বৈষম্য তৈরি করলে এ সরকারের বিরুদ্ধেও সম্মিলিত আন্দোলন: মান্না
অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্য তৈরি করলে সম্মিলিতভাবে তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করবেন বলে হুঁশিয়ার করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বদলিপ্রত্যাশী এমপিওভুক্ত শিক্ষক ফোরামের ব্যানারে ‘বৈষম্যমূলক বদলি নীতিমালা সংশোধন পূর্বক এমপিওভুক্ত সব শিক্ষকের জন্য বদলি চালুর দাবিতে’ আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা যদি দেখি সরকার দেশের জনগণের জন্য কাজ করছে না, চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি করছে, তাহলে আমরা সম্মিলিতভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করবো। আমরা যে ৪২টা দল মিলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়েছি, সেই ৪২টা দলও আমাদের সঙ্গে আছে।
তিনি বলেন, এ রকম দেশ আমরা চাইনি, যে দেশে দাবি আদায়ে আন্দোলন করা লাগে, রাস্তায় বসে থাকতে হয়। আমি এই সরকারকে সমর্থন করেছি। তার মানে এই নয় যে আমি সরকারে আছি। সবকিছু সংস্কারের সময় এসেছে। আমরা জানি, এক বছরে সবকিছু সংস্কার করা যাবে না। গত ১৫ বছর যে দল দেশ পরিচালনা করেছে তাদের সঙ্গে কথা বলতে আমি ঘৃণা করতাম। কিন্তু বর্তমানে যারা উপদেষ্টা পরিষদে আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। এই যে শিক্ষকরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাবি জানাচ্ছেন, এই দাবির বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, শিক্ষক জাতির বিবেক, তাদের বিষয়ে আপনাদের চিন্তা করতে হবে। তারা চান মন্ত্রণালয়ের কেউ এসে তাদের সঙ্গে কথা বলুক। তাদের যা দাবি তা শুনুন, আপনাদের কোনো কথা থাকলে তাও বলুন। এদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ নেন। রাস্তায় যদি শিক্ষক থাকে, তাহলে আপনাদের কোনো মান থাকে না, দেশের কোনো মান থাকে না। সুতরা্ যত তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ নেবেন, তত ভালো।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকরা বলেন, আমরা বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষকরা বহুদিন যাবৎ বদলি চালুর জন্য সরকারের নিকট আবেদন নিবেদন করে আসছি, কিন্তু বর্তমান সরকার শিক্ষকদের চাওয়াকে গুরুত্ব না দিয়ে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর শিক্ষকদের মাঝে বিভাজন ও বৈষম্য সৃষ্টি করে বেসরকারি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শুধু এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য বদলির প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে, যা চরম বৈষম্যমূলক।
তারা বলেন, এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০১৬ সালের পূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত সব শিক্ষককে বদলির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে যা শিক্ষকদের মাঝে চরম বিভাজন ও হতাশা তৈরি করেছে। এমনকি বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বদলির সুযোগ বঞ্চিত এবং বদলির সুযোগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাঝে চরম দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে, একে অপরের প্রতি বিষবাক্য ছুড়ছেন, মনে হচ্ছে এ যেন একটা গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হুমকি।
অবস্থান কর্মসূচিতে বদলিপ্রত্যাশী এমপিওভুক্ত শিক্ষক ফোরামের রাশিদা আক্তার, রবিউল ইসলাম, তোফায়েল সরকার, আতিকুল ইসলাম, আবু নাছের সুমন, শিশির কুমার নন্দী, তোফায়েল আহমেদ, আসিফ আলী, মশিউর রহমান, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল হাই সিদ্দিকী, বশির আহমেদ এবং অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
আরটিভি/এসএইচএম/এআর
মন্তব্য করুন