সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের আজকের মধ্যে অপসারণের আহ্বান
দেশের সব মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সকল কমিশনের প্রধানকে আজকের মধ্যে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি এই দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তার পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘দেশের সকল মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সকল কমিশনের প্রধানকে আজকের মধ্যে অপসারণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, আইন কমিশন সহ সকল কমিশনে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বসে আছে। আজকের মধ্যেই সকল ফ্যাসিস্ট আমলাদের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে এবং সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক আমলাদের নিয়োগ দিতে হবে।’
মন্তব্য করুন
‘দুঃখিত ও লজ্জিত’ সোলায়মান সুখন
খন্দকার মোহাম্মদ সোলায়মান যিনি সোলায়মান সুখন নামেই পরিচিত একজন জনপ্রিয় প্রেরণাদায়ী বক্তা এবং উদ্যোক্তা। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অনেকটাই নিশ্চুপ ছিলেন তিনি। তার এই নীরবতার কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচিত ও বুলিংয়ের হচ্ছেন তিনি। তাই এবার নিজের ফেসবুকে পেইজে দুঃখ প্রকাশ করে মেসেজের অটো রিপ্লাই সেট করে রেখেছেন তিনি।
সোলায়মান সুখনের ফেসবুকে পেজে দেখা যায় কেই তাকে মেসেজ দিলে তিনি তার রিপ্লাইয়ে লিখছেন, ‘গালি প্রাপ্য সেটা মেনে নিয়ে শুধু একটা কথাই বলবো গত ১১ জুলাই মেধার পক্ষে ভিডিও পোস্ট করার পর থেকে অনেক হুমকি আর চাপ মোকাবেলা করে নিজেকে এবং পরিবারকে সেফ করে রাখতে হয়েছে। আমি আমার জায়গা থেকে অনিয়ম নিয়ে বছরের পর বছর কথা বলার চেষ্টা করেছি তবে ছাত্ররা যে বলিন্ঠিতার সাথে পরিবর্তন শুরু করতে পেরেছে আমরা আগের প্রজন্ম সেটা পারি নি।’
একই সঙ্গে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে দুঃখ ও লজ্জা প্রকাশ করেন।
সোলায়মান সুখন ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন নৌবাহিনীর সাথে। পরে ঢাবি থেকে আইবিএ করে বাংলাদেশের মাল্টিন্যাশনাল জবে জয়েন করেন। বর্তমানে ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন নগদের চিফ পাবলিক রিলেশন বিভাগের পরিচালক। ফেসবুকে ৫ মিলিয়ন ফলোয়ারের মালিক সুখন করেছেন প্রায় ৬০০ এর বেশি পাবলিক সেশন।
দোকান ভাঙচুরের সময় সেনাবাহিনীর হাতে ধরা, সেই দুজনের পরিচয় মিলেছে
মোটরসাইকেলে করে একটি দোকানের সামনে আসেন দুই ব্যক্তি। এদের একজনের হাতে কুড়াল, আরেকজনের হাতে রামদা ছিল। এগুলো দিয়ে তারা দোকানের সাটারে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যায় একটি গাড়িতে করে আসেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এসেই দুই সেনাসদস্য ওই দুই ব্যক্তির ওপর অস্ত্র তাক করলে তারা হাঁটু গেড়ে কানে ধরে আত্মসমর্পণ। এরপর তাদের আটক করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী। গত বুধবার (১৪ আগস্ট) এ ঘটনা ঘটে। এরপর শনিবার (১৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দোকান ভাঙচুরের সময় তাদের সিনেম্যাটিক কায়দায় আত্মসমর্পণ করিয়ে আটক করে সেনাবাহিনী।
জানা গেছে, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর একপক্ষের কর্মীরা অপর পক্ষের দোকান ভাঙচুরের সময় ঘটনাটি ঘটে। আটককৃতরা হলেন বোয়ালমারীর যুবদল কর্মী মো. টুটুল হোসেন (২৮) ও দুখু মিয়া (৩০)। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকরা এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন শামসুদ্দিন মিয়া। এর প্রতিবাদে ওইদিনই বিকেলে বোয়ালমারী পৌরসভায় অবস্থিত খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক উপজেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় সাহার কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই ছেলেসহ আহত হন সঞ্জয় সাহা। এ ঘটনায় তিনি বোয়ালমারী উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মো. আজিজুল শেখকে প্রধান করে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ওই দুই ব্যক্তিকে সেনাবাহিনী আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে সঞ্জয় সাহার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন আচরণ, ক্ষমা চাইলেন সেই তরুণী
