রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের খবর সত্য নয়
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, ‘রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পদত্যাগ করেছেন, এমন খবর মিথ্যা ও গুজব।’
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল লেখেন, ‘আমার নাম ব্যবহার করে কিছু অপপ্রচার হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি রিজাইন (পদত্যাগ) করেছেন বলে যে খবর আমার ছবি ব্যবহার করে প্রচার হচ্ছে, তা ভুয়া।’
এর আগে, বুধবার (১৪ আগস্ট) আসিফ নজরুল জানিয়েছিলেন, বিচার বিভাগের সব কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির হিসাব আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে ছেলের আবেগঘন পোস্ট
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার ছেলে মাসুদ সাঈদী।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে পারিবারিক কবরস্থানের একটি ছবি সংযুক্ত করে তিনি ওই স্ট্যাটাস দেন।
পোস্টে মাসুদ সাঈদী লেখেন, ‘বাবা ও বাবা! তোমায় ভেবে ভেবে কষ্টে ফেটে যায় বুক/অপলক চেয়ে চেয়ে লোনা জলে ভরে যায় চোখ/বিরহের কষ্ট বড় কষ্ট, এত দিন পরে বুঝেছি আমি/তুমি ছাড়া এ হৃদয় শূন্য মরুভূমি।’
এর আগেও মাসুদ সাঈদী বাবাকে নিয়ে আবেগঘন কথা বলেছেন। জামায়াতে ইসলামীর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র কায়েম করে এই জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর খুনের বদলা নেবেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত ১৭ আগস্ট আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পিরোজপুরের আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত ‘আল্লামা সাঈদীর জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে ঢলে পড়া মেয়েটির সঙ্গে যা হয়েছে
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, একটি মেয়ে পুলিশের তাড়া খেয়ে হঠাৎ ঢলে রাস্তার ওপর পড়ে গেছেন। সঙ্গে থাকা অন্যরা মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। এ সময় পুলিশ সেখানে যায়।
ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ বলছেন তিনি মারা গেছেন। কেউ বলছেন সেদিন থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছে না। তবে এসব খবর গুজব বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্ট-চেকিং এডিটর কদরুদ্দীন শিশির তার ফেসবুকে জানিয়েছেন, ভিডিওটি বগুড়ার সাতমাথা মোড় এলাকার। তবে ঘটনাটি কত তারিখের, সেটি উল্লেখ নেই।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনাটি বগুড়ার সাতমাথা বীরশ্রেষ্ঠ স্কয়ার সংলগ্ন ট্রাফিক আইল্যান্ড এলাকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালের ভিডিও এটি। বগুড়ায় এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজনকে ভিডিওটি দেখানো হলে তারা স্থানটির বিষয়ে নিশ্চিত করেন। ভিডিওটি ঘটনাস্থলের পাশে এসআর ট্রাভেলসের কাউন্টারের সামনে থেকে ধারণ করছেন অনেকে।
এসআর ট্রাভেলস কাউন্টারের সহকারী ব্যবস্থাপক সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, ‘ওই সময় বাস চলাচল বন্ধ ছিল। কাউন্টারও বন্ধ ছিল। তাই ভিডিওর ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।’
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুদ্রণ ও প্রকাশনা বিভাগের শিক্ষার্থী জাকি তাজওয়ার বলেন, ‘গত ১৮ জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ যে মারমুখী ছিল, ভিডিওতে সেই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।’
গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে আরও কিছু ভিডিও সংগ্রহ করে জানা গেছে, ঘটনাটি গত ১৮ জুলাইয়ের। এতে দেখা যায়, ভিডিওতে হেলমেট ও পুলিশের ভেস্ট পরা ব্যক্তিরা বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং ৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) বগুড়ার সদস্য। গুলির শব্দ ও পরপরই মেয়েটি লুটিয়ে পড়ায় ডিবির কয়েকজন সদস্য সেখানে যান। এ সময় স্কুলের পোশাক পরা একজন আন্দোলকারী তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে পুলিশের একাধিক সদস্য লাঠি হাতে তাকে তাড়া করেন।
