রাজনৈতিক কাজের চেয়ে সামাজিক কাজে বেশি ব্যস্ত ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে গত ৩১ জুলাই। কিন্তু এরই মধ্যে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব প্রশংসা কুড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম এ সংগঠনটির নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের চেয়ে সামাজিক কাজেই বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
চলতি বছরের ১১-১২ মে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সম্মেলনের পরপর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করার কথা থাকলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিভিন্ন ইস্যুর কারণে ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতৃত্ব নির্ধারণ ও ঘোষণা করতে বেশ সময় লেগে যায়।
প্রায় আড়াই মাস পর গেলো ৩১ জুলাই ঘোষিত নতুন কমিটিতে কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পান রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম রাব্বানী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি হয়েছেন সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাদ্দাম হোসেন। একইসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বে আসেন সভাপতি মো. ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়। আর দক্ষিণে সভাপতি হন মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হন মো. জোবায়ের আহমেদ।
সংগঠনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ আড়াই মাস অপেক্ষার পর নতুন নেতৃত্ব ঘোষণায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা খুশি। যেহেতু সামনে নির্বাচন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অনেক ভেবে চিন্তেই নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সে হিসেবেই ইতিবাচক ইমেজ তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছাত্রলীগের নতুন নেতারা সামাজিক মাধ্যমে বেশ সরব। ছাত্রলীগের ইতিবাচক ইমেজ তৈরি হয় এমন কাজের ছবিও ফেসবুকে হচ্ছে ভাইরাল। কখনও তাদের পাওয়া যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে বাচ্চাদের খাবার বিতরণে, আবার কখনও অসুস্থ রিক্সাওয়ালাকে হাসপাতালে আনতে, কখনও বা দেয়াল থেকে ব্যানার ও পোস্টার অপসারণের কাজ করছেন ছাত্রলীগ নেতারা। কখনও কখনও তাদের আমরা করবো জয় সমস্বরে গাইতেও দেখা গেছে।
এসব কাজ ছাড়াও কক্সবাজার পৌরসভার সড়কগুলোতে জবাই হওয়া কুরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের কাজ করেছে ছাত্রলীগ। চলমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপদে বিনামূল্যে পরীক্ষা হলের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে ছাত্রলীগ চালু করেছে জয় বাংলা বাইক সার্ভিস। পরীক্ষার্থীদের পানির বোতল বা খাতা-কলমও কিনে দিতে দেখা গেছে।
এসব বিষয়ে কথা হয়, ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সঙ্গে। তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, কোনো বিতর্কিত কাজ আমরা করতে চাই না। ছাত্রলীগ ছাত্রদের সংগঠন। শিক্ষার্থীরা মানবিক দায়িত্বের অংশ হিসেবেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবে এটাই তো স্বাভাবিক। একটা রাজনৈতিক সংগঠনেরও দায়িত্ব জনগণের বিপদে আপদে দাঁড়ানো। আমরা সেটাই করছি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ছাত্রলীগের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন যে আমানত আমাদের দিয়েছেন আমরা তা রক্ষা করতে সর্বদা চেষ্টা করবো। ইতিবাচক কাজ করে আমরা ছাত্রলীগকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। সংগঠনের পুরোপুরি ফোকাস এখন জাতীয় নির্বাচনে এমনটা স্বীকার করে তিনি বলেন, শুধু নির্বাচনকেন্দ্রীক চিন্তা নয়, সত্যিকার অর্থেই বদলে গেছে ছাত্রলীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ, মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। সেই নির্দেশ অনুসারে ছাত্রবান্ধব সংগঠন হিসেবেই ছাত্রলীগকে এগিয়ে নিতে চাই।
এমকে
মন্তব্য করুন