এই বিএনপিকে টলানোর সাধ্য কারও নেই: আমীর খসরু
এখনকার বিএনপিকে টলানোর সাধ্য কারও নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
দেশে এখন বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক খেলা চলছে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশে যারা খেলা করছে, তারা বিএনপির শক্তি অনুধাবন করতে পারছে না। তারা বিএনপির শক্তি বুঝতে পারছে না। এই বিএনপি সেই বিএনপি নয়। এই বিএনপি অনেক শক্তিশালী অবস্থানে, এর শেকড় অনেক গভীরে চলে গেছে। এই বিএনপিকে টলানোর সাধ্য কারও নেই।
আমীর খসরু বলেন, বিএনপিকে জোর করে ক্ষমতার বাইরে রাখার তাদের যে ভাবনা ছিল, ওই ওয়ান-ইলেভেনের বিরাজনীতিকরণ। আবার নতুন চিন্তা, নতুন ভাবনা। ক্ষমতার স্বাদ তো কেউ কেউ পেয়েছেন, মনে করছেন এ ক্ষমতা ধরে রাখলে মন্দ কী! কিন্তু এ স্বাদ পাবার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে পেতে ১৬ বছর যুদ্ধ করেছে। বিএনপিকে ভাঙার সব ধরনের চেষ্টা হয়েছে। কিছু বাকি নেই; গুম, খুন, মিথ্যা মামলা সব হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার চেষ্টার মধ্যেও তিনি টলেননি, তারেক রহমান টলেননি, বিএনপির নেতাকর্মীরা কেউ টলেনি। সবার অবস্থান শক্ত।
এরপর ৭ নভেম্বরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর হচ্ছে অনেকটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। স্বাধীনতার যে ভাবনা, যে চিন্তা, যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা স্বাধীনতার পরে সেদিন পূর্ণ হয়নি। বরং স্বাধীনতার পরে সেটাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল। একদলীয় শাসন, সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে দেওয়া, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি, জীবনের নিরাপত্তাহীনতা, কালো আইন; এসবের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের যে গণতন্ত্রের লড়াই ছিল, সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের যে ভাবনা, মুক্তিযুদ্ধের যে ত্যাগ সেটা বাংলাদেশের মানুষ আবার নতুনভাবে পেয়েছে, নতুনভাবে গ্রহণ করেছে এবং উজ্জীবিত হয়েছে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতনের মধ্য দিয়ে যে আরেকটা বাংলাদেশের কথা চিন্তা করছি, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের চিন্তা করছি, ৭ নভেম্বরেও ভিন্ন প্রেক্ষাপটে একই বিষয় ছিল। স্বাধীনতার পর যে বাকশাল এবং একদলীয় স্বৈরাচার সৃষ্টি হয়েছিল, সৈনিক-জনতা সেদিন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করার মধ্য দিয়ে আরেকটি নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছিল।
আমীর খসরু আরও বলেন, আর যত ধরনের সংস্কারের কথা আমরা আলাপ করছি, সেটা রাজনীতিবিদরাই পূরণ করবে। আমাদের ৩১ দফার মধ্যে আমরা পরিষ্কার বলেছি। সংস্কারের কথা বলছেন? খালেদা জিয়া ছয় বছর আগে ভিশন টোয়েন্টি-থার্টিতে সংস্কারের কথা বলেননি? তখন তো কারও মুখে সংস্কারের কথা শুনিনি। সংস্কারের জন্য আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা দায়বদ্ধ জাতির কাছে। ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব বিএনপি একা করেনি। ৪২টি দল, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল, আমরা সবাই মিলে করেছি। অর্থাৎ জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আমরা ৩১ দফা করেছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, ড্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দীন, সিএমইউজে সভাপতি সাংবাদিক মো. শাহনওয়াজ, চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দীন আহমেদ মানিক, ড্যাব মহানগর সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্বাস উদ্দীন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি এম এ সাফা চৌধুরী, ব্যাংকার মেহরাব হোসেন খান প্রমুখ।
আরটিভি/এসএইচএম
মন্তব্য করুন