যেমন বাংলাদেশ চান শায়খ আহমাদুল্লাহ
দেশের সার্বিক বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি দুর্নীতি-রাহাজানিমুক্ত এক বাংলাদেশকে দেখতে চান জনপ্রিয় বক্তা ও ইসলামি ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘যেমন বাংলাদেশ চাই’ শিরোনামের এক পোস্টে তিনি বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন।
জুমার নামাজের পর দেওয়া ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে অনেকেই শায়খ আহমাদুল্লাহর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টটিতে ইসলামি এ আলোচক ৩৫টি বিষয় তুলে ধরেছেন।
পাঠকদের জন্য সেগুলো তুলে ধরা হলো-
- সরকারি অফিস-আদালত ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয় প্রভাব মুক্ত থাকবে।
- সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু মত প্রকাশের নামে কারও আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত করা হবে না।
- ভিন্ন মতের কারণে কেউ গুম, খুন বা হয়রানির শিকার হবে না।
- আয়নাঘরের মতো অভিশপ্ত কোনো নির্যাতন কেন্দ্র থাকবে না।
- সরকারি সেবা পেতে কারও মাধ্যম বা টেলিফোনের প্রয়োজন হবে না।
- আইন ও নীতি প্রণয়নে দেশের মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটবে।
- বিচারকার্যে কেউ অন্যায় হস্তক্ষেপ করবে না এবং সবাই ন্যায়বিচার পাবে।
- বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের সর্বোচ্চ আস্থা তৈরি হবে।
- আইনের শাসন থাকবে।
- জাতীয় শিক্ষানীতি ও পাঠ্যপুস্তকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধের রিফ্লেকশন (প্রতিফলন) হবে।
- শিক্ষার নামে কারও ওপর তার ধর্ম ও বিশ্বাসবিরোধী কিছু চাপিয়ে দেয়া হবে না।
- দেশের মানুষের বিশ্বাস ও চেতনা পরিপন্থী বিষয় এবং পশ্চিমা সংস্কৃতি আমদানি করা হবে না।
- প্রবাসীদের প্রতি হয়রানি বন্ধ হবে এবং দেশের সকল সেবায় তাদের জন্য বিশেষ প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার) থাকবে।
- বেকারত্ব দূরীকরণে তরুণদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ও সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ সুগম হবে।
- বিনোদন ও সংস্কৃতির নামে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা বন্ধ হবে।
- দাড়ি, টুপি, হিজাব ও ইসলামপন্থীদের প্রতি বৈষম্য ও বিমাতাসুলভ আচরণ দূর হবে।
- সংখ্যালঘুরা নিপীড়িত হবে না।
- ইসলামপন্থীদের প্রতি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বৈষম্য দূর হবে।
- ইমাম-খতিবদের হক কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে।
- সকল নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি হবে কেবল মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে।
- দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।
- অধিক মুনাফাখোরী ও মজুতদারী থাকবে না।
- নিরাপদ খাদ্য, পানীয় এবং ওষুধ নিশ্চিত হবে।
- চিকিৎসার মান উন্নত ও আস্থাশীল হবে।
- ছাত্র সংসদ ছাড়া শিক্ষাঙ্গনে লেজুড়বৃত্তিমূলক ছাত্র রাজনীতি থাকবে না।
- দুর্নীতি, অনিয়ম এবং খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণের শাস্তি হবে সবচেয়ে কঠোর।
- বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অপসংস্কৃতি থাকবে না।
- পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে সকল প্রকার চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট দূর হবে।
- ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম কমে যাবে।
- যত্রতত্র বাস স্টপেজ এবং বাস-ট্রাক পার্কিং বন্ধ হবে।
- কৃষক তার শ্রমের ন্যায্য মূল্য পাবে।
- শ্রমিকের প্রতি কোনো অবিচার হবে না।
- সব ধরনের জালিয়াতি ও প্রতারণা বন্ধ হবে।
- গুণ্ডামি ও পেশি শক্তির প্রদর্শনী দেখতে হবে না।
- চাটুকারিতার উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুনে পরিবেশ দূষিত করা হবে না।
মন্তব্য করুন
চিন্ময় গ্রেপ্তার ও আইনজীবী হত্যাকাণ্ড ঘিরে ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে বলে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এক প্রতিবেদনে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে অন্তত আটটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়ানো হয়েছে। এসব ফটোকার্ডে প্রচারিত গুজবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- চিন্ময় স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন, শিশু বলাৎকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ডিবি পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হিসেবে দাবি করে গুজব ছড়ানো হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, ভয়েস অব আমেরিকা এবং আরব নিউজের মতো প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমেও এই বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
