সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘আমরা গণমাধ্যমকর্মী’ ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চলমান সংঘাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চারজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন ও ২৫০ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিকরা।
এ ছাড়া সাংবাদিকদের হত্যা, আক্রমণ ও হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে সবপক্ষকেই সাংবাদিকদের প্রতি সহনশীল ও সহযোগিতামূলক আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা আরও বলেন, সাংবাদিক কারও প্রতিপক্ষ নয়। অনেক সাংবাদিক আহত ও নিহত হলেও তাদের পাশে কেউ নেই।
মন্তব্য করুন
চিন্ময় গ্রেপ্তার ও আইনজীবী হত্যাকাণ্ড ঘিরে ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে বলে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এক প্রতিবেদনে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে অন্তত আটটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়ানো হয়েছে। এসব ফটোকার্ডে প্রচারিত গুজবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- চিন্ময় স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন, শিশু বলাৎকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ডিবি পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হিসেবে দাবি করে গুজব ছড়ানো হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, ভয়েস অব আমেরিকা এবং আরব নিউজের মতো প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমেও এই বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
রিউমর স্ক্যানার জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরটিভি এবং যমুনা টিভির লোগোযুক্ত দুইটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়। এতে দাবি করা হয়, তিনি ‘স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন’। তবে, গণমাধ্যম দুটির কোনো প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। ফটোকার্ডগুলোও ভুয়া।
ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, মঙ্গলবার সকালে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চ্যানেল২৪ এর লোগোযুক্ত আরেকটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দাবি করা হয়, শিশু বলাৎকার এবং উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু চ্যানেল২৪ এই ধরনের কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে একটি নারী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া যায়, ভিডিওটি ভারতের ‘বাবা বালকনাথ’ নামের এক ধর্মগুরুর এবং ভিডিওটি চিন্ময় কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
অন্যদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণকে নিয়ে আদালতে শুনানি চলাকালে সামাজিক মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে বলা হয়, ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে চট্টগ্রাম আমাদের দেয়া হবে’ এবং ‘আমার কোনো দোষ নেই, আমাকে যা বলতে বলা হয়েছিল, বাধ্য হয়ে তাই বলেছি।’ এই দাবির সঙ্গে ডিবিসি এবং চ্যানেল ২৪-এর লোগোযুক্ত পৃথক ফটোকার্ডও ছড়ানো হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এই ফটোকার্ডগুলোও ভুয়া প্রমাণিত হয়।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে সংঘর্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও প্রাণহানির দাবি ওঠে। বিভিন্ন পোস্টে নিহতদের নিয়ে বিভিন্ন সংখ্যা উল্লেখ করে দাবি করা হয়। তবে, নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ছাড়া এ সংঘর্ষে আর কোনো মৃত্যুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পরিকল্পিত হত্যার শিকার দাবি করে প্রোবীর চন্দ্র পাল নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টের দুটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে। একটি পোস্টে প্রোবীর লিখেছিলেন, ‘সমস্ত সনাতনী এডভোকেটরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আজকেই শুনানি দিতে হবে! নাহলে দায়রা জজ মো: সাইফুল ইসলামকে কোর্ট থেকে বের হতে দেবে না।’ তবে, এখানে উল্লিখিত জজ সাইফুল ইসলাম এবং নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ভিন্ন ব্যক্তি। পোস্টে উল্লিখিত সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ, আর নিহত সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)।
ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানায়, ভারতের অসংখ্য এক্স ব্যবহারকারী এবং কিছু গণমাধ্যমে গুজব ছড়ায় যে, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ ছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী, এবং সেই দায়িত্ব পালনের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর বরাত দিয়ে এই দাবি উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
তবে, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হলেন সুভাশিস শর্মা। এ তথ্য চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া ওকালতনামা এবং আইনজীবী আলিফ নিহত হওয়ার আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ভিত্তিতে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন শিবিরের সদস্য এবং একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক।
