রাজাকারের দল তোরা, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাড়: শিক্ষামন্ত্রী
জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘এদের আওয়াজে বিভ্রান্ত হলে চলবে না! এ যুগের রাজাকারদের পরিণতি ওই যুগের রাজাকারদের মতই হবে! ঘৃণা, ধিক্কার, আর ক্রোধ এদের প্রতি! রাজাকারের দল তোরা, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাড়!’
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা উল্লেখ করেছেন
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা করেছে, আন্দোলন করেছে। এটি অবশ্যই নাগরিক অধিকার। এ ব্যাপারে কারও কোনো দ্বিমত নেই।
কিন্তু যারা প্রকাশ্যে নিজের আত্মপরিচয়, জন্ম পরিচয়, ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে, ‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার! রাজাকার!’ স্লোগান দিয়েছে, এরা সবাই এই যুগের রাজাকার।
এরা রাষ্ট্র মানে না, আদালত মানে না, ইতিহাস মানে না, এবং সর্বোপরি এই দেশকেই মানে না!
আর ফেসবুকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই যুগের রাজাকারেরা একটু সক্রিয় বেশি। কারণ, কিছু একটা মন্তব্য লিখে, একটা স্ট্যাটাস দেওয়ার ভার্চুয়াল রাজাকারি করা অনেক সহজ।
তিনি বলেন, রাজাকার আগেও ছিল এবং এর ধারাবাহিকতায় এখনও আছে! ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে প্রায় ২০% শতাংশ ভোট পড়েছিল নেজামি ইসলামি, মুসলিম লীগ ইত্যাদি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পক্ষ তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এই ২০% এর অর্ধেক ১০% ধরে আজকের ১৬ কোটি মানুষের সাথে মেলালে আসবে ১.৬ কোটি। এর মধ্যে ০.৬ কোটিও যদি সারাদিন নিজের রাজাকারির অরাজকতা প্রকাশ করে, বাকি জনগোষ্ঠীর তুলনায় এরা নগণ্যই থাকবে!
এদিকে রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।’
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য ঘিরে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘তুমি কে, আমি কে; রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে; স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের খবর ছড়িয়ে পড়লে বুয়েট, জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতে একই স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতরা। পরে তারা প্রধানমন্ত্রীকে তারা বক্তব্য প্রত্যাহারে আলটিমেটামও দেন। এরপর সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এ ইস্যুতে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।
মন্তব্য করুন