রিউমর স্ক্যানার জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরটিভি এবং যমুনা টিভির লোগোযুক্ত দুইটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়। এতে দাবি করা হয়, তিনি ‘স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন’। তবে, গণমাধ্যম দুটির কোনো প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। ফটোকার্ডগুলোও ভুয়া।
ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, মঙ্গলবার সকালে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চ্যানেল২৪ এর লোগোযুক্ত আরেকটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দাবি করা হয়, শিশু বলাৎকার এবং উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু চ্যানেল২৪ এই ধরনের কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে একটি নারী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া যায়, ভিডিওটি ভারতের ‘বাবা বালকনাথ’ নামের এক ধর্মগুরুর এবং ভিডিওটি চিন্ময় কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
অন্যদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণকে নিয়ে আদালতে শুনানি চলাকালে সামাজিক মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে বলা হয়, ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে চট্টগ্রাম আমাদের দেয়া হবে’ এবং ‘আমার কোনো দোষ নেই, আমাকে যা বলতে বলা হয়েছিল, বাধ্য হয়ে তাই বলেছি।’ এই দাবির সঙ্গে ডিবিসি এবং চ্যানেল ২৪-এর লোগোযুক্ত পৃথক ফটোকার্ডও ছড়ানো হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এই ফটোকার্ডগুলোও ভুয়া প্রমাণিত হয়।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে সংঘর্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও প্রাণহানির দাবি ওঠে। বিভিন্ন পোস্টে নিহতদের নিয়ে বিভিন্ন সংখ্যা উল্লেখ করে দাবি করা হয়। তবে, নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ছাড়া এ সংঘর্ষে আর কোনো মৃত্যুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পরিকল্পিত হত্যার শিকার দাবি করে প্রোবীর চন্দ্র পাল নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টের দুটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে। একটি পোস্টে প্রোবীর লিখেছিলেন, ‘সমস্ত সনাতনী এডভোকেটরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আজকেই শুনানি দিতে হবে! নাহলে দায়রা জজ মো: সাইফুল ইসলামকে কোর্ট থেকে বের হতে দেবে না।’ তবে, এখানে উল্লিখিত জজ সাইফুল ইসলাম এবং নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ভিন্ন ব্যক্তি। পোস্টে উল্লিখিত সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ, আর নিহত সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)।
ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানায়, ভারতের অসংখ্য এক্স ব্যবহারকারী এবং কিছু গণমাধ্যমে গুজব ছড়ায় যে, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ ছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী, এবং সেই দায়িত্ব পালনের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর বরাত দিয়ে এই দাবি উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
তবে, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হলেন সুভাশিস শর্মা। এ তথ্য চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া ওকালতনামা এবং আইনজীবী আলিফ নিহত হওয়ার আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ভিত্তিতে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন শিবিরের সদস্য এবং একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক।
তবে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার মো. রইস উদ্দিন এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও দেখা গেছে, এই ভুয়া তথ্যটি ‘SadhinBangladeshNews’ নামের একটি ভুয়া পোর্টালের প্রতিবেদনের বরাতে ছড়ানো হয়েছে। অতীতেও এই পোর্টাল থেকে গুজব ছড়ানোর নজির পাওয়া গেছে।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অন্তত ছয়জনকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এছাড়া, সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করেছে সিএমপি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার মো. রইছ উদ্দিন রিউমর স্ক্যানারকে জানান, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে এখন পর্যন্ত সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এছাড়া, ইসকন সদস্য প্রবীর চন্দ্র পালকে কেন্দ্র করে দুটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়, যেখানে সময় টিভি এবং চ্যানেল ২৪ এর লোগো ব্যবহার করে দাবি করা হয় যে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন: ‘প্রভুকে মুক্তি না দিলে আরও লাশ পড়বে, ৩ কোটি সনাতনী মাঠে থাকবে’ এবং ‘ইসকন নিষিদ্ধ করতে চাইলে পুরো বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করে দেবে ভারত’।
