আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মসূচির প্রতিবাদ এবং গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তার-বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি হলপাড়া দিয়ে মুহসিন হল-ভিসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ এবং শেখ হাসিনার বিরুেদ্ধে নানান ধরনের স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, অভ্যুত্থানের পর ছয় মাস পার হয়ে গেছে। এতদিনে গণহত্যাকারীদের সবার জেলে থাকার কথা ছিল। কিন্তু আমরা দেখছি, তারা এখন প্রকাশ্যে জ্বালাও পোড়াওয়ের কর্মসূচি দিচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্ন করতে চাই, একটা রাজনৈতিক দল যারা মাত্র ছয় মাস আগে দেশে গণহত্যা চালিয়েছে তারা কীভাবে এখনো রাজপথের কর্মসূচি দেওয়ার সাহস পায়?
সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, অভ্যুত্থান চলাকালীন লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের শিক্ষার্থী, শ্রমিকদের প্রকাশ্যে গুলি করে, কুপিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে খুনিদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখিনি। চব্বিশের রক্তের সঙ্গে এর চেয়ে বড় বেইমানি আর হতে পারে না। অনতিবিলম্বে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, অভ্যুত্থানের পর ছাত্রলীগ বিভিন্ন রূপে ফিরে এসেছে। কখনও আনসার লীগ আবার কখনও বা রিকশাচালক হয়ে ফিরে এসেছে। তারা কতটা স্পর্ধা দেখালে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে তারা প্রকাশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা কাদের মদদে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার সাহস করে, সেই জবাব তাদের দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তাদের মোকাবেলা করার জন্য যথেষ্ট। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই তারা বাংলাদেশে কোনো নাশকতা করার আগেই তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যদি আপনারা ব্যর্থ হন তাহলে বাংলাদেশের জনগণই তাদের প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট।
সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম বলেন, দুই হাজার শহীদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। কিন্তু ছাত্রলীগ নতুন কর্মসূচি দিয়ে আবার মাঠে আসার পাঁয়তারা করছে। সরকারের কাছে জানতে চাই, পাঁচ মাস অতিবাহিত না হতেই তারা কিভাবে কর্মসূচি ঘোষণা দেয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানান। সরকার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে সক্ষম না হলে ছাত্র-জনতাই সে দায়িত্ব হাতে তুলে নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
আরটিভি/কেএইচ
মন্তব্য করুন