আওয়ামী লীগের দোসররা এখনও প্রশাসনে রয়েছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সারাদেশে প্রায় ২ হাজার লোকের জীবন কেড়ে নিয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার। সেই আওয়ামী লীগের দোসররা এখনও প্রশাসনে রয়েছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর দক্ষিণখানে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। হত্যাকারীদের বিচার ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো সংস্কার সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত সবচেয়ে বেশি রক্তাক্ত। ভারত বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করে থাকলে আমাদেরও অধিকার আছে, দিল্লি নিয়ে কথা বলার।
ভারতের কাছে নতজানু হয়ে থাকার দিন শেষ হয়ে আসছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আর কখনই নতজানু হয়ে থাকবে না।
আরটিভি/আইএম/এসএ
মন্তব্য করুন
জামায়াতের সঙ্গে জোট নিয়ে যা জানালেন ফখরুল
জামায়াতের সঙ্গে আমাদের যে জোট ছিল, আন্দোলনের জন্য জোট, সেটা অনেক আগেই অকার্যকর হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জামায়াতের সঙ্গে আমাদের যে জোট ছিল এটা এখন কোনো কাজ করে না। অনেক আগেই আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রোগ্রাম ঠিক করে যুগপৎ আন্দোলন করেছি সরকার পতন অবধি। এটা এখন বলবত নেই।
তিনি বলেন, তবে অন্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। কারণ, এখনো কেয়ারটেকার সরকার আছে, এরপর নির্বাচন আছে। সুতরাং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা বজায় রাখছি, এটা জরুরি। এই মুহূর্তে আমাদের কোনো জোট নেই। আমরা জোটবদ্ধ নই।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে যা বললেন ফখরুল
কোন দলের নিষিদ্ধের বিষয়টি আমরা সমর্থন করি না বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি কখনই কোনো রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধের পক্ষে নই। আমার দলও সেটা বিশ্বাস করে না। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের শুরু করেছেন। আগে তো আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন শুরু করেছিল। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র শুরু করেছেন। সুতরাং কোনো দলের নিষিদ্ধের বিষয়টি আমরা সমর্থন করি না।
বিএনপির পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে? প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আমরা সকলের বন্ধুত্ব চাই। আমরা পার্টিকুলারি কোনো দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই না। কোনো দেশ বাংলাদেশের পার্টিকুলারি কোনো দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলুক এটাও আমরা চাই না। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, অন্য দেশ এখানকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে পারস্পরিক স্বার্থ বিবেচনা করে। আমাদের সার্বভৌমত্ব সম্মান করে সম্পর্ক হবে।
বিএনপির সঙ্গে জোট নিয়ে যা বললেন জামায়াত নেতা রফিকুল
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি-জামায়াতের জোট নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে এই মুহূর্তে কোনো জোট নেই।’ জোট প্রসঙ্গে একই কথা বললেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে নরসিংদীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের প্র্যাক্টিক্যাল (ব্যবহারিক) কোনো দলীয় জোট নেই।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় আছে, থাকবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, এটা দল রক্ষা করে চলবে। তাদের সঙ্গে আমাদের মাঝে মাঝে বসা হয় এবং দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত আছে।
এর আগে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে আমাদের যে জোট ছিল, সেটি আন্দোলনের জন্য জোট, সেটি অনেক আগেই অকার্যকর হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। কারণ, এখন অন্তর্বর্তী সরকার আছে, এরপর আছে নির্বাচন। সুতরাং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা বজায় রাখছি, এটা জরুরি। এই মুহূর্তে আমাদের কোনো জোট নেই। আমরা জোটবদ্ধ নই।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ডাক পায়নি যেসব দল
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নির্বাচন করার বিষয়ে রাজনৈতিক দল এবং জোটের সঙ্গে মতবিনিময়ে বসেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে আওয়ামী লীগ এবং দলটির ১৪ দলীয় জোটের শরিকরাসহ কিছু দল আমন্ত্রণ পায়নি।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সরকারপ্রধানের কার্যালয় যমুনায় অনুষ্ঠিত হবে এ বৈঠক। বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে গত ১২ আগস্ট বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করায় এবার তাদের ডাকা হয়নি।
মতবিনিময় এ সভায় ডাক পায়নি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিসহ (বিএসপি) আরও কয়েকটি দল।
ডাক পেয়েছে প্রায় সব ইস্যুতে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেওয়া জাতীয় পার্টি (জাপা)। এ ছাড়া খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, বাংলাদেশ জাসদ, ১২ দলীয় জোট, গণফোরাম ও জাতীয় পার্টি ডাক পেয়েছে।
বাংলাদেশ খেলাফতের নেতৃত্ব দেবেন মাওলানা ইউসুফ আশরাফ। প্রতিনিধি দলে থাকবেন মাওলানা মামুনুল হক ও মাওলানা জালাল উদ্দিন।
