পুলিশ সংস্কারের প্রস্তাবনা দেবে বিএনপি
বিএনপির পক্ষ থেকে ‘পুলিশ সংস্কারে’ প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে গঠিত একটি কমিটি এরই মধ্যে তা তৈরি করে দলের চেয়ারপারসন অফিসে জমা দিয়েছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) প্রস্তাবনা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা বৃহস্পতিবারই (১৪ নভেম্বর) জমা দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। কমিটির পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর বিক্রম হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্য কমিটি গঠন করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব এস এম জহরুল ইসলাম, সাবেক আইজিপি মো. আব্দুল কাইয়ুম, সাবেক সংসদ সদস্য আনসার উদ্দিন খান পাঠান এবং পিপিএম ও সাবেক ডিআইজি সদস্য সচিব খান সাঈদ হাসান।
আরটিভি/এএইচ/এসএ
মন্তব্য করুন
জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার: জি এম কাদের
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন ও সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার পরও জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, এখন নির্বিচারে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি, আমাদের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছে, সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতা-আসামি করা হচ্ছে। এই অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। আমরা রাজপথে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করবো।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীরা রক্ত দিয়েছে। এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এর প্রতিবাদ করা হবে।
জি এম কাদের বলেন, গত ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। বক্তৃতায় আমি বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থী। বৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ৬ জুলাই গাজীপুরে জাতীয় পার্টির কাউন্সিলে বক্তৃতায় আমি বলেছি, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী। তখন আমি বলেছিলাম, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে বৈষম্য।’
জুলাইয়ে আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক করা হলে মুক্তির দাবি তোলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনে যখন গুলি চালানো হলো, আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছি আমরা।
আরটিভি/এআর/এসএ
জামায়াত ক্ষমতায় এলে নারীদের গৃহবন্দি করে রাখবে না: শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে মা-বোনরা তাদের দক্ষতা-অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সম্মানের সঙ্গে ইসলামের বিধান অনুযায়ী সমাজ উন্নয়নের অবদান রাখবেন। তাদের কাউকেই আমরা গৃহবন্দি করে রাখবো না।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার আয়োজনে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন জামায়াতের আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যারা একদিন গর্ব করে বলতেন এই দেশ আমার বাপ-দাদার, এদেশ ছেড়ে আমরা কোথাও পালাবো না। তারা কি জাতির সঙ্গে দেওয়া কথা রক্ষা করেছেন? তাদের কর্মীদের সঙ্গে দেওয়া কথা রক্ষা করেছেন? তারা কারও সঙ্গে দেওয়া কথা রক্ষা করতে পারেননি। কারণ, তারা আল্লাহকে ভয় করতেন না। এইসব অপকর্মের ভয়ে এই দেশে দাঁড়িয়ে স্থির থাকার দুঃসাহস তাদের হয় নাই। আমরা তাদের বিচার চাই। এদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। যে যেখানেই থাকুক তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তিনি বলেন, আগামীতে দেশকে খেদমত করার সুযোগ পেলে একটা যুবকের হাতকেও বেকার থাকতে দেবো না। তাদের হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করবো। হাতে কাজ তুলে দেবো। তারা হবেন দেশ উন্নয়নের এক একজন নায়ক।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা জনগণকে স্বস্তি দিন, প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন। জনগণের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সাধন করুন। জনগণের হাত আপনাদের সহযোগিতা করবে। আপনারা ভুল করলে আমরা শুধরে দেবো।
কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমির আলী আজম মো. আবু বকর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন।
কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হুসাইন ও মাওলানা আজিজুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. হারুন উর রশিদ, ড.মাওলানা মোজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হাই, আব্দুল আলীম, মাওলানা আবু তালিব, ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা মতিউর রহমান, মো. বাবুল হোসেন, মাওলানা ওলিয়ার রহমান, মো. আজিজুর রহমান, ফারুক আহমেদ, শহীদ ইবনুল পারভেজের পিতা মাস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরি সভাপতি এইচএম আবু মুসা, ছাত্রশিবিরের ঝিনাইদহ শহর সভাপতি মেহেদী হাসান রাজু, জেলা সভাপতি মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
সম্মেলন শুরুর আগেই দুপুর ১২টার পর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাজার হাজার নেতাকর্মীতে পূর্ণ হয়ে ওঠে কলেজ মাঠ।
আরটিভি/এমএ
রাষ্ট্রপতির অপসারণ চায় না বিএনপি: সালাহউদ্দিন
এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিএনপি চায় না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। এতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিএনপি চায় না।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করবে। যা দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত করবে। সুতরাং ফ্যাসিবাদের দোসররা যেন কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা জানান।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘যারা (এই দাবিতে) বিক্ষোভ করছেন তাদের আমরা বারবার বলছি, তারা যেন বঙ্গভবনের আশপাশ থেকে সরে যান। মঙ্গলবার থেকে বঙ্গভবনের আশপাশের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।’
