জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা প্রসঙ্গে যা বললেন সারজিস ও হাসনাত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতীয়পার্টির সংলাপ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে নিজ নিজ ফেসবুক পেজ এ বিষয়ে পোস্ট দিয়েছেন তারা।
ফেসবুক পোস্টে সারজিস লিখেছেন, জাতীয় পার্টির মতো মেরুদন্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদেরকে প্রধান উপদেষ্টা কিভাবে আলোচনায় ডাকে?
হাসনাত তার পোস্টে লিখেছেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’
এর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত তিনটি সংসদ বাতিলের দাবি জানান হাসনাত।
আরটিভি/এসএপি
মন্তব্য করুন
মাহমুদুর রহমান সৎসাহস ও দেশপ্রেমের জীবন্ত প্রতীক: আসিফ নজরুল
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে সৎসাহস আর দেশপ্রেমের জীবন্ত প্রতীক বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এ অ্যাখ্যা দেন।
এ সময় আইন উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে নিজের কয়েকটি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে আরও লিখেছেন, বহু বছর পর দেখা হলো প্রিয় মাহমুদ ভাইয়ের সঙ্গে। দুইদিন আগে বাংলা একাডেমিতে।
সবশেষে তিনি কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ও লতিফুল ইসলাম শিবলীকে ধন্যবাদ জানান।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পোস্টটিতে দেড় হাজারেরও বেশি পাঠক মন্তব্য করেছেন।
ইয়াসিন সোহাগ নামে একজন লিখেছেন, সময়ের সাহসী সন্তান মাহমুদুর রহমানের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করি।
রুমন আহমেদ লিখেছেন, রক্তাক্ত অবস্থায় যখন তিনি বলেছিলেন এই দেশের জন্য এবং ইসলামের জন্য আমি জীবন দেব, তখন থেকে উনার প্রতি আলাদা একটা ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে, আল্লাহ উনাকে নেক হায়াত দান করুন।
আবুল বাসার আব্দুল আওয়াল লিখেছেন, আপনারা সুপরামর্শ করে দেশকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই চিন্তাভাবনা করবেন। ইনশাআল্লাহ্, দেশ এগিয়ে যাবে।
ফেরদৌস আকন্দ নামে আরেকজন লিখেছেন, আপনাদের উভয়ের জন্যই অনেক অনেক শুভকামনা। দেশ ও জাতির কল্যাণে আপনাদের ভূমিকা বলিষ্ঠ হোক।
আরটিভি/আইএম/এস
‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, এই দাবির সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল
আবারও আলোচনায় এসেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান। তবে এই আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকের কিছু পোস্টকে ঘিরে। সেগুলোতে দাবি করা হয়েছে, মুগ্ধ মারা যাননি, মুগ্ধ-স্নিগ্ধ দুই ভাই নয়, মুগ্ধই স্নিগ্ধ ছিল।
তবে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশ জানিয়েছে, এসব দাবি মিথ্যা। মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ পৃথক দুই ব্যক্তি। তারা দুজন যমজ ভাই। ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত মুগ্ধ ও স্নিগ্ধের একসঙ্গে তোলা অসংখ্য ছবি ও ভিডিওর বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তারা।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়াতে গিয়ে শহীদ হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। অথচ সম্প্রতি মুগ্ধের মৃত্যু নিয়ে সংশয় ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট করা হয়। তার মধ্যে একটি পোস্টে দাবি করা হয়, ‘মুগ্ধ মারা যায়নি, মুগ্ধ নামে কেউ ছিলই না! মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ দুই ভাই নয়, মুগ্ধই স্নিগ্ধ ছিল। মানুষ একজনই!’
সাপোর্টারস অব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের পোস্টে মুগ্ধের মৃত্যুর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ লেখা হয়েছে, ‘মুগ্ধর ডেডবডির ছবি কেউ দেখে নাই, মুগ্ধর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, জানাজা, কবর কই?’
