দেশে ফিরে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন ব্যারিস্টার আ. রাজ্জাক
জামায়েতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দেশে ফিরেছেন। ফিরেই তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন। তিনি বলেন, হিটলার চলে যাওয়ার পরে জার্মানি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। কিন্তু জার্মানি এখন এক হয়ে গেছে। তিনটি বিষয়ে জাতি যদি একমত হতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আর সেই তিনটি বিষয় হলো—স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
দেশে ফিরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এসব কথা বলেন তিনি। এসময় তাকে স্বাগত জানান জামায়াতে ইসলামী এবং এবির পর্টির উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা। এ ছড়াও কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘ ১১ বছর পর দেশে এলাম। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। আমি এ দেশকে ভালোবাসি। এই শহর আমার নিজের শহর। এখানকার আইনাঙ্গনেই আমার বিচরণ ছিল। আজকে এত বছর পর দেশে আসতে পেরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করছি।
জুলাই বিপ্লবের কথা স্মরণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, বিমান যখন ঢাকার এয়ারপোর্টে এসে অবতরণ করছিল, তখন আমি স্মরণ করছিলাম সেই সমস্ত তরুণ যুবকদের কথা যারা সর্বোচ্চ সেক্রিফাইস করে আজ দেশ ও জাতির জন্য একটি মুক্ত পরিবেশ করে দিয়েছে।
যুবকরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে আমাদের জন্য স্বাধীনতা এনে দিয়েছে মন্তব্য করে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, আজকের এই দিনে আমি তাদের অবদানকে শ্রদ্ধা ভরে স্বীকার করছি। কিন্তু আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। প্রতিটি বিপ্লবের পরেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফ্রেঞ্চ বিপ্লবের পর হয়েছে, আমেরিকান রেভুলেশনের পরে হয়েছে।
বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে ফিরছেন না তবে আইন অঙ্গনে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডে চলে যান জামায়েতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। সেখানে অবস্থানকালে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন এই নেতা। এর পরেই তাকে এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা করা হয়। সেখান থেকেও পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
জামায়েতে ইসলামীকে দেওয়া পদত্যাগ বার্তায় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দুই দশক তিনি জামায়াতে ইসলামীকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জামায়েতের ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত এবং ওই সময়ে জামায়াতের ভূমিকা ও পাকিস্তান সমর্থনের কারণ উল্লেখ করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
তার পদত্যাগ নিয়ে জামায়াত ছাড়াও বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের শাসনামলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে প্রধান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
তার দুই ছেলে সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত আছেন।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন