মেডিসিন-এর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মীর সাদউদ্দিন আহমেদ বলেন, কোভিডের সময় কেউ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যায়নি। মহামারির সেই সময়ে আমরা পরিস্থিতি সামলাতে পেরেছি, এটা স্বাস্থ্যসেবা খাতে আমাদের সক্ষমতা প্রতিফলিত করে।
আরটিভি/কেএইচ
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। একই সময় ১ হাজার ৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হলো ৪৫৯ জনের।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেতনতা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
আরটিভি/এমএ-টি
হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা আর ঢুকতে পারবে না
সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত চিকিৎসাধীন ও চিকিৎসা নিতে আসা সবার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য এবং হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে ১০টি নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নির্দেশনার একটি হচ্ছে, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
গত ১৮ নভেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব উম্মে হাবিবার সই করা এক নির্দেশনা দেশের সব হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে আগত আহতদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা দিতে হবে। সব আহত ব্যক্তির চিকিৎসা বিনামূল্যে করতে হবে।
এ ছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যদি কেউ চিকিৎসায় অসমর্থ হয়- তবে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তির ওষুধের খরচ সরকার বহন করবে। এক্ষেত্রে উপযুক্ত বিল-ভাউচার স্বাস্থ্য অধিদফতরে দাখিল করা হলে তা যাচাই করে পরিশোধ করা হবে।
পাশাপাশি চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কাউকে অধিকতর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে (দেশে যার চিকিৎসা সম্ভব নয় এবং বিদেশে পাঠানো হলে নিরাময় বা উন্নতি হবে এমন আহতদের) বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ মোতাবেক উপযুক্ত রেকর্ডপত্রসহ সংশ্লিষ্ট আহত ব্যক্তির আবেদন জরুরিভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে পাঠাতে হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, হাসপাতালে আগত সব উপযুক্ত দর্শনার্থীদের জন্য ভিজিটর কার্ড প্রবর্তন করতে হবে। ভিজিটর কার্ডবিহীন কোনো দর্শনার্থী হাসপাতালের ভেতরে বা রোগীর কক্ষে প্রবেশ বা অবস্থান করতে পারবেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
এ ছাড়া কোনো ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ বা বিভিন্ন কোম্পানির ডিলার কোনোভাবেই হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রত্যেক চিকিৎসক ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সবাইকে রোগী দেখার সময়সূচি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময়সূচি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
প্রতিটি হাসপাতালে সুশৃঙ্খল চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে হাসপাতালে রিসিপশন ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। অভ্যর্থনা কক্ষে আগত রোগীদের রোগের ধরন অনুযায়ী বাছাইপূর্বক নির্ধারিত চিকিৎসকের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, হাসপাতালে আগত সেবাপ্রার্থীদের টিকিট কেনার বিষয়টি সুশৃঙ্খল করতে হবে। সম্ভাব্য সব হাসপাতালে এ বিষয়ে ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিবন্ধিত বা সার্টিফায়েড নয় এমন কোনো ব্যক্তি চিকিৎসা দেওয়ার কোনো পর্যায়েই কোনো হাসপাতালে সংযুক্ত থাকতে পারবেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
আরটিভি/একে
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনে কর্মরত চিকিৎসকরা সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় অংশ নিতে বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাদের এই নতুন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আবদুল হাই স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন দপ্তর কিংবা সংস্থায় কর্মরত চিকিৎসকদের বৈদেশিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বছরে (সর্বশেষ ১২ মাস) সর্বোচ্চ দুইবার বৈদেশিক সেমিনার, সভা, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ কিংবা কর্মশালা ইত্যাদিতে যেতে পারবেন। প্রার্থী যে বিষয়ে অভিজ্ঞ বা যে বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত (দায়িত্ব পালনরত), কেবল সেই বিষয়ে আমন্ত্রিত হতে পারবেন। প্রার্থী যে বিষয়ে অধ্যয়নরত সেই বিষয়ে আমন্ত্রিত হয়ে গমন করতে পারবেন।
আমন্ত্রণকারী সংস্থার নিজস্ব ডোমেইনভুক্ত ওয়েবমেইল থেকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওয়েবমেইলে (secretary@hsd.gov.bd, cc: admin1@hsd.gov.bd) আমন্ত্রণপত্রের অনুলিপি বা কপি পাঠাতে হবে। আমন্ত্রণকারী সংস্থা যাবতীয় খরচ (ভিসা ফি, উভয় পথের বিমানভাড়া, আবাসন ব্যবস্থা বা খরচ ইত্যাদি) বহন করবেন বলে সংস্থা থেকে প্রত্যয়নপত্র প্রমাণক হিসেবে দাখিল করতে হবে।