সম্প্রতি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ফারজানা সিথি নামের এক তরুণী। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। নেটিজেনরা ওই তরুণীকে দোষারোপ করে ফেসবুকে কমেন্ট করছেন, অনেকে তার ভিডিও বা ছবি পোস্ট করে নিন্দা জানাচ্ছেন। অপরদিকে তরুণীর অশোভন আচরণ ও বাগবিতণ্ডার সময় শান্ত থাকায় সেনা কর্মকর্তার প্রশংসা করেন অনেকে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছেন ফারজানা সিথি।
রোববার (১৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায় ওই তরুণী বলেন, সবাইকে বলছি আমার গতকালের ব্যবহার নিয়ে খুবই দুঃখিত। এই রকম ব্যবহার আমার কোনোভাবেই করা উচিত হয়নি। আমি বাংলাদেশ আর্মির কাছে খুবই দুঃখিত। আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।
ফারজানা সিথি আরও বলেন, সিচুয়েশন, টাইমিং এবং সেখানে যে কার্যকলাপ হতে যাচ্ছিল তার ব্যাপারে আমি সচেতন ছিলাম না। আবেগে মাথা গরম করে ফেলছিলাম বুঝতে পারিনি।
এদিকে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে সেনা কর্মকর্তার পেশাদারিত্ব এবং ধৈর্যের পরিচয় দেওয়ায় সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের আরও আস্থা, বিশ্বাস, নির্ভরতা ও ভালোবাসা জন্ম দিয়েছে। সেজন্য সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান তার প্রশংসা করেছেন এবং তাকে পুরস্কৃত করেছেন।
কে এই ফারজানা সিথি, জানা গেল অজানা তথ্য
‘আপনারা কি কোটার পুলিশ?’ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করে বিশেষিত হয়েছিলেন অগ্নিকন্যা, কুইন, বাঘিনী ও আয়রন লেডি হিসেবে। তবে সম্প্রতি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে ফের আলোচনায় এসেছেন ফারজানা সিথি নামের এক তরুণী।
গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) শাহবাগ থানায় সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যব্যয় করে ভাইরাল হন ফারজানা সিথি। এরপর প্রশ্নে উঠে কে এই ফারজানা সিথি?
ফেসবুক প্রোফাইল থেকে জানা গেছে, ফারজানা সিথির বাড়ি যশোর। তিনি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দ্য হাংগার প্রজেক্ট, বাংলাদেশ’এর বরগুণা সদরের সাধারণ সম্পাদক। তবে ফেসবুক প্রোফাইল থেকে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। যদিও তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। তবে তিনি গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্স’এর ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফারজানা সিথিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে প্রচার করা হলেও, ১৫৮ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক তালিকার নাম পাওয়া যায়নি।
এদিকে সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে ফারজানার উগ্র আচরণের ভিডিও রীতিমত ট্রল ও মিম ম্যাটেরিয়ালে পরিণত হয়েছে। তার এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের সমালোচনা করতে দেখা যায় নেটিজেনদের। এরই মধ্যে সিথির ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও শুরু হয়ে গেছে সমালোচনা। তার পোশাক, চলাফেরা ও জীবন-যাপন নিয়ে করা হচ্ছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তার বিভিন্ন সময়ের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিভিন্ন নির্মাতা ও ফটোগ্রাফি হাউজের বিভিন্ন ফটোশুট ও ভিডিওগ্রাফিতে অংশ নিতে দেখা যায় ফারজানা সিথিকে।
তবে এক ভিডিও বার্তায় সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ফারজানা সিথি। তিনি বলেন, ‘সবাইকে বলছি আমার ওই দিনের ব্যবহার নিয়ে খুবই দুঃখিত। এই রকম ব্যবহার আমার কোনোভাবেই করা উচিত হয়নি। আমি বাংলাদেশ আর্মির কাছে খুবই দুঃখিত। কিন্তু সিচ্যুয়েশন, টাইমিং এবং সেখানে যে কার্যকলাপ হতে যাচ্ছিল তার ব্যাপারে আমি সচেতন ছিলাম না। আবেগে মাথা গরম করে ফেলেছিলাম বুঝতে পারিনি।’
অন্যদিকে, উসকানি ও অপমানের মুখেও পেশাদারিত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশংসায় ভাসছেন সেই সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আশিক। সেনাবাহিনীর প্রধানের কাছ থেকে পেলেন সম্মানসূচক ‘সেনা গৌরব পদক’।
