নির্বাচনে জয়ের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে এ অভিনন্দন জানান তিনি।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে ঢাকায় গণভবনে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে প্রণয় ভার্মা শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ও অভিনন্দন বার্তা পৌঁছে দেন।
-
আরও পড়ুন : ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ও ভারতের জনগণের পক্ষে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। কথা মতো শেখ হাসিনার নতুন মেয়াদে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে ভারতীয় হাইকমিশনার আশা প্রকাশ করেন।
প্রণয় ভার্মা বলেন, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভারত বাংলাদেশকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে যাবে। তিনি এ সময় মুক্তিযুদ্ধে দুই দেশের অভিন্ন আত্মত্যাগের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সম্পর্ক ও দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১টায় পর্যন্ত ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৭টির ফলাফল পাওয়া গেছে।
এতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ২২৩টিতে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। আর জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে।
সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ১৫১টি বা তার বেশি আসনে যে দল জয়ী হন তারাই সরকার গঠন করেন। যেহেতু আওয়ামী লীগ ১৫১টির বেশি আসনে বিজয়ী হয়েছে। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলটি টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এর আগে, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
এর আগে, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশে ২৯৯টি আসনে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে। এ সময়ে কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন গোলযোগ হয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জায়গায় ভোট কেন্দ্রের বাইরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। কোথাও ভোটকেন্দ্রের পাশে ককটেল বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটেছে। অনিয়মের কারণে সাতটি কেন্দ্রে ভোট বাতিল করা হয় এবং জাল ভোটে সহায়তা করার জন্য ১৫ ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারচুপি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
-
আরও পড়ুন : ‘নড়াইলের উন্নয়নের জন্য শতভাগ চেষ্টা করব’
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। মোট ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারে।
ইসির দেওয়া তথ্যমতে, নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২৬৬ জন প্রার্থী ছিল আওয়ামী লীগের। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৫ জন প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসা তৃণমূল বিএনপি।
এদিকে বিএনপিসহ ৬০টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে হরতাল-অবরোধের পথ বেছে নেয়। এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় দলটি। পাশাপাশি সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় দলটি।