তবে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার মো. রইস উদ্দিন এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও দেখা গেছে, এই ভুয়া তথ্যটি ‘SadhinBangladeshNews’ নামের একটি ভুয়া পোর্টালের প্রতিবেদনের বরাতে ছড়ানো হয়েছে। অতীতেও এই পোর্টাল থেকে গুজব ছড়ানোর নজির পাওয়া গেছে।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অন্তত ছয়জনকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এছাড়া, সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করেছে সিএমপি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার মো. রইছ উদ্দিন রিউমর স্ক্যানারকে জানান, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে এখন পর্যন্ত সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এছাড়া, ইসকন সদস্য প্রবীর চন্দ্র পালকে কেন্দ্র করে দুটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়, যেখানে সময় টিভি এবং চ্যানেল ২৪ এর লোগো ব্যবহার করে দাবি করা হয় যে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন: ‘প্রভুকে মুক্তি না দিলে আরও লাশ পড়বে, ৩ কোটি সনাতনী মাঠে থাকবে’ এবং ‘ইসকন নিষিদ্ধ করতে চাইলে পুরো বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করে দেবে ভারত’।
তবে, এই দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রবীর চন্দ্র পাল এমন কোনো স্ট্যাটাস দেননি এবং সময় টিভি ও চ্যানেল ২৪ এর পক্ষ থেকেও এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়নি। গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে এই মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার আরও জানায়, চিন্ময়ের জামিন ইস্যুতে সৃষ্ট অপ্রীতিকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্সে একটি ভিডিও শেয়ার করে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন। তবে, ভিডিওটি ঢাকার তিনটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের দৃশ্য। এটি হিন্দু নির্যাতনের কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
এছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ সমকামী কমিউনিটি এলজিবিটিভি-এর স্বনামধন্য সদস্য দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার বরাতে সময় টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। তবে যাচাইয়ে দেখা গেছে, রিপাবলিক বাংলা এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি এবং সময় টিভিও এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তাকে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
এ নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং এর প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে নানা গুজব ছড়াতে শুরু করে।
রিউমর স্ক্যানারের মূল প্রতিবেদনটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
আরটিভি/কেএইচ
সাংবাদিক মুন্নী সাহা গ্রেপ্তার, নেওয়া হলো ডিবিতে
টেলিভিশন উপস্থাপক ও সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে তাকে প্রথমে আটক করে পরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জানা গেছে, কারওয়ান বাজার এলাকায় শনিবার রাতে মুন্নী সাহাকে দেখে স্থানীয়রা ঘিরে ধরে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে তেজগাঁও থানায় নেয়। সেখান থেকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন জানান, ছাত্র আন্দোলনে চলাকালে ছাত্র-জনতা নিহতের ঘটনায় মুন্নী সাহার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। একটি যাত্রাবাড়ী থানায়, আরেকটি মিরপুরে। এরমধ্যে একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নাঈম হাওলাদার (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী গুলিতে নিহত হয়। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট নিহতের বাবা কামরুল ইসলাম যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এতে মুন্নী সাহাকে আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, ভোরের কাগজ দিয়ে মুন্নী সাহার সাংবাদিকতা শুরু। সেখান থেকে যান একুশে টেলিভিশনে। এরপর যোগ দেন এটিএন বাংলায়। সেখানে শুরু থেকেই যুক্ত ছিলেন মুন্নী সাহা। মালিকপক্ষের সঙ্গে বিরোধের জেরে গত বছরের ৩১ মে তিনি এটিএন নিউজ থেকে পদত্যাগ করেন।
আরটিভি/আরএ/এস
বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধের রিট শুনানি বুধবার
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি আগামীকাল বুধবার।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা শাহিন আরা লাইলি সোমবার (২ ডিসেম্বর) হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন। রিটে বিবাদী করা হয়েছে তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনসহ (বিটিআরসি) সংশ্লিষ্টদের।
রিটকারীর আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আগামীকাল বুধবার রিট আবেদনটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আসবে। আমরা আদালতকে জানিয়েছি, এটা জরুরি বিষয়। জরুরি শুনানি করা দরকার। বিচারক এতে অনুমতি দিয়েছেন।