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সাত দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও ছিলেন। এ প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা এই আল্টিমেটাম দিচ্ছেন, তাদেরকে এ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন।’
পদত্যাগের এই দাবিকে সরকার কীভাবে দেখছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘অনেক ধরনের দাবি অনেক জায়গায় তৈরি হয়। সবগুলো তো আমরা এড্রেস করি না।’
আরটিভি/এফএ/এআর
বিদেশি নাগরিক হয়ে রাষ্ট্রপতি হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ: রিপন
বার্বাডোজের নাগরিক হয়ে মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হয়ে দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) ইতালির বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আমিনুর রহমান সালামের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘সংবর্ধনা ও সাংবাদিকতার বিকাশে জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, মো. সাহাবুদ্দিন বার্বাডোজের নাগরিক। অন্য দেশের নাগরিক হয়ে তিনি কীভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন? এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এর জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ করা উচিত। তার এ পদে থাকার যোগ্যতা নেই। তিনি আপাদমস্তক একটা দুর্নীতিবাজ লোক।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ঢাকতেই তাকে সে সময় ওখানে বসানো হয়েছিল। পরে তাকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়। এরপর সাহাবুদ্দিনকে যখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি করা হয়, তখন সবাই আশ্চর্য হয়ে গেলেন।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়ে রিপন বলেন, তিনি তো মানুষের ভোটে নির্বাচিত হননি। তাই উনি পদত্যাগ করলেন কি করলেন না সেটা নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ওনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানকে পেছনে রেখে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। তাকে পদত্যাগপত্র দেওয়া হয়েছিল। এখন আড়াই মাস পর এসে সাহাবুদ্দিন বললেন ওনি পদত্যাগপত্র পাননি। এর মধ্যে নিশ্চই কোনো উদ্দেশ্য আছে।
আরটিভি/আরএ/এসএ
দিল্লিতে কোথায় আছেন শেখ হাসিনা, জানাল ভারতীয় গণমাধ্যম
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তাকে এক মুহূর্তের জন্যও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময় গুঞ্জন ওঠে তিনি ভারত ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। তবে শেখ হাসিনা যে ভারতেই আছেন সেটি নিশ্চিত করলেও তার অবস্থান সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি মোদি সরকার। অবশেষে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’ শেখ হাসিনার অবস্থান নিশ্চিত করে সংবাদ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত দুই মাস ধরে নয়াদিল্লির লুটিয়েনস বাংলো জোনের একটি সেইফ হাউসে বসবাস করছেন।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, লুটিয়েন্স বাংলো এলাকাটিতে ভারতের মন্ত্রী, সিনিয়র এমপি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাড়ির মতো একটিতে শেখ হাসিনাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রোটোকলসহ মাঝে মাঝে দিল্লির লোধি গার্ডেনে হাঁটাহাঁটি করেন। তার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
পলাতক হাসিনার গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার রক্ষার স্বার্থে দ্য প্রিন্ট বাড়িটির প্রকৃত ঠিকানা বা রাস্তার বিবরণ প্রকাশ করেনি।
এদিকে, জুলাই-আগস্টে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে হাজিরের নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট একটি বিমানে করে ভারতের উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ। বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পরপরই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও দেশটির উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর দুদিন পর তাকে হিন্দন বিমান ঘাঁটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আরটিভি/আরএ/এসএ
ছাত্রদের ওপর হামলায় চুন্নুসহ ৮২ জনকে আসামি করে মামলা
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে সহিংসতা, মদদ, অর্থায়ন ও নির্দেশের অভিযোগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ ৮২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে করিমগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন উপজেলার কাদিরজঙ্গ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওমর কাইয়ুম। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ২৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট করিমগঞ্জ বাজারের মোরগমহালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে হামলা চালান আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। জাতীয় পার্টির মহাসচিব কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সাবেক এমপি মুজিবুল হক চুন্নু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রধান সমন্বয়ক সানাউল হকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধন, নির্দেশে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতায় আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, শটগান, বন্দুক, ককটেল ও বিস্ফোরক দ্রব্যসহ মামলা চালান। আন্দোলনকারীদের মোটরসাইকেলগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে চার লাখ টাকা। এ হামলায় অনেকেই গুরুতর আহত হন। পরে আসামিরা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহব উদ্দিন। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরটিভি/এমএ/এসএ
যে কারণে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না বিএনপি