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতা নিয়তি সরকার বলেন, ‘ভিডিওতে যে মেয়েকে দেখা যাচ্ছে, ওই মেয়ে ১৮ জুলাই বগুড়ায় বিক্ষোভে অংশ নেন। মেয়েটি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মেয়েটি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আমি নিজেও খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার দিই। পরে জানতে পারি, মেয়েটির মারা যাওয়ার বিষয়টি গুজব।’
এ বিষয়ে ডিবি বগুড়ার পরিদর্শক মুস্তাফিজ হাসান বলেন, ‘গত ১৮ জুলাই সাতমাথা এলাকায় তিনি ছাড়াও ডিবি, সদর থানা ও এপিবিএনের সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন। ভিডিওটিতে যে মেয়েটিকে দেখা যাচ্ছে, ওই মেয়ে ওই সময়ে গুলিবিদ্ধ হননি। সম্ভবত তিনি কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় অসুস্থ বোধ করছিলেন। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পানি পান করায়। মিনিট পাঁচেক পর তিনি নিজে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে অন্য কোথাও মেয়েটি বুলেটবিদ্ধ হয়েছেন কি না, তা তিনি জানেন না।’
ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রাতুল বলেন, ‘ওই মেয়ের নুসরাত জাহান (জেরিন)। তার বাসা বগুড়ার উপশহর এলাকায়। তিনি রাজধানীর বেসরকারি শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির সমাজবিজ্ঞান ও নৃতত্ত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন।’
রোববার নুসরাতের বাসায় গিয়ে ভিডিওটি দেখানোর পর নুসরাত জাহান বলেন, ‘১৮ জুলাই মিছিলে যোগ দেওয়ার পর তিনি সাতমাথায় পুলিশের হামলার শিকার হন। চারটি রাবার বুলেট বিদ্ধ হয় তার শরীরে। প্রথমে তাকে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে এবং পরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের ভয়ে তিনি ওই সন্ধ্যায় হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন।’
তিনি বলেন, ‘রংপুরে আবু সাঈদ হত্যার পর আর ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। মা–বাবার উদ্দেশে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গত ১৮ জুলাই সকাল নয়টার দিকে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হই। দত্তবাড়ি থেকে সাতমাথার দিকে ছাত্রদের বিশাল মিছিল বের হয়। সদর থানার সামনে পুলিশ মিছিলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। সাতমাথায় পৌঁছানোর আগে কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। মিছিল নিয়ে আমরা সাতমাথায় পৌঁছামাত্র পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। মিছিল থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে প্রথমে জিলা স্কুলে আশ্রয় নিই। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাতমাথায় যেখানে ভিডিওটা করা, সেখানে পৌঁছালে একজন পুলিশ কর্মকর্তা খুব বাজে ভাষায় গালমন্দ করেন। পুলিশ ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে তেড়ে আসে। এ সময় একটি রাবার বুলেট ঊরুতে লাগলে ব্যথায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর সুস্থ বোধ করলে আবারও আন্দোলনে যোগ দিই। এ সময় পর পর কয়েকটি রাবার বুলেট পায়ে এসে লাগলে আহত হই। প্রথমে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে এবং পরে সেখান থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন আসেন।’
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নুসরাতের ভর্তির কাগজপত্রে ‘পুলিশ অ্যাসাল্ট’ ও ‘রাবার বুলেট ইনজুরি’ লেখা আছে।
নুসরাত জাহান বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পৌঁছার পর রাতে তিনি জানতে পারেন যে তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক বন্ধু তাকে কল করেন। তিনি তাদের নিজের বেঁচে থাকার কথা জানান।’
বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হাসান বলেন, ‘ভিডিওটি ইতোমধ্যে দেখেছি। ভিডিওটি ১৮ জুলাই বগুড়ার সাতমাথায় করা, সেটা সত্যি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন, ওই দিন পুলিশের গুলিতে কেউ নিহত হননি। ওই মেয়েকে পুলিশ কোনো গুলি করেনি। কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে মেয়েটি অসুস্থ হতে পারেন। মেয়েটি এখন সুস্থ আছেন বলে জেনেছি।’
নারীদের পেটাতে দেখে জনতার উল্লাস, ভিডিও সম্পর্কে যে তথ্য জানা গেল
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের পেটানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার ফুটপাতে এক পুরুষ সবুজ রঙের একটি রড নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একের পর এক নারীকে তাড়া করছেন আর পেটাচ্ছেন। সেখানে তিনি এই নারীদের ‘যৌনকর্মী’ ‘শিশু পাচারকারী’ ‘ছিনতাইকারী’ বলে উল্লেখ করেছেন।
ভিডিওতে একের পর এক নারীকে তাড়া করে পেটানোর পর ওই ব্যক্তি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলছেন, ‘আপনারা কাপুরুষ, আপনারা যদি প্রতিহত না করতে পারেন, তাইলে আপনারা কাপুরুষ। এখানে আমরা হিরো হইতে আসি নাই, এরা খুব জ্বালায়, আমরা ফ্যামিলি নিয়ে হাঁটতে পারি না। আমার বাসা এখানে। এই এলাকায় ছিনতাইকারীর অভাব নাই। আপনারা প্লিজ এই চোর-ছিনতাইকারী, রাস্তার মহিলাদেরকে প্রতিহত করুন, প্লিজ।’
এ সময় ভিডিও-অডিওতে শোনা যায়, উপস্থিত জনতা উল্লাস করে তাকে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানাচ্ছেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যৌনকর্মী, শিশু পাচারকারী’ অভিযোগ দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা নারীদেরকে লাঠি দিয়ে (সম্ভবত স্টিলের পাইপ) সাপের মতো পেটাচ্ছে। ওই নারীরা দৌড়ে জান বাঁচাতে পারছেন না। রাস্তায় পড়ে গেছেন এক নারী। এরপরও পেটাচ্ছে তাকে। তিনি পায়ে ধরে মাফ চাচ্ছেন। ঢাকার শ্যামলীতে এমন ঘটনা অন্তত দুই দিন (তার ফেসবুকে অন্তত দুইটি ভিডিও পোস্ট করেছে) ঘটিয়েছে এবং সেসবের ভিডিও রেকর্ড করে ফেসবুকে পোস্ট করেছে।’
ভিডিওটির বিষভয়ে মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, যাদের এভাবে পেটানো হলো, এটা স্পষ্টতই মানবাধিকার লঙ্ঘন। যাদের পেটানো হচ্ছে, সেই নারীরা যদি অপরাধীও হয়, তাও এভাবে আইন হাতে তুলে নিয়ে, তাদের কোনোভাবে আঘাত করার অধিকার কারোর থাকতে পারে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্যদিকে যাওয়ার শঙ্কাও বোধ করছেন তারা।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘দেশে সরকার আছে, আইন আছে। আইন হাতে তুলে নেওয়া অপরাধ। যে বা যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তারা অন্যায় করেছেন। যাদের শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
বাসের হেলপারকে মারধর, মুখ খুললেন সেই কথিত ‘সহসমন্বয়ক’
সম্প্রতি রাজধানীতে একটি লোকাল বাসের হেলপারকে মারধর করার ১ মিনিট ৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে হেলপারকে চড়-থাপ্পড় মারতে মারতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘তুই চিনস আমারে, চিনস? আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহসমন্বয়ক।’
এ ঘটনায় তোপের মুখে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ওই শিক্ষার্থী তৌসিফ শাকিল। পরে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই হেলপারের কাছে ক্ষমা চান তিনি।
এক ভিডিওতে তৌসিফ শাকিল বলেন, ‘আমি রাগের মাথায় সব কইরা ফেলাইছি। আমি কাল রাত হতে ঘুমাতে পারছি না, খাইতে পারছি না। আমার শরীর কাঁপছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে থ্রেট পাইতেছি। আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। আমি আপনাদের সঙ্গে রাফ ব্যবহার করে ফেলছি। আমি ভয়ে একটা পরিচয় দিয়ে ফেলছি। আমারে মাফ করে দেন।’
এরপর ওই শিক্ষার্থীকে ক্ষমা করে বাসের হেলপার বলেন, ‘তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন তাই মাফ করে দিয়েছি। আমরা পড়ালেখা করতে পারিনি। তিনি যেন পড়ালেখা করে বড় কিছু করতে পারেন, তাই মাফ করে দিয়েছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়করা বলছেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তবে শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহসমন্বক নামে কখনোই কোনো পদ ছিল না। গত ২৯ জুলাই ২৭ সদস্যবিশিষ্ট যে সমন্বয়ক পরিষদ গঠন করা হয় তাতেও নাম নেই এই শাকিলের।