এর আগে রিটকারী আইনজীবী বলেন, ভারতীয় চ্যানেল স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা, রিপাবলিক বাংলাসহ সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ চাওয়া হয়েছে। ভারতীয় টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন উসকানিমূলক সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। ভারতীয় চ্যানেলে বাংলাদেশের সংস্কৃতিবিরোধী বিভিন্ন অনুষ্ঠান অবাধ সম্প্রচারের ফলে যুব সমাজ ধ্বংসের সম্মুখীন। চ্যানেলগুলো কোনো আইন মানছে না। এসব কারণে ভারতীয় সব চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ চাওয়া হয়েছে।
রিটে ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন ২০০৬-এর ২৯ ধারা মোতাবেক ভারতীয় সব টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
আরটিভি/এএইচ/এস
‘ট্র্যাব অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন সাংবাদিক রুহুল আমিন ভূঁইয়া
টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্র্যাব) বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ পেলেন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের স্টাফ রিপোর্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়া। সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মেগাস্টার’খ্যাত সোনালি যুগের জনপ্রিয় অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, ট্র্যাব সভাপতি কাদের মনসুর ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)-এর সভাপতি কামরুল হাসান দর্পণ এ পুরস্কার তুলে দেন।
সাংবাদিকতায় অবদান রাখার জন্য বেস্ট রিপোর্টিং ট্র্যাব অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ আরও পেয়েছেন— জাহিদ আকবর (ডেইলি স্টার), পান্থ আফজাল (বাংলাদেশ প্রতিদিন), ফয়সাল রাব্বিকীন (মানবজমিন), এ মিজান (খবরের কাগজ)।
সম্মাননা প্রসঙ্গে রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, পুরস্কার শুধু একটি সম্মান নয়, অনুপ্রেরণাও। কাজের স্বীকৃতি পেয়ে ভীষণ ভালো লাগছে। আমাকে সম্মানিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের কৃতজ্ঞতা জানাই।
রুহুল আমিন ভূঁইয়া ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)-এর ২০২৪-২৬ মেয়াদে দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করুন। এর আগে ২০২২-২৪ মেয়াদে কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরটিভি/এএ/
ছিনতাইকারীর কবলে বৈশাখী টিভির সাংবাদিক জুবায়ের
স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল বৈশাখী টিভির সিনিয়র রিপোর্টার ও অপরাধবিষয়ক অনুষ্ঠান নির্মাতা জে ইউ জুবায়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। ছিনতাইকারীরা চাপাতি ও পিস্তল ঠেকিয়ে সঙ্গে থাকা নগদ অর্থসহ মানিব্যাগ ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। চাপাতির কোপে পায়ে আঘাত পেয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ২টায় বাসায় ফেরার পথে রামপুরা টেলিভিশন ভবনের পেছনে বনশ্রী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জে ইউ জুবায়ের জানান, বইমেলার জন্য একটি পাণ্ডুলিপির কাজ শেষ করে লেখক মোবারক হোসেনসহ তিনি অটোরিকশায় গুলশান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। বনশ্রী ঢোকার পথে রামপুরা টিভি ভবনের পাশের গলিতে পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেল হঠাৎ করেই তাদের রিকশার গতিরোধ করে। মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ছিল। মাথায় ছিল হেলমেট, মুখে ছিল মাস্ক। একজনের হাতে ছিল চাপাতি, অন্যজনের হাতে ছিল পিস্তল। অস্ত্রের মুখে ছিনতাইকারীরা তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন, আইডি কার্ডসহ মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
জুবায়ের বলেন, সবকিছু লুটে নেওয়ার পরও তারা আমাদের চাপাতি দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে। বিপরীত দিক থেকে একটি পিকআপ চলে আসায় দ্রুত মটোরসাইকেলে উঠে তারা পালিয়ে যায়। ছিনতাইকারীদের চাপাতির কোপে আমি আঘাতপ্রাপ্ত হই। আমার ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। নয়তো, সবকিছু দিয়ে দেওয়ার পরও কেন ওরা আঘাত করবে! বিষয়টি আমি রামপুরা থানায় জানিয়েছি। চিকিৎসা শেষে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামপুরা থানার ওসি আতাউর রহমান আকন্দ বলেন, ভুক্তভোগী এরই মধ্যে থানায় ফোনে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাকে আমরা লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দিয়েছি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরটিভি/ডিসিএনই-টি
ভারতীয় মিডিয়ায় মনগড়া খবর প্রচারে বিএফইউজে-ডিইউজের উদ্বেগ
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে মনগড়া ও মিথ্যা সংবাদ প্রচার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সংগঠন দুটি এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এই অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী গোষ্ঠী ছাড়া এদেশের সবাই অংশগ্রহণ করে। তাদের একটিই লক্ষ্য- মহান মুক্তিযুদ্ধের ভূলুষ্ঠিত স্বপ্ন বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করা। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এই ইস্যুতে ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে মনগড়া, মিথ্যা, ভিত্তিহীন অপতথ্য দিয়ে একের পর এক মিথ্যা সংবাদ তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে।
