দুই বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি: রিজভী
কূটনৈতিক তৎপরতায় ব্যর্থ বলেই দুই বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে চলন্তিকা বস্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, জায়গা দখল করতেই একের পর এক বিভিন্ন বস্তিতে পরিকল্পিত আগুন দিচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।
এ সরকারের হাতে কেউ নিরাপদ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিরোধী দল দমনের পাশাপাশি দখলের রাজনীতিতে ব্যস্ত সরকার। তাই মানুষের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।
পি
মন্তব্য করুন
সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় সেনাকুঞ্জের উদ্দেশ্যে গুলশানের বাসা থেকে রওনা হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বুধবার (২০ নভেম্বর) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপাসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার।
এর আগে, ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সবশেষ সিলেট সফর করেন তিনি। এরপর এই প্রথম প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন খালেদা জিয়া।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার পাশাপাশি ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির ২৬ জন আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদার নেতারা।
সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লে. জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল এ এস এম কামরুল আহসান আমন্ত্রণপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে পৌঁছে দেন।
এদিকে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৬ সিনিয়র নেতার নামে আমন্ত্রণপত্র দলের গুলশান কার্যালয়ে চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তারের কাছে সেনা কর্মকর্তারা দিয়ে গেছেন।
সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
আরটিভি/একে/এস
নির্যাতিত আ.লীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করলে আমি এর বিরুদ্ধে: রিজভী
নাটোরের বড়াইগ্রামে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজনের সামনে উজ্জ্বল কুমার মণ্ডল (২৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উজ্জ্বলের খোঁজ-খবর নিতে গিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ডাকা এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে রিজভী এ প্রতিবাদ জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভিকটিমকেই যদি গ্রেপ্তার করা হয়, এটা বেআইনি। আমি জানতাম না তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বরং আমি বলেছি, যারা এর জন্য দায়ী সে বিএনপির লোক হলেও তার বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা নিতে বলেছি। ঘটনায় জড়িত অনেকের নাম পেয়েছি, যারা আমাদের দলের নাম ব্যবহার করে কাজটি করেছে, অথচ তারা রাজনীতি করে না। তার (আওয়ামী লীগ কর্মী উজ্জ্বল) ওপর আক্রমণ হয়েছে, এ কারণে ভিকটিমকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আমি চূড়ান্তভাবে এটার বিরুদ্ধে। তবে তার নামে যদি পূর্বের মামলা বা ঘটনা থাকে সেটা আমি বলতে পারব না।
তিনি বলেন, যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা নেতাদেরকে বলা হয়েছে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার জন্য থানায় বসে ওসি সাহেবকে বলে এসেছি এবং জানতে চেয়েছি কেন এ বিষয়ে এখনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তারা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে পাঠিয়েছেন বিষয়টি জানার জন্য। ৫ আগস্টের পর তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের সংযত থাকতে নিয়মিত নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন কেউ যাতে আইন হাতে তুলে না নেয়। নাটোরে যার ওপর হামলা হয়েছে শুনেছি সে বিগত সময় আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু তাকে বাসা থেকে তুলে এনে মারধর করা বেআইনি কাজ, এটা তো হতে পারে না, আমরা সেই দল করি না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনারা জানেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এ পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত ৮০০ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশটা যখন নতুন করে গড়ে উঠছে এবং গণতন্ত্রের পথে যে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে কেউ যাতে এই যাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ভয়াবহ শাসন কায়েম হয়েছে। এই নাটোরে আমার প্রাণ হাতে নিয়ে আসতে হয়েছে। নাটোরের অবৈধ এমপি শিমুল দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করত। এদের বিবেক ছিল না, মানবতা ছিল না।
প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর দুপুরে আওয়ামী লীগ কর্মী উজ্জ্বল কুমার মণ্ডলকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে পুলিশে দেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরে উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
সেখান থেকে তাকে ফৌজদারি আইনের ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে পরেরদিন ২১ নভেম্বর সকালে নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে পাঠালে আদালত ওই দিনই তার জামিন মঞ্জুর করেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়।
আরটিভি/এফএ-টি
নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ভঙ্গুর রাষ্ট্র ব্যবস্থার মেরামত তত দেরি হবে: তারেক রহমান
নির্বাচন যত দেরিতে হবে, আওয়ামী লীগের নিজ স্বার্থে গড়ে তোলা ভঙ্গুর রাষ্ট্র ব্যবস্থার মেরামত তত দেরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেছেন, নিজেদের স্বার্থ হাসিলে আওয়ামী লীগ যে ভঙ্গুর রাষ্ট্র ব্যবস্থা নির্মাণ করেছিলো, তা দীর্ঘায়িত হবে যদি নির্বাচন দেরিতে হয়।
জনস্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা ব্যবস্থা, বহুমুখী সংকটের আবর্তে আটকে পড়া কৃষক ও কৃষি ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনে ব্যাপকভাবে রাজনীতিকরণের ফলে সৃষ্ট সংকটগুলো দূর করে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমান আরও লিখেন, একমাত্র জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই জাতির পুনর্গঠন সম্ভব।
জনগণের পছন্দের প্রতিনিধিকে সম্মান করা হবে এবং প্রতিনিধিদের অবশ্যই জনগণের সেবা করতে হবে। উভয়পক্ষকেই রাষ্ট্র পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে, যাতে সবার জন্য সমতা, অন্তর্ভুক্তি এবং উন্নয়ন নিশ্চিত হয় বাংলাদেশে।
দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন: মির্জা ফখরুল
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন হোসেন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চরম অস্থিরতা ও নৈরাজ্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ মন্তব্য করেন তিনি।
বক্তব্য প্রদানকালে নির্দিষ্টভাবে কারও নাম মুখে না নিলেও দায়িত্বজ্ঞানহীন বিভিন্ন বক্তব্যের কারণে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট দানব সরকারকে উৎখাত করেছে দেশের ছাত্র-জনতা। তার ফলশ্রুতি কি এই বাংলাদেশ? তিন মাসও যায়নি, রাস্তায় রাস্তায় অবরোধ! হত্যা, রক্তপাত হচ্ছে, জ্বালাও পোড়াও! কেন এই ভয়াবহ হিংসা? সমস্যা কোথায়? আর কত এই বিভাজন?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিন মাসেই আমাদের আসল চেহারা বেরিয়ে এসেছে। এমন চেহারা নিয়ে সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। গত কয়েক দিনের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ধর্মকে ব্যবহার করে উন্মাদনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করে বিভাজনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য লড়াই করলাম, তা পুড়িয়ে দিচ্ছে। নিজের ঘরেই যদি বিভাজন থেকে যায় তাহলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় উন্মাদনা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি।
এরপর বিএনপির এই নেতা বলেন, কিছু মানুষ দায়িত্বশীল হয়েও উসকানি দিচ্ছে। তাদের নাম বলব না। তারা বিভাজনের পথ তৈরি করছে। তারা দেশের শত্রু না বন্ধু, তা বিচারের ভার জনগণের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে কোন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? আমাদের সবাইকে দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন কথা বলতে হবে। বিভাজন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে না। এজন্য দেশকে ভালোবেসে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জনগণ বিভ্রান্ত হয়, এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আতঙ্ক–ভয় কোথায়? আমরা কি বুঝি যে, আততায়ী পেছনে দাঁড়িয়ে আছে? আমরা বুঝলে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বের হতো না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তারা এমন কথা বলবেন না, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে৷ এ সরকার কারও দয়াতে হয়নি, রক্তের ওপর এ সরকার হয়েছে, তাই সরকারের দায়িত্ব জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটানো।
দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সারাজীবন লড়াই করলাম, সেখানে জ্বালিয়ে দাও-পুড়িয়ে দাও স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এই বাংলাদেশ কখনও দেখতে চাইনি। কারও দ্বিমত থাকতে পারে, কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা জীবন দিয়ে রক্ষা করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্রের উত্তরণ সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, জেলে গেছি, আবার জেলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, কিন্তু এ দেশ আমরা দেখতে চাই না। যা অন্যায় তার বিরোধিতা করব। যারা সামনে থেকে লড়াই করি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে পিছপা হব না।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন ফখরুল
চলমান সংকট নিরসনে এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যমুনায় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমাদের আসার মূল উদ্দেশ্য ছিল সম্প্রতি উদ্ভুদ পরিস্থিতি, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ইসকন পরিস্থিতি, শিক্ষার্থীদের কয়েকটি কলেজের সমস্যা নিয়ে দলের উদ্বেগের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো। আমরা তা জানিয়েছি। আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা তার পরিষদ নিয়ে দ্রুত বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, দেশে যেন বিভাজন তৈরি না হয়। চলমান সংকট নিরসনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জনগণের দুর্ভোগের কথাও জানিয়েছি। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের বিষয়টিও তুলে ধরেছি। যাতে করে তারা দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য কাজ করেন। টিসিবির ট্রাকগুলোকে বাড়ানোর জন্য বলেছি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার যে মামলাগুলো করেছি, সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার করার ব্যাপারে দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিরও আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে বলেছি, যা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সংস্কারগুলোকে সম্পূর্ণ করে যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার জন্য বলেছি। একটি রোডম্যাপ অত্যন্ত জরুরি। এই কথাগুলো আমরা তাদেরকে বলেছি।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও তার সঙ্গে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা শান্তিপূর্ণভাবে ও মনোযোগসহ আমাদের কথা শুনেছেন।