তবে, এই দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রবীর চন্দ্র পাল এমন কোনো স্ট্যাটাস দেননি এবং সময় টিভি ও চ্যানেল ২৪ এর পক্ষ থেকেও এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়নি। গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে এই মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার আরও জানায়, চিন্ময়ের জামিন ইস্যুতে সৃষ্ট অপ্রীতিকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্সে একটি ভিডিও শেয়ার করে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন। তবে, ভিডিওটি ঢাকার তিনটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের দৃশ্য। এটি হিন্দু নির্যাতনের কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
এছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ সমকামী কমিউনিটি এলজিবিটিভি-এর স্বনামধন্য সদস্য দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার বরাতে সময় টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। তবে যাচাইয়ে দেখা গেছে, রিপাবলিক বাংলা এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি এবং সময় টিভিও এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তাকে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
এ নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং এর প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে নানা গুজব ছড়াতে শুরু করে।
রিউমর স্ক্যানারের মূল প্রতিবেদনটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
আরটিভি/কেএইচ
ঝাঁটাপেটা খেয়ে পালিয়ে এখন দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে: সোহেল তাজ
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেছেন, হত্যা, গুম, খুন, গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, গণতন্ত্র ধ্বংস করে, দুর্নীতি করে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশটাকে শেষ করে ছাত্র-জনতার ঝাঁটাপেটা খেয়ে পালিয়ে যেয়ে এখন দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে দেওয়া এই পোস্টে সোহেল তাজ আরও লিখেন, ‘কত বড় নির্লজ্জ বেহায়া হলে দেশটাকে এক মুহূর্তের জন্য শান্তিতে থাকতে দিবে না। প্রথমে ডিজিটাল জুডিশিয়াল ক্যু’র চেষ্টা, তারপর একের পর এক অপচেষ্টা- আনসার বাহিনী দিয়ে, ব্যাটারি রিকশা, নূর হোসেন দিবসে ‘Trump’ কার্ড, ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শাহবাগে মানুষের জমায়েত করার চেষ্টা বিভিন্ন কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা আর এবার ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করে লাশের ওপর ক্ষমতায় ফিরে আসার চেষ্টা।’
তিনি শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা মতিউর রহমান রেন্টুর ‘আমার ফাঁসি চাই’ ও ‘অন্তরালে হত্যাকারী প্রধানমন্ত্রী’ বই দুটো সবাইকে পড়তে অনুরোধ করেন।
এ ছাড়া তিনি লেখেন, ‘নীতি আদর্শ বিচ্যুত খারাপ মানুষের প্রশংসা আমার প্রয়োজন নাই, আমি আপাদেরকে চিনি।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ‘ব্রেইন ওয়াশড’ উল্লেখ করে সোহেল তাজ লেখেন, নষ্ট-পচা নীতি-আদর্শ বিচ্যুত লুটেরা খুনি হত্যা গুম নির্যাতনকারীদের সমর্থক সবাইকে বলব অনতিবিলম্বে আমার এই ফেইসবুক পেইজটি আনফলো করতে, আর অনুরোধ থাকবে নিজের বিবেককে জাগিয়ে আত্মোপলব্ধি আত্মসমালোচনা করে অনুশোচনা করার।
আরটিভি/এআর
ইশরাকের পোস্ট শেয়ার দিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস নিজের প্রোফাইলে শেয়ার দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। একই সঙ্গে শেয়ার দিয়ে মন্তব্যও করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ইশরাকের দেওয়া পোস্ট শেয়ার দেন নাহিদ ইসলাম।
পোস্টে তিনি লেখেন, এটা প্রজন্মের লড়াই। নতুন বাংলাদেশ মানে নতুন রাজনীতি ও নতুন বন্দোবস্ত। ঐক্যবদ্ধ, প্রতিরোধ এবং পুনর্গঠন।
বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফ্যাসিবাদ নিয়ে এই পোস্ট দেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। পোস্টে লেখা ছিল, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যমত সুস্পষ্ট হওয়া উচিত। গণতান্ত্রিক দেশে ফ্যাসিবাদ রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। যেই মতাদর্শ অন্যের অধিকারে বিশ্বাস করে না তাদের আবার কিসের অধিকার?
