জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় উপাধি দিতে হবে: বুলবুল
জুলাই বিপ্লবে যারা শহীদ এবং আহত হয়েছেন তাদেরকে রাষ্ট্রের বীর সন্তান উপাধি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মুরাদপুর জুরাইন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা রাষ্ট্রের কাছে দাবি জানাই ফ্যাসিস্ট সরকার এবং তাদের দোসররা বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি বিদেশে পাচার করেছে সেই টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে শহীদ এবং আহতদের পরিবারের সদস্যদের সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে লাগাতে হবে। আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয় বরং সংস্কার করতে হবে। ছাত্রদের কল্যাণে এবং দেশের কল্যাণে ছাত্র রাজনীতিকে ঢেলে সাজানোর এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিচার বহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ডকে আমরা প্রশ্রয় দেবো না। আমরা এটাকে অন্যায় এবং ফ্যাসিবাদের অংশই মনে করি। যারা সুকৌশলে এখনো ৫ আগস্টকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করছে, এখনই তাদের মূলোৎপাটন করতে হবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জুলুম নির্যাতন চালিয়ে এদেশকে বসবাসের অযোগ্য ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে বিচারের নামে অবিচার শুরু করেছিলো। তারা জুডিশিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। ষোল বছরের শাসনামলে জামায়াতের ৫০০ জন নেতাকর্মীকে শহীদ করেছে, ২০ হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে লাখ লাখ নেতাকর্মীকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে দেয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশের সীমানাকে অরক্ষিত করে সীমান্তে ফেলানীর মত লাশ উপহার দিয়েছে। এমতাবস্থায় দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। দেশপ্রেমিক শক্তির মাধ্যমে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিপ্লবোত্তর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ৫ আগস্ট থেকেই দুর্বৃত্তদের লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও চাঁদাবাজির প্রতিরোধ এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কোন উপাসনালায় সহ দেশের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্র জনতার এই ঐতিহাসিক বিজয়কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করলে এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। এদেশের জনগণ এখন সজাগ ও সচেতন রয়েছে কোন কুচক্রী মহলের আর কোন দেশ বিরোধী এজেন্ডা আর বাস্তবায়ন করতে দেবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে দেশপ্রেমিক অর্র্ন্তবতী সরকার গঠিত হয়েছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেই সকল শহীদ পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে তাদের কর্মসংস্থান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও জোন পরিচালক সৈয়দ জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুর রহিম জীবন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার জসীম উদ্দীন, খন্দকার ইমদাদুল হক, মো. মহিউদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, আব্দুর রব ফারুকীর, আতিক চৌধুরী, নওশাদ আলম ফারুক, মাওলানা নেছার উদ্দিন , কবিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
মন্তব্য করুন