স্বৈরাচারের পোকামাকড় এখনও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে: রিজভী
স্বৈরাচারের পতন হলেও তার পোকামাকড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও স্বৈরাচারের পোকামাকড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। স্বৈরাচার আত্মপ্রকাশের জন্য অতিবিপ্লব তৈরির জন্য চেষ্টা করছে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরশাসকের দোসররা। তাদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা বাংলা ভাষাভাষী মানুষ রয়েছেন, তারা আজকের দিনটিকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। কীভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বঞ্চনা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়, তার কবিতায়, গানে ও সাহিত্যকর্মে তা ফুটে উঠেছে। তিনি অনন্য বাংলাভাষার প্রধান কবি। একদিকে তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কথা বলেছেন, অন্যদিকে তিনি প্রেমের কবি। এক অসাধারণ বৈচিত্র্যের সম্মিলন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমাদের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে এক ভয়ংকর স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়েছেন। সে আন্দোলনের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে আপনারা শুনেছেন, কারার ওই লৌহ কবাট। আন্দোলনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, গণতন্ত্রের মুক্তির লড়াইয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা এক অভূতপূর্ব শক্তি পান নজরুলের গান শুনে, নজরুলের গান গেয়ে।’
বিএনপির সিনিয়র নেতা বলেন, ‘নজরুলের গান আজও আমাদের প্রেরণা দেয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। আমরা যখন কারাগারে যাই, তখন নজরুলের গান গাই। আমরা যখন মিছিল করি, তখন নজরুলের গান গাই। আমরা যখন স্লোগান দিই, নজরুল আমাদের প্রেরণা দেন। আমাদের যখন বন্দি করা হয়, তখন নজরুলের গান, কবিতা আমাদের উদ্বেলিত করে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা নিজের কব্জায় নিয়েছিলেন। তার মধ্যে নির্বাচন কমিশন একটি। সেখানে শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ ব্যক্তিরা এখনও রয়েছে। প্রশাসনের নানা জায়গায় তারা ঘাপটি মেরে রয়েছে। সব প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের দূর করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে পৃথিবীর একটি দেশ সমর্থন দিয়েছিল। তারা বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করেনি। কিছুদিন আগে সেই দেশ তাদের ডুম্বুর বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলকে ভাসিয়ে দিয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেলে। সোমবার ফারাক্কার ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে। তারা পরিকল্পিত অশুভ উদ্দেশ্যে কাজটি করেছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে যখন আমাদের পানি দরকার, তখন তারা পানি দেয় না, আমাদের ন্যায্য অধিকারটুকু অর্থাৎ যে শেয়ারটুকু পাই, তাও তারা দেয় না। স্বৈরশাসকের নতজানু নীতির কারণে বাংলাদেশের জনগণ বছরের পর বছর বঞ্চিত হয়েছে।’
মন্তব্য করুন