• ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১
logo

পুলিশ সদস্যদের প্রতি সোহেল তাজের বিশেষ অনুরোধ

আরটিভি নিউজ

  ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৩:১৩
ছবি সংগৃহীত

গণঅভ্যুথানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অনেক পুলিশ সদস্য নিহত এবং আহত হয়েছেন। ফলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তা ও বিচারসহ ১১ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে।

রোববার (১১ আগস্ট) দুপুর ১২টার সময় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পুলিশের কর্মবিরতি নিয়ে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ।

তার স্ট্যাটাস পাঠকের জন্য হুবহু দেওয়া হলো:

আমার প্রিয় পুলিশ বাহিনীর সদস্য ভাই-বোনেরা, আপনারা দয়া করে কাজে ফিরে আসুন। আপনাদের আমাদের সবার খুবই প্রয়োজন। আপনারাই তো আমাদের সেবক এবং রক্ষক। যারা অন্যায় করেছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে। কিন্তু আমরা জানি আপনারা সবাই অন্যায় করেন নাই।

আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের ১১ দফা দাবির সঙ্গে একমত। আমি বিশ্বাস করি এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন হবে ইনশাআল্লাহ।

দৃষ্টি আকর্ষণ: উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ছাত্র-জনতার এই অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য যদি হয়ে থাকে একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ, তাহলে আমাদের সর্ব প্রথম নজর দিতে হবে সুশাসন প্রতিষ্ঠার দিকে। সুশাসনের পূর্বশর্ত হচ্ছে আইনের শাসন। দুর্নীতি, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করা। এই কাজটা করার মূল হাতিয়ার হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু যারা এই কাজগুলো করবে তারাই যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয় তাহলে কোনোদিনই আইনের শাসন নিশ্চিত করা যাবে না। আর তাই আগে গোটা পুলিশ প্রশাসনের সংস্কার প্রয়োজন এবং রাজনীতির প্রভাব মুক্ত রাখা প্রয়োজন।

একজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যেন মর্যাদার সঙ্গে তার এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে পারে সেজন্য রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে, তার যেন কোনো চাহিদা না থাকে। অর্থাৎ তাকে সমাজে স্বচ্ছলভাবে চলার জন্য পর্যাপ্ত বেতন এবং সুবিধার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সে যেন তার ইউনিফর্ম পরতে গর্ববোধ করে এবং মর্যাদার সঙ্গে জনগণের সেবক হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে।

আমি বিশ্বাস করি, পুলিশসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশকে ভালোবাসেন এবং একটি স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।

পুলিশ সদস্যদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

(১) চলমান ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ হত্যাসহ সব পুলিশি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।

(২) নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান, আজীবন পেনশন-রেশন প্রাপ্তি এবং পরিবারের একজন সদস্যের সরকারি চাকরি নিশ্চিত করা। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা এবং গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।

(৩) পুলিশের নিয়োগ বিধিমালা, বিশেষত সাব ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট নিয়োগ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অধীনে কনস্টেবল নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

(৪) সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট পদে বিদ্যমান পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা। সেক্ষেত্রে পুলিশ পরিদর্শক পদ থেকে সহকারী পুলিশ কমিশনার পদে ৩০ শতাংশ সরাসরি এবং ৭০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ এবং সেটি যথাসময়ে নিশ্চিত করা। সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট থেকে ইন্সপেক্টর পদে পিএল হওয়ার এক বছরের মধ্যে পদোন্নতি দিতে হবে। এছাড়া কনস্টেবল, নায়েক, এটিএসআই, এএসআই পদোন্নতির ক্ষেত্রে পরীক্ষায় পাসকৃতদের পরবর্তী বছর পুনঃপরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা বাতিল এবং পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে পাসকৃতদের সিনিয়রিটি অনুসরণ করা।

(৫) আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পুলিশের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আট ঘণ্টা করা এবং অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার জন্য ওভারটাইম প্রদানের ব্যবস্থা করা অথবা বছরের দুটি বেসিকের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করা।

(৬) পুলিশের ঝুঁকি ভাতা বৃদ্ধিকরণ, টিএ-ডিএ বিল প্রতিমাসের দশ তারিখের মধ্যে প্রদান এবং প্রযোজ্য সব সেক্টরে সোর্স মানি নিশ্চিত করতে হবে।

(৭) পুলিশ সদস্যদের বাৎসরিক ২০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি বৃদ্ধি করে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ষাট দিন করতে হবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে ছুটি ছাড়া সম্ভব না হলে অভোগকৃত ছুটির বিনিময়ে আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে হবে।

(৮) পুলিশ বাহিনীর প্রচলিত পুলিশ আইন এবং পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল সংস্কার করে যুগোপযোগী এবং কার্যকরী করতে হবে। যার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা এবং অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার নিশ্চিত হয়।

(৯) পুলিশ বাহিনীকে যেন কোনও দলীয় সরকার তার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।

(১০) পুলিশের সব থানা, ফাঁড়ি এবং ট্রাফিক বক্স আধুনিকায়ন করতে হবে এবং অধস্তন অফিসারদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

(১১) নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং সব ব্যারাকে বিদ্যমান আবাসনসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে ব্যারাকগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • সোশ্যাল মিডিয়া এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
২৬ দিনে ২৪৩ অস্ত্র উদ্ধারসহ গ্রেপ্তার ১১০
খুলনায় ট্রাকচাপায় নারী পুলিশ সদস্য নিহত
আমির হোসেন আমু আছেন সন্দেহে ভবন ঘেরাও, অতঃপর...
কেউ উপদেষ্টাদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করলে পুলিশে দিন: আসিফ নজরুল