বিডিআর বিদ্রোহের দিন কী ঘটেছিল, জানালেন সাবেক সেনাপ্রধান মইন
বিডিআর বিদ্রোহ দেশের ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস হত্যাযজ্ঞের দিন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহ করে বসেন তৎকালীন বিডিআর সদস্যরা। নরকে পরিণত হয় রাজধানীর বিডিআর সদর দপ্তর। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয় এ বিদ্রোহে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ড নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) মইন ইউ আহমেদ তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওর শুরুতেই ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের নিহতদের মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থ কামনা এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করে বলেন, সরকার-ছাত্রজনতা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ড নিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনার আমি যখন তদন্তের আদেশ দেই, তখন আমাকে বলা হয় যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী? এই তদন্ত করতে সরকারের কাছ থেকে যে সাহায্য প্রয়োজন তা আমরা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লেফটনেন্ট জেনারেল জাহাঙ্গির আলাম চৌধুরী (বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা)। তিনি তার কাজ সঠিভাবে সম্পন্ন করতে পারেননি, কারণ অনেকে জেলে ছিল, অনেককে প্রশ্ন করা সম্ভব হয়নি। আমার কাছে এসে বেশ কয়েকবার তার সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আমি আশা করি, তিনি এখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হয়েছেন। তিনি এই তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িতদের বের করতে সক্ষম হবেন। আমি সরকার গঠনের পর তাকে এই বিষয়ে অনুরোধ করেছি।’
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘সেদিন (২০০৯ সালের) ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে সাড়ে ৭টায় সেনাসদরের প্রতিদিনের মত কাজ শুরু হয়। সকালে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছিল যেখানে সেনাবাহিনীর পরবর্তী বছরের কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সকালে আমি সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় সিজিএস লেফটনেন্ট জেলারেল সিনহা আমার কাছে এসে বলেন, আমাদের কাছে কিছু মর্টার আছে, যা সেনাবাহিনী ব্যবহার করে না। এর গুদামজাত এবং রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের জন্য কঠিন। বিডিআর এগুলো ব্যবহার করে। এগুলো তারা নিয়ে গেলে আমাদের উপকার হবে।’
তিনি বলেন, ‘এরপর আমি বিডিআরের ডিজির জেনারেল শাকিলের সঙ্গে কথা বললে তিনি এগুলো নিতে রাজি হন। আমার বিশ্বাস তিনি তখন পর্যন্ত এই বিদ্রোহ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। এরপর আমি আর সিজিএস মিটিংয়ের জন্য যাই। ৯টায় সেই মিটিং শুরু হয়। আমারা সবাই তখন ব্যস্ত হয়ে পড়ি সেখানে। সাড়ে ৯টায় তার দিকে আমার প্রিন্সিপল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে বলেন, পিলখানায় গণ্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিক-নির্দেশনা প্রয়োজন। কিছুক্ষণ পর আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের ফোন ব্যস্ত পাই।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘সামরিক গোয়েন্দারা তখন আমাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায়। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে আমি তখন সময় বাঁচাতে কারও নির্দেশ ছাড়া আরেকটি ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেই। তারা তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে যার নামকরণ করা হয় অপারেশন রেস্টোর অর্ডার। এ সম্পর্কে পিএসও এফডি জেনারেল মবিনকে অবহিত করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘৯টা ৪৭ মিনিটে ডিজি বিডিআরকে ফোনে পাওয়া যায়। তিনি আমাকে জানান, দরবার চলাকালীন দুইজন সশস্ত্র সৈনিক প্রবেশ করে একজন আমার পিছনে দাঁড়ায়। এরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে থাকা সৈনিকরা দরবার হল থেকে বের হয়ে যায়। এগুলো সবই মনে হয় প্ল্যান করা এবং প্ল্যান অনুযায়ী সব চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি সেক্টর কমান্ডার এবং ব্যাটিলিয়ান কমান্ডারদেরকে পাঠিয়েছি তাদের ফেরত আনার জন্য। তখন আমি তাকে অপারেশনের কথা জানাই।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘৯টা ৫৪ মিনিটে আমাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে সক্ষম হই। এর মধ্যেই তিনি বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গেছিলেন। এসময় আমি তাকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে এই ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি সময় জানিয়ে ব্রিগেডকে পিলাখানায় যাওয়ার জন্য তার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দেন। এক্ষেত্রে অনেক সময় লাগলেও ৪৬ ব্রিগেড ১ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রা শুরু করে। ব্রিগেড কমান্ডারের নেতৃত্বে ১০ জন অফিসার এবং ৬৫৫ জন অফিসার যাত্রা শুরু করেন।’
তিনি বলেন, এদিকে বিদ্রোহীরা বিডিআর গেটগুলোর সামনে আক্রমণ প্রতিহত করতে রকেট লাঞ্চার, মর্টারসহ অন্যান্য অস্ত্র মোতায়েন করে। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়িটি মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ করে রকেট হামলা চালায়। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের ধারণা অনুযায়ী সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই ডিজি, ডিডিজি, কর্নেল আনিস, কর্নেল কায়সারসহ অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আমাদের টিম পৌঁছায় ১১টার পরে।
ঘটনার সময়ে গণমাধ্যমে চলা লাইভ কাভারেজ বিডিআর বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে বলে সমালোচনা করেন তিনি।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘ক্যাপ্টেন শফিক তার নেতৃত্বে ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে পিলখানায় পৌঁছান ১০টার আগেই। এসময় তিনি তার ঊর্ধতন কর্মকর্তার কাছে পিলখানায় প্রবেশের অনুমতি চাইলেও তিনি তা পাননি। তিনি অনুমতি পেলে হয়ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সুবিধা হত এবং এত ক্ষয়ক্ষতি হত না।’
তিনি বলেন, ‘১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি জানায়, সরকার রাজনৈতিকভাবে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, কোন আলোচনার আগে সেনাবাহিনীকে এই এলাকা থেকে চলে যেতে হবে। তাদের সঙ্গে সমঝোতা না হলে তখন সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। বেলা ১২টায় তিনি আমাকে ফোন করে জরুরিভিত্তিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যমুনায় দেখা করতে বলেন। বেলা ১টার দিকে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং হুইপ মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যমুনায় যাবারও ঘণ্টাখানেক পর বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে আসেন। অর্থ্যাৎ তাদেরকে আমার পরে ফোন করে আসতে বলা হয়েছে। অনেকক্ষণ পর তারা সেখানে আসলে আমাদের জানানো হয়, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং হুইপ মির্জা আজম বিদ্রোহীদের একটি দল নিয়ে যমুনাতে আসছে এবং তারা সাধারণ ক্ষমা চায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে আমরা যেন তাদের বলি। তখন আমি তাকে বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমপর্ণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। ১৪ জন বিদ্রোহী ৩টা ৪৮ মিনিটে ডিএডি তৌহিদের নেতৃত্বে যমুনাতে আসেন। তাদের একটি বড় রুমে রাখা হয়। আমি তখন আমার এডিসি জুনায়েদকে বিদ্রোহীদের নেতাকে নিয়ে আসতে বলি। ডিএডি তৌহিদ যখন আসেন তখন আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সকাল ৯টায় বিদ্রোহীরা আমাকে একটি রুমে তালা মেরে রাখে। মাত্রই তালা খুলে আমাকে নিয়ে আসা হয়। আমি কিছুই জানি না।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। তখন আমি তাকে বলি, আপনি জানানে না, এখানে বাকি যারা আছেন তারা তো জানেন। তাদের গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন এবং আমার জানান।’
ভিডিওতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন মইন ইউ আহমেদ। এসময় বিডিয়ার বিদ্রোহ নিয়ে তার লেখা বই খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
ফেসবুক পোস্টে যে বার্তা দিলেন সারজিস
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সফর মুন্সীগঞ্জ জেলা দিয়ে শুরু হবে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এ তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘দেখা হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ।’
রোববার থেকে শুরু হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সফর। যেখানে আমাদের একটি সমন্বয়ক টিম প্রত্যেকটি জেলার অভ্যুত্থান ঘটানো ছাত্র-জনতার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করবে।’
পোস্টে তিনি জানান, ঢাকা বিভাগীয় সফরের প্রথম জেলা হিসেবে রোববার মুন্সীগঞ্জে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। জেলার সরকারি হরগঙ্গা কলেজ মাঠে বিকেল ৩টায় শুরু হবে এ সভা।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে পেটানো কে এই যুবক
বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হারুন অর রশিদকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফারুক মোল্লার ছেলে শাওন মোল্লার বিরুদ্ধে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মারধরের ঘটনাটি ঘটে।
ভাইরাল ৩ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশিদকে চড়-থাপ্পড় মারছেন শাওন মোল্লা। এ সময় এক পথচারী শাওন মোল্লাকে বাধা দিলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন তিনি। এরপর সদর থানার পুলিশ সদস্য আলমগীর হোসেন এসে শাওন মোল্লাকে সরিয়ে দেন।
ভিডিওতে আবদুর রশিদকে বলতে শোনা যায়, আমি কখনো আওয়ামী লীগের প্রোগ্রামে ছিলাম না। কোনো দুর্নীতি করিনি। যদিও এ সময় শাওন মোল্লা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, মারধর করা হয়েছে বলে শুনেছি। একজন বয়স্ক মানুষকে মারধরের ঘটনা অপ্রত্যাশিত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব মৃধা বলেন, একজন বৃদ্ধ লোকের সঙ্গে এমনটা না হলে ভালো হত। তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন তার জন্য আইন আছে। বিষয়টি দুঃখজনক।
তবে বরগুনা জেলা বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল রশিদ মিয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফারুক মোল্লাসহ বেশ কয়েকজন নেতার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া, তার সুপারিশে কয়েকজন বিএনপির নেতার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এসব নিয়েও ক্ষিপ্ত ছিলেন শাওন মোল্লা।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে আমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যাই। সেখানে ফারুক মোল্লার ছেলে শাওন মোল্লাসহ আরও অনেক উপস্থিত ছিল। আমাকে শাওন ডেকে বাইরে নিয়ে যায়। এরপর আমাকে নানা ভাষায় গালাগালি করে। সেখানে অনেক লোক ছিল। আমি এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নিব।
বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের বিষয়ে শাওন মোল্লা বলেন, আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনিকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাই। পরে তার সঙ্গে আমার বাগ্বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাকে আমি মারধর করি। এ ছাড়া তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় আমার বাবার নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে পরিচিত।