পবিত্র ঈদুল আজহার সবচেয়ে বড় একটা অংশ হচ্ছে কুরবানি, যার মানে হচ্ছে আত্মত্যাগ উৎসর্গ করা। প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ বিশ্বজুড়ে মুসলিমরা গরু, ছাগল, উট, দুম্বার মতো বিভিন্ন প্রাণী কুরবানি দিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে মুসলিমরা আল্লাহ তায়লার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে।
পশু কুরবানি করার পর এর গরিব, প্রতিবেশি এবং পরিবারের মধ্যে সেই মাংস বন্টন করা হয়। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর কুরবানি ওয়াজিব। অনেকে আবার নিজেরা পশু না কিনে স্থানীয় মসজিদ বা প্রতিষ্ঠানকে তাদের টাকা দান করে দেন। ওইসব মসজিদ বা প্রতিষ্ঠান এসব ব্যক্তির হয়ে কুরবানির পশু কেনে এবং বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ অভাবী মানুষের মাঝে তা বন্টন করে দেয়।
চলতি বছরে ঈদুল আজহায় কুরবানি অন্যান্য যেকোনো বছরের চেয়ে ভিন্ন। কেননা এ বছর করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ চলছে বিশ্বজুড়ে। এমতাবস্থায় আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও বেশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছে মুসলিম বিভিন্ন সংস্থা। এগুলোরই একটি হচ্ছে মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি)। তারা কুরবানি দেয়ার সময় যতটা সম্ভব সংস্পর্শ বর্জন করা যায়, তার পরামর্শ দিয়েছে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় করোনার হার সবচেয়ে বেশি ইন্দোনেশিয়ায়। গত মাসে দেশটির কর্তৃপক্ষ এক নোটিশে জানায়, যেসব এলাকায় করোনা ছড়ানোর কম ঝুঁকি রয়েছে যেখানে জামাতে ঈদের নামাজ এবং পশু কুরবানি দেয়া যাবে।
কুরবানি নিয়ে অন্যান্য দেশও পূর্ব সতর্কতা নিয়েছে। ভারতের হায়দরাবাদের একজন মুফতি এক ফতোয়ায় বলেছেন যে, মহামারির কারণে কোনও মুসলিম যদি কুরবানি দিতে না পারে তবে কুরবানির সমপরিমাণ টাকা গরিবদের দান করে দিতে হবে।
কুরবানির জন্য পশু কিনতে হাটে গেলে বা মানুষজন মাংস নিতে বাসা এলে করোনার বিস্তার ঘটতে পারে এমন আশংকায় ওই মুফতি এই ফতোয়া দিয়েছেন।
এদিকে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ শহরের মধ্যে অস্থায়ী মাংস বাজার স্থাপন নিষিদ্ধ করেছে। একই সঙ্গে উন্মুক্ত স্থানে পশু কুরবানি করাও নিষিদ্ধ করেছে তারা। রোববার পাকিস্তানের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাফর মির্জা বলেছেন, পশু হাটে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং চলতি বছর অনলাইন কুরবানির পশু কেনার প্রতি অনুরোধ করছি।
আরব আমিরাতের দুবাইয়ের কর্তৃপক্ষ চলতি বছর কুরবানিতে স্মার্ট পথ বাতলে দিয়েছে স্থানীয়দের জন্য। সেখানকার কর্তৃপক্ষ ঘরে বসেই কুরবানির মাংস পাওয়ার জন্য অ্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। দুবাই পৌরসভা জানিয়েছে, আল মাওয়াশি, তুর্কি, শাবাব আল ফ্রিজ এবং ধাবাইয়া আলদার-এই চারটি অ্যাপের মাধ্যমে কুরবানির পশুর জন্য অনুরোধ করতে পারবে সেখানকার বাসিন্দারা।
এ