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের মাধ্যমে দেশে কোনো সাংবিধানিক সংকট ও শূন্যতা তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। আর এ কারণে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না দলটি।
রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে, শূন্যতা তৈরি হবে। তাই তারা চায় সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দিক থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবি ওঠার পর বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
দেখা করার পর তাদের পক্ষে নজরুল ইসলাম খান বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, দেশে যাতে নতুন করে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি না হয় সেজন্য খেয়াল রাখতে বলেছি। আমরা কোনো সাংবিধানিক সংকট চাই না। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা যদি কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে আমরা গণতন্ত্রকামীরা তা প্রতিহত করবো।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বিএনপির চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আরেক ব্রিফিংয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতির পদে শূন্যতা এই মূহুর্তে রাষ্ট্রীয় সংকট সৃষ্টি করবে। সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করবে। যেটা জাতির কাম্য নয়৷ এই সংকটের কারণে যদি জাতির গণতন্ত্রে উত্তরণ বিলম্বিত হয় বা বাধাগ্রস্ত হয়, সেটা জাতির কাম্য নয়।
বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ প্রসঙ্গে একটি পত্রিকায় রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে যে বিতর্ক হয়েছে তা একটি সেটেলড ম্যাটার। বঙ্গভবন থেকে বিবৃতি দিয়েও তা বলা হয়েছে। তারপর এটা নিয়ে আর বিতর্ক থাকে না। সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সে তার পদত্যাগের কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বলেছেন।
আমরা মনে করি, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক শূন্যতা ও রাষ্ট্রীয় সংকট তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষ বা অন্য কোনো পক্ষের দুরভিসন্ধি কাজ করবে কিনা। সেইরকম রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক সংকটের মুখোমুখি আমরা হতে চাই না। আমরা চাই গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে অন্য কোনো কিছু যেন বাধা না হয়। আমরা চাই গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং নির্বাচন, এর মাঝে আর কোনো কিছু যেন বাধা না হয়। এটা জাতির জন্য কল্যাণকর হবে না।
আর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আর সব অপকর্ম বাদ দিলেও ছাত্রলীগ জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র আক্রমণ করেছে, ভারি অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছে। আর আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগ ছিল একটা আতঙ্কের নাম। ছাত্র-জনতার দাবি ছিল তাদের নিষিদ্ধ করার। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার সঙ্গে আমরা একমত।
আওয়ামী লীগ প্রশ্নে তিনি বলেন, অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের গণহত্যার বিচার শুরু হয়েছে। আইনেও কিছু সংশোধন আসবে৷ সেখানে দলেরও বিচার হবে। দল নিষিদ্ধেরও বিষয় থাকবে কিনা সেটা বিচার শেষ হলে দেখা যাবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে স্বপদে বাহাল রাখায় কোনো সংকট দেখছি না। বরং আমার দল মনে করে, তিনি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। কারণ, স্পিকার পদত্যাগ করেছেন। ডেপুটি স্পিকার কারাগারে। সংসদ নেই। তাহলে তিনি কোথায় পদত্যাগ করবেন? তিনি পদত্যাগ করলে সংকট হবে।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় ঐক্য হয়েছে। এখন রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা সব রাজনৈতিক দলসহ সব পক্ষের সঙ্গে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই করতে হবে। এর বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। আর এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি স্বেচ্ছায় সরে যেতে চাননি, বলেন তিনি।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা বা না করা প্রসঙ্গে আমি কিছু বলবো না। তবে ১৫ বছর ধরে তারা হত্যাসহ যেসব অপরাধমূলক কাজ করেছে, আগে তার বিচার হওয়া দরকার। দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমাদের তিন সিনিয়র নেতা রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টাকে যে মতামত দিয়েছেন, সেটা আমাদের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকদের মতামত। আমার আলাদা কোনো মতামত নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বিএনপি নেতা বলেন, সাংবিধানিক সংকট তৈরি হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে। আর সেটা হলে নির্বাচন ও সংস্কার শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যেতে পারে। সাংবিধানিক সংকট হয়- এমন কোনো কাজের বিরোধী বিএনপি। তাই বিএনপি বর্তমান রাষ্ট্রপতিকেই তার পদে রাখতে চায়। সেটাই আমাদের জন্য নিরাপদ।
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার প্রায় তিন মাস পর বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার লিখিত পদত্যাগপত্র না পাওয়ার কথা বললে সোমবার আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে শপথ ভঙ্গের অভিযোগ তোলেন।
তারপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা রাষ্ট্রপতিকে ফ্যাসিবাদের দোসর বলে তার পদত্যাগ দাবি করেন। তার পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে শহীদ মিনারে সমাবেশ ও বঙ্গভবন ঘেরাও করা হয়। রাষ্ট্রপতিকে পদ ছাড়তে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল তখন।
তবে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতির পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা না থাকার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৈঠকের পর বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
আরটিভি/এএইচ