তবে এর জবাব দিতেও ছাড়েনি জুলাই আগস্ট আন্দোলনের সমর্থকরা। একজন লিখেছেন, মুগ্ধরা মরে না, তারা চিরদিন বেঁচে থাকবে আমাদের মনে। তাদের এ আত্মত্যাগ যুগ যুগ ধরে সবাই মনে রাখবে। আল্লাহ মুগ্ধকে বেহেশতের উচ্চতর শিখরে পৌঁছে দিক।
আরটিভি/এসএপি/এস
ফেসবুকে যে বার্তা দিলেন মাহফুজ আলম
চট্টগ্রামের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ছাত্র জনতাকে অভিবাদন! দায়িত্ব ও দরদের নজির দেখিয়ে আপনারা বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন। বাংলাদেশ আর কারও ষড়যন্ত্রের সামনে পরাস্ত হবে না। ইনশাআল্লাহ।
‘আমাদের ব্যক্তি ও সমষ্টির ‘শক্তি’ সাধনায় দরদি ও দায়িত্ববান হয়ে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হয়ে ওঠা মোক্ষ। আমাদের এ অভ্যন্তরীণ শক্তি যেকোন বহিঃশত্রুকে পর্যুদস্ত করবে। আমরা আর Colonizable হবো না।’
মাহফুজ আরও লিখেছেন, বিশেষ ধন্যবাদ প্রাজ্ঞ আলেম ও মুসলিম নেতৃবৃন্দের প্রাপ্য। আপনারা এ গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে বাঙ্গালি মুসলমানকে দায়িত্বশীল আচরণে অনুপ্রাণিত করেছেন। ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে আপনাদের আজ ও আগামীর প্রাজ্ঞ উদ্যোগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রে আপনাদের ইজ্জত ও শরিকানা নিশ্চিত করবে।
‘হঠকারিতা, নেতিবাচকতা ও ভাঙ্গনের মানসিকতা থেকে বের হয়ে আমাদের সৃজনশীল ও ইতিবাচক মানসিকতায় এ রাষ্ট্রকে গড়তে হবে। এ রাষ্ট্র পরিগঠন করলেই কেবল জুলাই শহিদানসহ শহিদ আলিফের শাহাদাত অর্থবহ হয়ে উঠবে।’
আরটিভি/আরএ
হাসনাত-সারজিসের গাড়িবহরে দুর্ঘটনার বর্ণনা দিলেন রাফি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ক খান তালাত মোহাম্মদ রাফি বলেছেন, আমাদের নিরাপত্তাঝুঁকি আছে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক। শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আরিফ ভাইয়ের কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমাদেরকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক লাইভে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
রাফি জানান, হয়তো তাদের বেঁচে থাকার কথা ছিল না। অথচ এখন কথা বলতে পারছেন। বিভিন্ন ষড়যন্ত্র প্রতিনিয়তই ঘিরে আছে এবং বিভিন্নভাবে তাদেরকে বিপদের সম্মুখীন করার চেষ্টা চলছে। সারজিস ও হাসনাতসহ তারা আজ নিহত আলিফের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাদের সাথে তিনটা গাড়ি ছিল। তারা কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে সৌভাগ্যবশত তারা গাড়ি চেঞ্জ করে ফেলেছিলেন। হাসনাত ও সারজিস একটা গাড়িতে ছিলেন, সে একটা গাড়িতে ছিলেন। এবং রাফির বন্ধুরা ও ভাইয়েরা অন্য আরেকটা গাড়িতে ছিলেন। তাদের সামনে ওই গাড়িটা ছিল। একটা ট্রাক এসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের সামনের গাড়িকে চাপা দেয়। যখন ট্রাক আসতে দেখেছে, তখনই গাড়িটা ব্রেক করা হয়। কিন্তু গাড়ি ব্রেক করা স্বত্তেও ট্রাক চাপা দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, গাড়িতে ট্রাকচাপা দেওয়ার পরও আরও দুটি বাইক দিয়ে চাপা দেওয়া হয়। এ সময় ড্রাইভারকে ধরে জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে, তাকে মেরে ফেললে মেরে ফেলন। মামলা দেবেন? দিন। মানে সে ভিত্তিহীন কথা বলতে থাকে। পরে রাফিরা জানতে পারেন যে ট্রাকটি চাপা দেয়, সেই চালক হলো আওয়ামী দোসর। তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রাফি বলেন, আমাদের নিরাপত্তাটা কোথায়? আমরা জানিনা। আমরা শুরু থেকে বলে আসছি, দিন নাই রাত নাই আমরা ছুটে চলছি। যখন যেখানে যে সমস্যা হচ্ছে আমরা যাচ্ছি। কথা বলতেছি। কিন্তু কিছু মহল শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের পেছনে লেগে আছে আমাদের ক্ষতি করার জন্য। যার প্রতিফিলন আজ আপনারা দেখেছেন।
এ সময় তিনি এই ঘটনা পরিকল্পিত বলে দাবি করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ক।
এর আগে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহরের একটি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে গেছে। এদিন দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে ওই জানাজায় অংশ নেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম।
আরটিভি/এসএপি
চিন্ময় গ্রেপ্তার ও আইনজীবী হত্যাকাণ্ড ঘিরে ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে বলে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
এক প্রতিবেদনে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে অন্তত আটটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়ানো হয়েছে। এসব ফটোকার্ডে প্রচারিত গুজবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- চিন্ময় স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন, শিশু বলাৎকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ডিবি পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হিসেবে দাবি করে গুজব ছড়ানো হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, ভয়েস অব আমেরিকা এবং আরব নিউজের মতো প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমেও এই বিষয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