এতে আরও লেখা ছিল, আমরা আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বলব, আবার তাদের প্রতি নমনীয় হবো বা রাজনীতিতে পুনর্বাসন করতে চাবো তা চলবে না। কিঞ্চিৎ সুযোগ পেলে ফ্যাসিবাদ কি করতে পারে তা গত কয়েক দিনে নিশ্চয় স্পষ্ট হয়েছে। এরা স্বাধীন বাংলাদেশ এর অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করবে না। তাই দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা যেখানে যুদ্ধ করবে তাদের সাথে অগ্রিম একাত্মতা প্রকাশ করছি।
আরটিভি/এসএপি/এস
‘ভারতীয়দের জানা উচিত তাদের পূর্ব সীমান্তে আরও স্মার্ট ও সাহসী মানুষ বাস করে’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘ভারতীয়দের জানা উচিত তাদের পূর্ব সীমান্তে আরও স্মার্ট ও সাহসী মানুষ বাস করে। সম্প্রতি যারা নৃশংস স্বৈরাচারী শাসনকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দিনগত রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের নিজেদের গল্প আমাদেরকেই বলতে হবে। নইলে তারা তাদের ইচ্ছামতো আমাদের গল্প সাজাবে। ভারতীয়দের জানা উচিত, তাদের পূর্ব সীমান্তে আরও স্মার্ট এবং সাহসী মানুষ বাস করে। এই মানুষরাই কিছু মাস আগে এক ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে একটি নৃশংস স্বৈরাচারী শাসনকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের কিছু মিডিয়া ও তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে ছড়ানো বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি সাংবাদিকরা সাহসী ভূমিকা পালন করছেন। বিশেষ করে ভারতের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বিতর্ক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তারা বাংলাদেশের পক্ষে সঠিক তথ্য তুলে ধরছেন এবং নিজের দেশকে গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করছেন।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ধারণা করা হচ্ছিল, ভারতের বিতর্ক অনুষ্ঠানের আক্রমণাত্মক সঞ্চালকদের মুখোমুখি হতে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা সমস্যায় পড়বেন। কিন্তু সেই আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে, সাংবাদিকরা দৃঢ়ভাবে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিচ্ছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন, সময় এসেছে ভারতের মিডিয়া থেকে আসা বিশাল আকারের মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভুল করব, হয়তো কখনো ভয় পাব। কারও কাছে হয়তো ভারতীয়দের স্মার্ট বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আমি নিশ্চিত, সত্যের শক্তিতে বলীয়ান হলে কোনো মিথ্যাচার আমাদের হারাতে পারবে না। আমি আরও সাংবাদিক, বিশেষ করে আমাদের নারী রিপোর্টার ও সম্পাদকদের উৎসাহিত করব ভারতীয় মিডিয়ার সামনে আমাদের গল্প তুলে ধরতে।’
আরটিভি/এসএপি
হিন্দু নারীকে হত্যাচেষ্টার দাবি, যা জানা গেল
দুইজন পুরুষ তিনজন নারীকে মারধর করছেন সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, উগ্র মুসলিম পুরুষ কর্তৃক প্রকাশ্যে হিন্দু নারী হত্যাচেষ্টার ভিডিও এটি। তবে এটি ২০২২ সালের ভিডিও, যা চট্টগ্রামে গাছ থেকে জাম পাড়াকে কেন্দ্র করে ঘটে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়, বরং এটি ২০২২ সালে গাছ থেকে জাম পাড়া এবং জমিসংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে সংঘটিত একটি মারধরের ঘটনার সময়ের ভিডিও। আলোচিত ভিডিওটিতে প্রথম আলোর লোগো দেখা যাওয়ার সূত্রে গণমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৩ জুন ‘জাম পাড়াকে কেন্দ্র করে নারী নির্যাতনের অভিযোগ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। প্রত্রিকাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাছ থেকে জাম পাড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটেছিল।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ২ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের জোড়বটতল এলাকায় জাম পাড়াকে কেন্দ্র করে তিন নারীকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় আহত তিনজন হলেন, যোগেন্দ্র চন্দ্র দাসের স্ত্রী শ্রীমতি রানী দাস (৩০), মিলন চন্দ্র দাসের স্ত্রী অঞ্জনা রানী দাস (৩২) ও কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের স্ত্রী রীমা রানী দাস (২৭)।