ছাত্র-জনতার ওপর কারা গুলি চালিয়েছে জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর কারা গুলি চালিয়েছে জানায়েছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক মজনু।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে এ নিয়ে পোস্ট দেন তিনি। সেই পোস্ট নিয়েই শুরু হয় তোলপাড়।
এসআই মজনুর ফেসবুক আইডি নাম ‘মিসির আলী’। তিনি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, গত ১৯ জুলাই রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি ও এসপি নিজেই রাইডকার দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালান। অথচ এখন পর্যন্ত দায়ের করা পাঁচ মামলার কোনোটিতেই তাদের নাম আসেনি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এসআই মজনু।
তিনি সাংবাদিক ও আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে লেখেন, প্রতিদিন আদালতে যত মামলা হচ্ছে, তার ঘটনাস্থল সিটি বাজারের সামনে, যেখানে রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপার, বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি রংপুরের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের রায়ট টিম গুলি চালায়। অথচ যারা ঘটনাস্থলে ছিল না, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।
এসআই মজনু আরও দাবি করেন, এত এত ফুটেজ আর মিডিয়া কাভারেজ থাকা সত্বেও যা করা হচ্ছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বৈষম্যবিরোধী মনোভাবাপন্ন অধস্তনদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি মানবিকভাবে প্রকাশ ও প্রচার করার অনুরোধ জানান তিনি।
পোস্টে আরও লেখা হয়- ঈশ্বর ক্ষমতাশালী। এসপি, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার এরাও প্রভাবশালী ও প্রতাপশালী। এ কারণেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে গুলি করেও মামলা থেকে অব্যাহতি পান তারা।
রংপুর জেলা ও মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেলেও পোস্টটি শেয়ার করেন এসআই মজনু।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজারের সামনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন পলিটেকনিক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাহির। এরপর তাহির হত্যা মামলায় আসামি করা হয় এসআই মজনুকে। এখন পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় পাঁচটি হত্যা মামলা হয়েছে। এসব মামলার কোনোটিতেই নেই রংপুর জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় প্রশাসনের কেউ।
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় যে আহ্বান আজহারীর
ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের নয়টি জেলা। নদীগুলোর পানির বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করতে থাকায় ডুবছে একের পর এক জনপদ। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) নিজের ভেরিয়ায়েড ফেসবুক পেইজে এই আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকায় একটানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভারতের উজানের পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লাসহ দেশের বেশ কিছু অঞ্চল। বন্যাকবলিত এসব এলাকায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি দেশের আপামর তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান রইলো।’
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিন। মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করুন। আসুন বরাবরের মতো আমরা সবাই মিলে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াই।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রীতির এই বাংলাদেশে বিপদে-আপদে কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিস্টান সেটা যে আমরা দেখিনা; তা আরো একবার জানান দেওয়ার সময় এটা।’
সর্বশেষ জনপ্রিয় এই ইসলামি আলোচক দুর্গতের প্রতি আন্তরিকতা দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সকলের নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্তরিক সহযোগিতা ও দুআ অব্যাহত রাখুন। বানভাসি মানুষদের উপর রহম করো, হে রহমান!’