আরটিভি/এফএ
মমতা ব্যানার্জীর বক্তব্য দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি: ফখরুল
বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বক্তব্য রেখেছেন তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবিলম্বে মমতার এই ধরনের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) লন্ডন থেকে মুঠোফোনে গণমাধ্যমের কাছে দলের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সকালে কয়েকটি পত্রিকায় একটা সংবাদ দেখলাম যে ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে উক্তি করেছেন বাংলাদেশ সম্পর্কে- সে বিষয়ে আমি বক্তব্য না রেখে পারছি না। তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যে উক্তি করেছেন বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের… এটা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি একটা হুমকিস্বরূপ। আমরা মনে করি, এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নেতাদের (ভারতের) যে দৃষ্টিভঙ্গি- তা কিছুটা হলেও প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। এ ধরনের কোনও চিন্তাও তাদের মধ্যে থাকা উচিত হবে না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে এবং সম্প্রতি একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছে… এ দেশের মানুষ যেকোনও মূল্যে এই ধরনের চক্রান্তকে রুখে দেবে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপও চেয়েছেন।
এনডিটিভি লিখেছে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ-ইসকনের তিন জন পুরোহিত গ্রেপ্তার হওয়ার খবরের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এমন দাবি তুললেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুন্ণ হওয়া বা বিপন্ন হওয়ার যে অলীক কাহিনি ভারতীয় মিডিয়ায় প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে- তা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি, এখানে ভারতের সাংবাদিকরা এসেছিলেন, তারাও দেখেছেন… পশ্চিম বাংলা ও ভারতের অনেক নামকরা সাংবাদিক এসেছিলেন, তারা দেখেছেন- বাংলাদেশে এ ধরনের কোনও পরিস্থিতি নেই। অথচ ভারতবর্ষের মিডিয়া ও তাদের নেতারা যেভাবে সম্পূর্ণ একটা মিথ্যাকে প্রচার করছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দিচ্ছেন, তা কোনোমতেই বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে এটা খুব পরিষ্কার যে, ইসকনের সাম্প্রতিক ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক, রহস্যজনক এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকিস্বরূপ।
আরটিভি/একে
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবার জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করা হবে: তারেক রহমান
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবার জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করা হবে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এই ফ্যামিলি কার্ড প্রতিটি পরিবারের মা কিংবা স্ত্রীর নামে দেওয়া হবে। নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাদের মধ্যে দেশীয় উৎপাদনশীল পণ্য বিতরণ করা হবে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ৬০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৪০০ শিক্ষার্থী বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে এই কর্মশালায় অংশ নেন।
রাষ্ট্র থেকে যত বেশি সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে রাষ্ট্রের সংস্কার কার্যক্রম কাজে আসবে। এছাড়াও ফ্যামিলি কার্ডের মতো কৃষকদের ফার্মার্স কার্ড দেওয়া হবে। এতে প্রকৃত কৃষকদের শনাক্ত করে, তাদেরকে ডাটাবেজের আওতায় আনা হবে।
বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে বাজেট বাড়ানোর ওপর জোর দেবে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জোর দেওয়া হবে। যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। যাতে শিক্ষার মান বাড়ে এবং শিক্ষার্থীরা সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে প্রাথমিক পর্যায় থেকে ধারণা লাভ করে।
যেভাবেই হোক দুর্নীতি রোধ করতে হবে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, দুর্নীতির কালো থাবা থেকে দেশ ও জনগণকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। অনেক সময় বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ভাষার সমস্যা দেখা দেয়। পাঠ্যবইয়ে বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি তৃতীয় আরেকটি ভাষা অবশ্যই শিখানো হবে। এতে দেশের বাহিরে কর্মসংস্থানে সমস্যা হবে না। শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাদের হাতের লেখা ও আর্টের প্রতি জোর দেওয়া হবে।
প্রতিটি গ্রামে একাধিক পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, স্বাস্থ্য বিষয়ে জনগণকে সচেতনতা করতে হবে। এরমধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ নারীদেরকে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ হবে। কর্মসংস্থান বাড়ানো হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরের রিকশাচালকদের বেসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। চাঁদাবাজি রোধ করতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পরিবেশ রক্ষায় খাল ও নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ৫ বছরে ৫ কোটি গাছ লাগানো হবে।
সংস্কার বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ২ বছর আগে ৩১ দফা দিয়েছে। আমরা তখনও জানতাম না স্বৈরাচার কবে বিদায় নেবে, তারপরেও আমরা রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা দিয়েছি। এই দফাগুলো সারা দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাত্তার পাটোয়ারী, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির ও মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল প্রমুখ।
আরটিভি/কেএইচ