হামলাকারীরা হলেন তৌহিদুল ইসলাম ও আলমগীর। এ ঘটনায় সেসময় ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়।
একটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে সে বছর ওই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী কর্তৃক সীতাকুণ্ড মডেল থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের কপি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এই বিষয়ে ভুক্তভোগী সীতাকুণ্ড মডেল থানায় অভিযোগের পাশাপাশি পূর্বে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা করেন (মামলা নং-১৩২৭/২০২১)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাদী হাজি আমিনুল হক সওদাগর, পিতা মৃত ফজলুর রহমান। বিবাদীরা হলেন, সচী রানী দাস,স্বামী অমৃত দাশ, শ্রীমতি দাশ, স্বামী যোগন্দ দাস, অঞ্জনা দাস স্বামী চন্দ্র দাস, রিনা দাস,স্বামী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস।
অভিযোগে বলা হয়, ওপরের বিবাদীদের সাথে আমার বহুদিন যাবৎ জায়গাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিবাদীরা আমার খরিদা সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল করার চেষ্টা করতেছে। এতে আমি তাদের বাধা দিলে তারা আমার ও আমার পরিবারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অযথা নির্যাতন করতে শুরু করে। ছোটখাটো বিষয়কে কেন্দ্র তারা গালিগালাজ এবং মারধর করে। স্থানীয় গণ্যমান্য এবং মেম্বারকে জানালে তারা বিবাদীদের সাথে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে এবং সম্পূর্ণ জায়গা বহুবার সুষ্ঠুভাবে পরিমাপ করে। কিন্ত বিবাদীরা কোন কিছুই মানতে রাজি না এবং আমার পরিবারকে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। জায়গা ছেড়ে না দিলে মেরে ফেলবে বলে হুংকার দেন। তাই আমি বিবাদীর বিরুদ্ধে বিগত ৯ মার্চ ২০১৭ অভিযোগ করি এবং এতে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সীতাকুণ্ড মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করি। এতেও বিবাদীরা ক্ষান্ত হননি তাই নিরুপায় হয়ে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা করি। চট্টগ্রাম কোর্ট থেকে একটি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ফর্মে ওই জায়গায় সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উন্নয়নমূলক কাজ করা যাইবে। কিন্তু বিবাদীরা তারপরও আমার জমি ভোগ দখল করবার পাঁয়তারা করছে। তাই আমি ২১ এপ্রিল ২০২২ নিষেধাজ্ঞা অবমাননা মূলে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। বিবাদী ওই বিষয় জানতে পেরে গত ২ জুন ২০২২ তারিখ বেলা সাড়ে ১১টার সময় আমার গাছ থেকে জাম পাড়াকে কেন্দ্র করে আমার ২ ছেলের ওপর লোহার রড দিয়ে হামলা করে তাদের রক্ত ঝরায় এবং তাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করে। ওই ঘটনায় আমার বড় ছেলের মাথা ফেটে রক্ত বের হয় এবং ছোট ছেলের ডান হাতে গুরুতর জখম হয়।
প্রসঙ্গত, এটা স্পষ্ট যে, জাম পাড়া এবং জমিসংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধ থেকে সৃষ্ট মারধরের ঘটনা এটি; যা ২০২২ সালে বিগত সরকারের আমলে সংঘটিত হয়েছিল। ওই সময়ের পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে মুসলিম পুরুষ কর্তৃক হিন্দু নারীর ওপর হামলার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