রিউমর স্ক্যানার জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরটিভি এবং যমুনা টিভির লোগোযুক্ত দুইটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়। এতে দাবি করা হয়, তিনি ‘স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন’। তবে, গণমাধ্যম দুটির কোনো প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। ফটোকার্ডগুলোও ভুয়া।
ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, মঙ্গলবার সকালে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চ্যানেল২৪ এর লোগোযুক্ত আরেকটি ভুয়া ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দাবি করা হয়, শিশু বলাৎকার এবং উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু চ্যানেল২৪ এই ধরনের কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে একটি নারী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া যায়, ভিডিওটি ভারতের ‘বাবা বালকনাথ’ নামের এক ধর্মগুরুর এবং ভিডিওটি চিন্ময় কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
অন্যদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণকে নিয়ে আদালতে শুনানি চলাকালে সামাজিক মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে বলা হয়, ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে চট্টগ্রাম আমাদের দেয়া হবে’ এবং ‘আমার কোনো দোষ নেই, আমাকে যা বলতে বলা হয়েছিল, বাধ্য হয়ে তাই বলেছি।’ এই দাবির সঙ্গে ডিবিসি এবং চ্যানেল ২৪-এর লোগোযুক্ত পৃথক ফটোকার্ডও ছড়ানো হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এই ফটোকার্ডগুলোও ভুয়া প্রমাণিত হয়।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে সংঘর্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও প্রাণহানির দাবি ওঠে। বিভিন্ন পোস্টে নিহতদের নিয়ে বিভিন্ন সংখ্যা উল্লেখ করে দাবি করা হয়। তবে, নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ছাড়া এ সংঘর্ষে আর কোনো মৃত্যুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পরিকল্পিত হত্যার শিকার দাবি করে প্রোবীর চন্দ্র পাল নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টের দুটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে। একটি পোস্টে প্রোবীর লিখেছিলেন, ‘সমস্ত সনাতনী এডভোকেটরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আজকেই শুনানি দিতে হবে! নাহলে দায়রা জজ মো: সাইফুল ইসলামকে কোর্ট থেকে বের হতে দেবে না।’ তবে, এখানে উল্লিখিত জজ সাইফুল ইসলাম এবং নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ভিন্ন ব্যক্তি। পোস্টে উল্লিখিত সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ, আর নিহত সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)।
ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানায়, ভারতের অসংখ্য এক্স ব্যবহারকারী এবং কিছু গণমাধ্যমে গুজব ছড়ায় যে, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ ছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী, এবং সেই দায়িত্ব পালনের কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর বরাত দিয়ে এই দাবি উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
তবে, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হলেন সুভাশিস শর্মা। এ তথ্য চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া ওকালতনামা এবং আইনজীবী আলিফ নিহত হওয়ার আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ভিত্তিতে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন শিবিরের সদস্য এবং একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক।
তবে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার মো. রইস উদ্দিন এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও দেখা গেছে, এই ভুয়া তথ্যটি ‘SadhinBangladeshNews’ নামের একটি ভুয়া পোর্টালের প্রতিবেদনের বরাতে ছড়ানো হয়েছে। অতীতেও এই পোর্টাল থেকে গুজব ছড়ানোর নজির পাওয়া গেছে।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অন্তত ছয়জনকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এছাড়া, সংঘর্ষ চলাকালে ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনকে আটক করেছে সিএমপি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার মো. রইছ উদ্দিন রিউমর স্ক্যানারকে জানান, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে এখন পর্যন্ত সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এছাড়া, ইসকন সদস্য প্রবীর চন্দ্র পালকে কেন্দ্র করে দুটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়, যেখানে সময় টিভি এবং চ্যানেল ২৪ এর লোগো ব্যবহার করে দাবি করা হয় যে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন: ‘প্রভুকে মুক্তি না দিলে আরও লাশ পড়বে, ৩ কোটি সনাতনী মাঠে থাকবে’ এবং ‘ইসকন নিষিদ্ধ করতে চাইলে পুরো বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করে দেবে ভারত’।