এ ছাড়া বৈদেশিক প্রমাণস্বরূপ প্রোগ্রামে যোগদানের ও সমাপ্তি দিনের ছবি দাখিল করতে হবে। যথাযথ মাধ্যমে অগ্রায়নকৃত আবেদনে প্রতিষ্ঠান বা দপ্তর প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশ থাকতে হবে। অগ্রায়নের আগে প্রতিষ্ঠান বা দপ্তর প্রধান প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্র ১ নম্বর থেকে থেকে ৯ নম্বর শর্ত যাচাই করে সঠিক পাওয়া গেলো (ভেরিফায়েড অ্যান্ড ফাউন্ড ওকে) লিখে প্রত্যয়ন করতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয়, যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিবেচ্য মনে করেন।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়, উপরিউক্ত নির্দেশনাসমূহ আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ থেকে চিকিৎসকদের আমন্ত্রণের ভিত্তিতে বিদেশে সেমিনার, সভা, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ বা কর্মশালা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো।
আরটিভি/আইএম/এস
ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৭ জনের
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৮৩৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২৮৬ জন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮৯০ জন।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯০ হাজার ৪৪০ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮৬ হাজার ৬৯৩ জন। মারা গেছেন ৪৮২ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
আরটিভি/আরএ/এস
অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না ক্যানসারে আক্রান্ত ইউনুস মিয়ার
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার টামটা গ্রামের মো. ইউনুস মিয়া, বয়স ৬৫। পরিবারের তিন সদস্যের মধ্যে একমাত্র উপার্জনকারী তিনি। গ্রামে একটি ভাতের হোটেলে কাজ করে কোনোরকমে সংসার চালাতেন। বসতভিটা ছাড়া তেমন কোনো জমিও নেই তার। এমন বাস্তবতায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ইউনুস। বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারেন তার লিভার ক্যানসার।
হাসপাতালে ভর্তি ও পরবর্তী চিকিৎসার খরচ না থাকায় বাড়িতেই ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ইউনুস মিয়া। কিন্তু দিনদিন তার অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে দেখে তাকে ফের চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। ডাক্তার তাকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে ইউনুস মিয়াকে রাজধানীর দারুসসালামের মানবিক চিকিৎসকদের সংগঠন হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব এবং হাসপাতালে বিনা টাকায় একটি বেডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
ইউনুস মিয়া বর্তমানে হাসপাতালটিতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসারবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাহফুজুল আহমেদ রিয়াদের অধিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ চিকিৎসায় ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হতে পারে। এ অবস্থায় অসহায় এই মানুষটির পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন তার পরিবার।
ইউনুস মিয়ার স্ত্রী ফেরদাউস বেগম কান্নাকণ্ঠে জানান, আমার ছোট ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। আমার স্বামীর কিছু হলে কোথায় যাব, কীভাবে চলব। ঠিকমতো সংসারই চলে না। চিকিৎসার খরচ কীভাবে দেবো।
হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. শেখ মইনুল খোকন বলেন, আমাদের সংগঠন থেকে গরিব ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করি। ইউনুস মিয়াকে বিনা টাকায় একটি বেড দেওয়া হয়েছে।
খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানটিও কিছু ডাক্তারের স্বেচ্ছ্বাশ্রম ও মানুষের দানে চলে। যেহেতু চিকিৎসকের খরচ ছাড়াও ক্যানসার চিকিৎসার আরও অনেক কিছু ব্যয়বহুল। তাই আমার প্রত্যাশা ইউনুস মিয়ার চিকিৎসা খরচ কিছুটা লাঘব করতে বিত্তবানরা হাত বাড়িয়ে দিবেন। তাহলে অসহায় এই রোগীর সেবা দেওয়া আমাদের জন্য আরও সহজ হবে।
সহায়তা করতে যোগাযোগ করুন-
রাজধানীর দারুসসালামের মানবিক চিকিৎসকদের সংগঠন হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব এবং হাসপাতাল। ফোন নম্বার- 01774773648
উল্লেখ্য, হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন পরিচালিত হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব এন্ড হসপিটালে গরিব ও অসহায় রোগীদের স্বল্প খরচে বা ক্ষেত্রভেদে বিনা খরচে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের মানবিক কিছু চিকিৎসক এখানে এসে স্বল্প খরচে বা বিনামূলে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বিনা খরচে চিকিৎসা দেওয়ায় ইতোমধ্যে গরিবের হাসপাতাল নামেও পরিচিতি অর্জন করেছে।