আরটিভি/এসএপি/এস
আসিফ-নাহিদের রুটি বানানোর ছবি ভাইরাল, যা জানা গেল
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুজন ব্যক্তির রুটি বানানোর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে থাকা দুজনকে বলা হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে এআই দিয়ে অন্যের ছবিতে আসিফ ও নাহিদের মুখ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, রুটি বানানোর ভাইরাল ছবিটি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের নয়, বরং ছবিটি ভিন্ন দুই শিক্ষার্থীর। প্রকৃতপক্ষে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন আহমেদ রিফাত ও তার বন্ধু মো. সাইফুল্লাহ আল হাদীর এই ছবিটি ক্যাম্পাসের পাশে মেসে থাকাকালীন ২০২২ সালে ধারণকৃত।
রিউমর স্ক্যানার জানায়, এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন আহমেদ রিফাত এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২২ সালের ২৭ জুলাই প্রকাশিত একটি পোস্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ছবিতে দুজন তরুণকে রুটি বানাতে দেখা যায়।
ছবিটির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পোস্টদাতা কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন আহমেদ রিফাতের সাথে যোগাযোগ কার হয়।
ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছবিটা আমাদেরই। আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী মেসে থাকাকালীন ২৭ জুলাই ২০২২ দুই বন্ধু মিলে রুটি বানাচ্ছিলাম, সেই ছবি।’
অর্থাৎ, আলোচিত এই ছবিটি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের নয়। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন দুই শিক্ষার্থীর ছবিকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আরটিভি/এসএপি/এস
শেখ হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটির পিয়নের’ খোঁজ মিলেছে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহুল আলোচিত পিয়ন ও ৪০০ কোটি টাকার মালিক জাহাঙ্গীর আলমের খোঁজ পাওয়া গেছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা ৩৪ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।
পোস্টে জুলকারনাইন লিখেছেন, ‘বহুল আলোচিত শেখ হাসিনার ‘পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম’কে আজ (স্থানীয় সময় বুধবার) নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে বেশ কিছু ডকুমেন্ট পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করাতে অপেক্ষমাণ দেখা যায়।’
তিনি লেখেন, ‘৪০০ কোটি টাকার বেশি লোপাট করে পরিবারসহ আমেরিকা পাড়ি জমানো জাহাঙ্গীর এ সময় কখনো টুপি পরে নিজের মাথাসহ পুরো মুখ ঢাকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু গোপন ক্যামেরায় তিনি ঠিকই ধরা পড়ে যান।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিএসসির এক গাড়িচালক কীভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হলো? -প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমার বাসার একজন পিয়ন ছিল, সে-ও নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক! হেলিকপ্টার ছাড়া নাকি চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।’
এরপর জাহাঙ্গীর আলমের এই দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে নানা সমালোচনা শুরু হলে তৎকালীন সরকার তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে। পরে জানা যায়, পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন পিয়ন জাহাঙ্গীর। তিনি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামের বাসিন্দা। গত জাতীয় নির্বাচনে নোয়াখালী-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর।
আরটিভি/এসএপি/এস