বন্যা ইস্যুতে ভাইরাল শিশুর ছবি সম্পর্কে যা জানা গেল
টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানির কারণে দেশের নয়টি জেলা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। সময় যতই গড়াচ্ছে ততই বন্যাকবলিত মানুষের দুর্দশার চিত্র সামনে আসছে। এমনই একটি ছবি নেটিজেনদের মনে নাড়া দিয়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রকাশে একটি শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও ওই ছবি শেয়ার করে বিভিন্ন বার্তা দিচ্ছেন।
ছবিটি নিয়ে মতামত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির। তিনি তার ফেসবুকে ছবিটি সম্পর্কে যা জানিয়েছেন তা হুবহু নিচে দেওয়া হলো।
ছবিটি নিয়ে অনেকে জানতে চেয়েছেন- সত্যিকারের ছবি নাকি এআই জেনারেটেড।
প্রথমত, কোনো ইমেজ আএই জেনারেটেড কিনা তা এখনও কোন টুল ব্যবহার করে শতভাগ নিশ্চয়তার সাথে বলার সুযোগ নেই। টুলগুলোর দেয়া ফলাফল করোবোরেটিং এভিডেন্স হিসেবে রাখা যায় শুধু।
আমি ৩টি এআই ডিটেক্টর টুলে ছবিটি ট্রাই করে ৩ ধরনের ফলাফল পেয়েছি। একটিতে দেখিয়েছে ছবিটি ৯১ শতাংশ এআই জেনারেটেড। অন্যটিতে ৪০ শতাংশ এবং একটিতে দেখাচ্ছে ‘লাইকলি হিউম্যান মেইড’। ছবিটির অরিজিনাল ভার্সন পেলে হয়তো এই ভিন্নতর ফলাফল হতো না। কোনো এআই জেনেরেটেড ছবির অরিজিনাল ভার্সন ডিটেক্টর টুলে চেক করলে মোটামুটি সব ক্ষেত্রেই কনক্লুসিভ ফলাফল পাওয়া যায়। (কোন ছবি একাধিক টুলের প্রতিটিতে ৭০ শতাংশের বেশি আইএই জেনারেটেড দেখালে আমরা সেটাকে কনক্লুসিভ ফলাফল হিসেবে গ্রহণ করে থাকি)।
কিন্তু এই ছবির ক্ষেত্রে, বুঝাই যাচ্ছে শুধু টুল দিয়ে এআই জেনারেটেড কিনা তা নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এখন ভিন্ন কিছু এঙ্গেল থেকে এটি বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
ছবিটি গতকাল থেকে অনলাইনে ছড়িয়েছে। নানানভাবে সার্চ করেও গতকালের আগে এবং সামাজিক মাধ্যমগুলোর বাইরে কোথাও এটি খুঁজে পাওয়া যায় না। এবং দেখেই বুঝা যাচ্ছে, এটি পেশাদার কোন ফটোগ্রাফারের ক্যামেরার ছবি।
যদি ধরে নেওয়া হয় যে, এটি ফেনী নোয়াখালী অঞ্চলের চলমান বন্যার ছবি, তাহলে এটি অনেক মূল্যবান একটি ছবি হওয়ার কথা। কোন পেশাদার ফটোগ্রাফার এই ছবি তুললে অবশ্যই ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় এটি তিনি যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন সেটিতে প্রকাশ করবেন। তিনি ফ্রিলান্সার হলে অনেক দামে ছবিটি কোন সংবাদমাধ্যমের কাছে বিক্রি করবেন। অর্থাত, ছবিটি যেভাবে শুধু ফেসবুকে পাওয়া যাচ্ছে তেমনটি হওয়া কথা না। প্রথমে এটি কোন সংবাদমাধ্যম বা এরকম প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ক্রেডিট ও ক্যাপশন সহ প্রকাশিত হয়ে পরে ফেসবুকে আসার কথা। কিন্তু এই ছবির ক্ষেত্রে তা হয়নি।
যদি কোন পেশাদার ফটোগ্রাফার এটি তার সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে থাকতেন তাহলে এমন একটি হৃদয়ছোঁয়া ছবিতে অবশ্যই তার নাম বা প্রতিষ্ঠানের নাম ওয়াটারমার্ক করে দেয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। ছবিটির কোন ভার্সনে এমন কিছু দেখা যায় না।
শিশুটি ক্যামেরার দিকে যেভাবে তাকাচ্ছে তাতে বুঝা যাচ্ছে ফটোগ্রাফার খুবই কাছে ছিলেন এবং তিনি এই অবস্থায় একাধিক ছবি/ভিডিও তোলার সুযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু অনলাইনে এই একটি সূত্রহীন ছবি ছাড়া এই ঘটনার আর কোনো এঙ্গেলের ছবি বা ভিডিও নেই।
ছবিতে যেভাবে একটি উন্মুক্ত পানিভর্তি এলাকায় ২/৩ বছরের বাচ্চাকে অভিভাবক ছাড়া দেখা যাচ্ছে সেটি অসম্ভব না হলেও খুব স্বাভাবিক নয়। বাচ্চাটির ঠোঁটের গঠনও কিছুটা অস্বাভাবিক। একই সাথে তার চেহারায় আতঙ্কের কারণে চোখ ও কপালের একপাশে যে ভাঁজ (প্রকৃত ভাঁজ পড়বে কপালের ঠিক মাঝখান বরাবর) পড়েছে সেটিও স্বাভাবিক এক্সপ্রেশন মনে হচ্ছে না।
সবমিলিয়ে বলা যায়, ছবিটি সত্য ঘটনার না হয়ে তৈরি করা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।