গণফোরামের নেতৃত্ব দেবেন ড. কামাল হোসেন। তার সঙ্গে মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, এসএম আলতাফ হোসেন, মিজানুর রহমান, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিব উদ্দিন আবদুল কাদের ও মোশতাক আহমেদের থাকার কথা রয়েছে।
অলি আহমেদের নেতৃত্বে এলডিপির প্রতিনিধি দলে থাকবেন রেদোয়ান আহমেদ, নেয়ামূল বশির, নুরুল আলম তালুকদার ও আওরঙ্গজেব বেলাল।
জি এম কাদেরের নেতৃত্বে যাবে জাতীয় পার্টির। প্রতিনিধি দলে থাকতে পারেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী, মজিবুর রহমান চুন্নু, মাশরুর মওলা ও সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন।
জাতীয়বাদী সমমনা জোটের নেতৃত্বে দেবেন এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। এই জোটের শরিক জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকি, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম মতবিনিময়ে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
১২ দলীয় জোটের নেতৃত্বে দেবেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার। এই জোটের দলে জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, লেবার পার্টির একাংশের ফারুক রহমান, জাগপা একাংশের তাসমিয়া প্রধান, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের শাহ আহমেদ বাদল থাকতে পারেন।
শরীফ নুরুল আম্বিয়া নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশ জাসদের। তার সঙ্গে নাজমুল হক প্রধান, মুশতাক হোসেন, আবদুল কাদের হাওলাদার, কাজী সদরুল হকের থাকার কথা রয়েছে।
এর আগে, গত ১২ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপি, ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামী, শাহ আলমের নেতৃত্বে সিপিবি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে গণতন্ত্র মঞ্চ, আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বে বিজেপি, মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ, এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর নেতৃত্বে এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদ, হারুন চৌধুরীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে এনডিএম আলাদাভাবে মতবিনিময় করে।
আওয়ামী লীগের ভূত-প্রেতাত্মারা এখনও পালায়নি: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলেও ওদের ভূত-প্রেতাত্মারা এখনও পালায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাসিনার মন্ত্রী-টন্ত্রীরা কোথায়? ওরা আজ পালিয়েছে। আমরা কি পালিয়েছি? বেগম জিয়া কি পালিয়েছেন? ওরা পালিয়েছে। তাদেরকে পালিয়ে চলে যেতে হয়েছে। কেন? আমাদের ছাত্র সমাজের আন্দোলনের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ পালিয়ে চলে গেছে, কিন্তু ওদের ভূত-প্রেতাত্মারা এখনও পালায়নি। তারা আবারও চেষ্টা করবে। কী করে তারা ফিরে আসতে পারবে সেই চেষ্টা তারা আবার করবে। আমরা ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে অত্যাচারিত হয়েছি। আমাদের প্রায় ৭০০ মানুষকে গুম করে দিয়েছে। লাকসামের পারভেজ, হিরুকে গুম করে দিয়েছে। হাসিনা সরকার ঢাকায় প্রায় ৭০০ লোককে গুলি করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কয়েক হাজার লোককে গুলি করে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। এমনকি এই আন্দোলনে তারা রাস্তার মধ্যে আমাদের ছেলে-মেয়েদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। এদের হাত থেকে আমরা এখন মুক্ত হলেও এই যে স্বাধীনতা তা সুসংহত করতে হবে। এটাকে এখন জোরদার করতে হবে। ছাত্র-জনতার যে ঐক্য তৈরি হয়েছে, সেই ঐক্যকে আরও শক্ত করে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা এখানে কোনো নির্বাচনের ক্যাম্পেইন করতে আসি নাই। আমরা এসেছি আমাদের অনেক ভাইবোন বন্যায় কষ্ট পেয়েছেন, দুর্গত হয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়াবার জন্য। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা এখানে এসেছি। আজকে আমরা কোনো নির্বাচনের কথা বলব না, আমরা বাংলাদেশের কথা বলতে চাই। যে ফ্যাসিবাদ ফিরে গেছে তারা যাতে আবার ফিরে আসতে না পারে। সেজন্য আমাদেরকে বর্তমানে যে সরকার আছে, তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে হবে। আজকে ওরা চলে গেছে বলে আমরা একেবারে স্থানীয় হয়ে গেছি, যা কিছু করতে পারি, না। যা খুশি তা করতে গেলে আমাদের এই স্বাধীনতা থাকবে না। ওরা আবার ফিরে আসবে। আবার আমাদের ওপর জুলুম নির্যাতন শুরু করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মুহূর্তে আমরা যেটা চিন্তা করব সেটা হচ্ছে আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করব। আমাদের পুলিশ বাহিনীকে সহযোগিতা করব। প্রশাসনকে সহযোগিতা করব। ঐক্য দৃঢ় রেখে একসঙ্গে কাজ করব। আমরা ৩১ দফা দিয়েছিলাম সংস্কার করার জন্য। এখন যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা আছে এভাবে রাষ্ট্র চলতে পারে না। এজন্য আমাদের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে হবে। বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজাতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের পুলিশ প্রশাসনকে সাজাতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম প্রমুখ।
এস আলমের গাড়ি সরাতে সহায়তা, নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা বিএনপির
চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাদের সহায়তায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বিএনপি।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দলের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরবর্তী কমিটি ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নামে কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না।
বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রেস বিজ্ঞপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (৩১ আগস্ট) একই অভিযোগে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়াকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল।
জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ঘোষণা দেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন জমি ও সম্পদ কেউ যেন না কেনেন। ওই ঘোষণার পর ওই দিন রাতে কালুরঘাট শিল্প এলাকার একটি ওয়্যারহাউস থেকে একে একে সরিয়ে নেওয়া হয় বিলাসবহুল গাড়িগুলো। এসব গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও অডি, পোরশে ও রেঞ্জরোভার ইত্যাদি।
ভাইরাল ভিডিও থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার কালুরঘাট শিল্প এলাকায় (বিসিক) মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউস থেকে বিলাসবহুল দামি গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার সময় তদারকি করেন। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ির চালক মনসুরও এস আলমের গাড়িগুলো ওয়্যারহাউস থেকে বের করার বিষয়টি তদারকি করেন।
বিলাসবহুল গাড়িগুলো ওয়্যারহাউস থেকে বের হওয়ার পরই বিএনপি নেতা এনামসহ অন্যান্যরা ওই এলাকা থেকে সরে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এমন পরিস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্বজনদের ব্যবহৃত গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজে বিএনপি শীর্ষ নেতাদের সশরীরে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিয়ে চারিদিকে শোরগোল উঠেছে।
এস আলম গ্রুপের বিশ্বস্ত একাধিক ব্যক্তির বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাতে নগরের নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকা থেকে গাড়িগুলো সরিয়ে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউসে রাখা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে বৃহস্পতিবার রাতে দামি গাড়িগুলো ওয়্যারহাউস থেকে সরিয়ে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও খবরে বলা হচ্ছে এস আলমের ওয়্যারহাউস থেকে বের করা হচ্ছে দামি গাড়ি। কিন্তু বাস্তবে আমি গিয়েছিলাম নগরীর কালুরঘাট শিল্প এলাকায় মীর গ্রুপের ওয়্যারহাউসে।
তিনি আরও বলেন, মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম এবং আমি মামাতো-ফুপাতো ভাই। সালাম ভাই আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন বিএনপির কিছু ছেলে তার কাছে চাঁদা দাবি করেছে। তাই আমি বিএনপি নেতা সুফিয়ান ভাইকে সঙ্গে নিয়ে কালুরঘাট শিল্প এলাকায় (বিসিক) মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউসে যাই। সেখানে গাড়িগুলো কাদের ছিল তা আমি জানি না। আত্মীয়তার কারণে সালাম ভাইকে সহযোগিতা করতে সেখানে গিয়েছিলাম।
এনামুল হক বলেন, মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের মেয়ের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের মেজ ছেলের বিয়ে হয়েছে। সেই সূত্রে তারা আত্মীয়। নিরাপত্তার জন্য তাদের ওয়্যারহাউসে এস আলমের গাড়ি রাখতেই পারে। এতে কোনো দোষ দেখছি না।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: তারেক রহমান
জনরোষে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের দাবি জোরালো হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছেও আনুষ্ঠানিকভাবে এই দাবির কথা জানিয়েছে। অবশেষে এই দাবির পক্ষে সমর্থন দিল দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপিও।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভার অংশ হিসেবে কুমিল্লা ও ফরিদপুরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের সমর্থন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেছন, ‘বাংলাদেশে আর কোনোদিন কেউ যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে বিএনপি সংবিধানে এমন ব্যবস্থা রাখতে চায় যাতে কেউ পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশায় যুক্ত হয়েছে নতুন আশাবাদ, আর পরিবর্তিত হয়েছে ভাষা, এই পরিবর্তিত নতুন ভাষা পড়তে ও বুঝতে হবে আর আশাবাদকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। সেটি না পারলে ছিটকে পড়তে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এতদিন শুধু আওয়ামী লীগ ছিল প্রকাশ্য প্রতিপক্ষ, আমরা তাদের আক্রমণের ধরন বুঝতাম ও জানতাম। এখন ওরা ছাড়াও চারিদিকে অসংখ্য অদৃশ্য প্রতিপক্ষ, এদের অবস্থান অন্ধকারে। ওরা সর্বত্র সতর্ক থাকতে হবে এই দৃশ্যমান আর অদৃশ্য প্রতিপক্ষ মোকাবিলায়।’
বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি ভবিষ্যতে এ দেশে স্বৈরশাসনের কবর রচনা করতে চায়। আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখতে চায়, রাষ্ট্র পরিচালনায় সমাজের জ্ঞানীদের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দুই কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চায়। তরুণ ও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান আর কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত যোগ্যতা অনুযায়ী ভাতা প্রবর্তন করতে চায়, নিশ্চিত করতে চায় সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ।’
বিএনপি ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে অতীতের মতো আবারও দল হিসেবে সফল হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারেক রহমান।