বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলা। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গেল কয়েক বছর মেলা সেভাবে জমেনি। তবে আবারও মেলা তার আপনরূপে ফিরেছে। কিন্তু এবার মেলা শুরুর আগে থেকেই বেড়েছিল প্রকাশনাশিল্পের প্রাথমিক কাঁচামাল কাগজের দাম। ফলে প্রকাশকদের মাঝে বই বিক্রি নিয়ে শঙ্কা ছিল। তবে মেলা শুরুর পর দেখা গেছে দাম বাড়লেও পাঠক বই কিনছেন। তাতে আশা দেখছেন প্রকাশকরা।
করোনার চোখ রাঙানি শেষে এবারের বইমেলা ও কাগজের দাম বৃদ্ধিতে মেলায় তার প্রভাবসহ নানান বিষয়ে অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় আরটিভি নিউজের। আলাপচারিতার দ্বিতীয় অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো—
আরটিভি নিউজ : করোনার কারণে বছর দুয়েক পরে জাঁকজমকভাবে বইমেলা শুরু হয়েছে—কেমন লাগছে আপনার?
মাজহারুল ইসলাম : গেল কয়েক বছর করোনার কারণে বইমেলা সেভাবে করতে পারিনি। দুই বছর পর মেলা তার নিজস্ব চরিত্রে ফিরে এসেছে। পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু হয়েছে, চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আর একবারে প্রথম দিন থেকেই মেলা জমজমাট। আমরা আশা করছি, বাকি যে দিনগুলো আছে, সে দিনগুলোতেও পাঠকের উপচেপড়া ভিড় থাকবে। বইয়ের প্রতি পাঠকের যে উন্মাদনা-ভালোবাসা, সেটি আমরা দেখতে পাব। কারণ, এই মেলার জন্যই কিন্তু পাঠক ও লেখক-প্রকাশকরা সারাবছর অপেক্ষায় থাকে।
আরেকটা বিষয়, অমর একুশে বইমেলা শুধু বই বিকিকিনির মেলা নয়, এটি আসলে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির একটি মিলনমেলা। কাজেই এই মিলনমেলার জন্য আমরা এক বছর ধরে অপেক্ষায় থাকি।
আরটিভি নিউজ : সার্বিকভাবে বইমেলার ব্যবস্থাপনায় আপনি কি সন্তুষ্ট? মেলার ব্যবস্থাপনায় আর কী কী পরিবর্তন আনলে বা থাকলে ভালো হতো বলে মনে করেন?
মাজহারুল ইসলাম : যখন একটা মেলার আয়োজন করা হয়, তখন তার ভালো দিক যেমন থাকে, তেমনি কিছু ত্রুটিও বের হয়। সেই ত্রুটিগুলোকে উতরিয়ে আবার সামনের বছর নতুন আয়োজনের চিন্তা করা হয়। এবার কিছু ত্রুটি তো আছেই। যেমন- স্টল বিন্যাসটা যেভাবে হয়েছে, সেটা আরেকটু সুন্দরভাবে হতে পারত। আবার এই সুন্দরটা খুবই আপেক্ষিক- এক একজনের কাছে, এক এক রকম। সেই জায়গায় এবার যা হয়েছে, খারাপ না। তবে এবার যে ত্রুটিগুলো আছে, সেগুলো চিহ্নিত করে পরবর্তী বছরে আমরা আশা করছি আরও ভালো কিছু হবে।
আরটিভি নিউজ : বইয়ের দাম বৃদ্ধির মূল কারণ কী? আর এই বইয়ের দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতা-প্রকাশদের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়ছে?
মাজহারুল ইসলাম : কাগজের দাম যা বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই হিসেবে আমরা বইয়ের দাম বৃদ্ধি করিনি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সব দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে বইও বাদ যায়নি। একুশের বইমেলায় প্রথম দিন থেকে আমরা যেটা দেখছি, বইয়ের প্রতি পাঠকের যে ভালোবাসা—এই কাগজের দাম বৃদ্ধিতে বইয়ের যে সামান্য দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, এটা বই বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে না।
আর একটা বিষয় হচ্ছে, আপনি কি বই ছাপতেছেন, সেই বইয়ের চাহিদা কেমন। পাঠকের কাছে যদি চাহিদা থাকে, তাহলে সে বই পাঠক নেবেই।