আ.লীগ নেতারা কে কোথায় ঈদ করবেন
উপজেলা নির্বাচনের আর মাসখানেক বাকি। ঈদের পরপরই শুরু হবে নির্বাচনী ডামাডোল। ঈদকে উপলক্ষ করে এরই মধ্যে নির্বাচনের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ছুটছেন এলাকায়। পছন্দের প্রার্থীদেরকে সমর্থন জানাতে রাজধানী ছেড়ে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন মন্ত্রী-এমপিরাও।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, রমজান মাসজুড়েই মানুষের পাশে ছিলেন তারা। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে ইফতার পার্টি না করে অসহায়, দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। সেই সঙ্গে ঈদ উপহারসামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস যেতেই স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনকে ঘিরে আবার ব্যস্ত হয়ে উঠেছে তৃণমূল। সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল তৃণমূল নেতাদের। আর এবার এই তৃণমূল নেতাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করা বড় নেতাদের সামনে সুযোগ হয়ে এসেছে ঈদুল ফিতর। বড় নেতারাও হারাতে চাচ্ছেন না এ সুযোগ। এবারের ঈদে নিজ নির্বাচনী এলাকায় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিকাংশ মন্ত্রী-এমপিই। ঈদের টানা ছুটিতে এলাকায় গণসংযোগ ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে পেছন থেকে কাজ করবেন তারা।
বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রত্যক্ষ প্রচারণায় নামতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপিরা। পাশাপাশি প্রার্থী ঘোষণাসহ কারো পক্ষে সমর্থন জানিয়ে প্রভাব বিস্তার ও হস্তক্ষেপ না করার কঠোর নির্দেশনা আছে তাদের প্রতি। অবশ্য তথ্য আছে, স্বজন ও ঘনিষ্ঠরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় অনেক মন্ত্রী-এমপি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভেতরে ভেতরে প্রচারণা চালাবেন ঈদের দিনগুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঈদ উপযাপন করবেন পৈত্রিক বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও ঈদ কাটাবেন চট্টগ্রামে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ঈদ উদযাপন করবেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ঈদে থাকবেন নরসিংদীর মনোহরদীতে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক থাকবেন গাজীপুরের কালিয়াকৈরে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমানের ঈদ কাটবে ফরিদপুরের মধুখালীতে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ঈদ করবেন ঢাকার কেরানীগঞ্জে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঈদে থাকবেন দিনাজপুরের বিরলে।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন নেত্রকোনায়, ড. আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইলে, মাহবুব-উল-আলম হানিফ কুষ্টিয়ায়, বি এম মোজাম্মেল হক শরীয়তপুরে, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাটে, মির্জা আজম জামালপুরে এবং অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন পটুয়াখালীতে এবারের ঈদ কাটাবেন।
তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারও ঈদ করবেন ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে। প্রতিবারের মতো ঈদের দিন আওয়ামী লীগসহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বিদেশি কূটনীতিক, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে তার।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ঈদ করবেন ঢাকায়। তবে নোয়াখালীতে নিজ নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীর খোঁজখবর রাখছেন তিনি। সেইসঙ্গে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বাড়ি যাচ্ছেন না এবারের ঈদে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ঈদ উৎসবটা সবার। মন্ত্রী-এমপি ও নেতারা যারা মানুষের জন্য রাজনীতি করেন, তারা চেষ্টা করেন উৎসবের আনন্দটা জনগণের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হবে না।
মন্তব্য করুন