‘বিশেষ করে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে ভারতের বক্তব্য ও এর প্রেক্ষিতে সে দেশের উগ্র জঙ্গিদের দ্বারা আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের পতাকা ছিঁড়ে ফেলা, কলকাতা ও মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে সেখানকার উগ্রবাদী সংগঠনগুলো যুদ্ধংদেহী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।’
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা আরও বলা হয়, আমরা মনে করি, ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার ছড়ানোর কারণেই ফেনীর পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরে, সিলেটের দিকে আসামে ভারতীয় সীমানা থেকে বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন উগ্র বক্তব্য ও স্লোগানসহ সারা ভারতেই বাংলাদেশবিরোধী ভূমিকায় নেমেছে সেখানকার উগ্রবাদীরা।
‘ভারতে ভুয়া খবর এক বিপজ্জনক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ নিয়েও দেশটির মূলধারার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম যাচাই-বাছাই না করেই বিভিন্ন ভুল খবর প্রকাশ করছে। ভুয়া খবর প্রকাশের তালিকায় আছে হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, টাইমস অব ইন্ডিয়া ইত্যাদির মতো প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমও। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত ভিত্তিহীন খবর বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে।’
বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারত সরকারের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড এবং সেখানকার মিডিয়ার ভূমিকা আমাদের মনে হয়েছে, তারা আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চায়। এতে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করানো সহজ হবে। এসব ঘটনার পেছনে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ইন্ধন আছে বলেও দৃঢ়ভাবে প্রমাণ হয় বলে আমরা বিশ্বাস করি।
সাংবাদিক নেতারা আরও বলেন, আমরা আশা করব, নতুন বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি ভারতের সরকার ও গণমাধ্যম শ্রদ্ধাশীল হবেন। একই সঙ্গে ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষ করে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে সত্যনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল সংবাদ প্রচার করবে। এটা উভয় দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।
আরটিভি/আরএ/এস
ভারতজুড়ে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম
ভারতে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতজুড়ে নানামুখী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গড়ে তুলতে হবে ইস্পাত কঠিন ঐক্য।
জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের সমাবেশে বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চ্চারণ করে বলেন, বাংলাদেশের পতাকার অবমাননা সহ্য করা হবে না। ভারতের মিডিয়ায় নির্লজ্জ মিথ্যাচার বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে সীমান্ত হত্যা। আগারতলায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের নিরাপত্তায় ব্যর্থতায় প্রমাণ হচ্ছে, সেখানে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন জরুরি।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন টাওয়ার হ্যামালেটসের প্রথম এক্সিকিউটিব ডেপুটি মেয়র ও পাঁচবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর, ব্রিটিশ সরকারের স্থানীয় সরকারে এডভাইজারি বোর্ড মেম্বার ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন এফেয়ার্স কমিটির সদস্য আ ম অহিদ আহমদ। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আবু সালেহ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ম অহিদ আহমদ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতে তৎকালীন পেটোয়াবাহিনীর মাধ্যমে যে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে, এর বিচার করতে হবে। জঙ্গি সংগঠন ইসকনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়াও আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফকে ইসকন কর্তৃক নৃশংসভাবে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিতকরণ এবং মসজিদে হামলাকারীদেরকেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
সংগঠনের মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রধানের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দৈনিক নওরোজ সম্পাদক সামছুল হক দুররানী, সিনিয়র সাংবাদিক গাফফার মাহমুদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, আখতার হোসেন মাসুদ, ড, আবু তাহের মানজুর, বাংলা পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, জেসমিন জুঁই, নাসির উদ্দিন সিদ্দিকী, সামাদ মতিন, মাহমুদ তারেক, আমিনুল ইসলাম, খোরশেদ আলম শিকদার, আনোয়ার হোসেন, রুহুল আমিন চৌধুরী প্রমুখ।