তবে, এই দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রবীর চন্দ্র পাল এমন কোনো স্ট্যাটাস দেননি এবং সময় টিভি ও চ্যানেল ২৪ এর পক্ষ থেকেও এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়নি। গণমাধ্যমের লোগো ব্যবহার করে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে এই মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার আরও জানায়, চিন্ময়ের জামিন ইস্যুতে সৃষ্ট অপ্রীতিকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্সে একটি ভিডিও শেয়ার করে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন। তবে, ভিডিওটি ঢাকার তিনটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের দৃশ্য। এটি হিন্দু নির্যাতনের কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
এছাড়া চিন্ময় কৃষ্ণ সমকামী কমিউনিটি এলজিবিটিভি-এর স্বনামধন্য সদস্য দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার বরাতে সময় টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। তবে যাচাইয়ে দেখা গেছে, রিপাবলিক বাংলা এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি এবং সময় টিভিও এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তাকে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
এ নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং এর প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে নানা গুজব ছড়াতে শুরু করে।
রিউমর স্ক্যানারের মূল প্রতিবেদনটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
আরটিভি/কেএইচ
ঝাঁটাপেটা খেয়ে পালিয়ে এখন দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে: সোহেল তাজ
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেছেন, হত্যা, গুম, খুন, গণহত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, গণতন্ত্র ধ্বংস করে, দুর্নীতি করে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশটাকে শেষ করে ছাত্র-জনতার ঝাঁটাপেটা খেয়ে পালিয়ে যেয়ে এখন দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে দেওয়া এই পোস্টে সোহেল তাজ আরও লিখেন, ‘কত বড় নির্লজ্জ বেহায়া হলে দেশটাকে এক মুহূর্তের জন্য শান্তিতে থাকতে দিবে না। প্রথমে ডিজিটাল জুডিশিয়াল ক্যু’র চেষ্টা, তারপর একের পর এক অপচেষ্টা- আনসার বাহিনী দিয়ে, ব্যাটারি রিকশা, নূর হোসেন দিবসে ‘Trump’ কার্ড, ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শাহবাগে মানুষের জমায়েত করার চেষ্টা বিভিন্ন কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা আর এবার ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করে লাশের ওপর ক্ষমতায় ফিরে আসার চেষ্টা।’
তিনি শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা মতিউর রহমান রেন্টুর ‘আমার ফাঁসি চাই’ ও ‘অন্তরালে হত্যাকারী প্রধানমন্ত্রী’ বই দুটো সবাইকে পড়তে অনুরোধ করেন।
এ ছাড়া তিনি লেখেন, ‘নীতি আদর্শ বিচ্যুত খারাপ মানুষের প্রশংসা আমার প্রয়োজন নাই, আমি আপাদেরকে চিনি।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ‘ব্রেইন ওয়াশড’ উল্লেখ করে সোহেল তাজ লেখেন, নষ্ট-পচা নীতি-আদর্শ বিচ্যুত লুটেরা খুনি হত্যা গুম নির্যাতনকারীদের সমর্থক সবাইকে বলব অনতিবিলম্বে আমার এই ফেইসবুক পেইজটি আনফলো করতে, আর অনুরোধ থাকবে নিজের বিবেককে জাগিয়ে আত্মোপলব্ধি আত্মসমালোচনা করে অনুশোচনা করার।
আরটিভি/এআর
ইশরাকের পোস্ট শেয়ার দিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা নাহিদ
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস নিজের প্রোফাইলে শেয়ার দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। একই সঙ্গে শেয়ার দিয়ে মন্তব্যও করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ইশরাকের দেওয়া পোস্ট শেয়ার দেন নাহিদ ইসলাম।
পোস্টে তিনি লেখেন, এটা প্রজন্মের লড়াই। নতুন বাংলাদেশ মানে নতুন রাজনীতি ও নতুন বন্দোবস্ত। ঐক্যবদ্ধ, প্রতিরোধ এবং পুনর্গঠন।
বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফ্যাসিবাদ নিয়ে এই পোস্ট দেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। পোস্টে লেখা ছিল, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যমত সুস্পষ্ট হওয়া উচিত। গণতান্ত্রিক দেশে ফ্যাসিবাদ রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। যেই মতাদর্শ অন্যের অধিকারে বিশ্বাস করে না তাদের আবার কিসের অধিকার?
এতে আরও লেখা ছিল, আমরা আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বলব, আবার তাদের প্রতি নমনীয় হবো বা রাজনীতিতে পুনর্বাসন করতে চাবো তা চলবে না। কিঞ্চিৎ সুযোগ পেলে ফ্যাসিবাদ কি করতে পারে তা গত কয়েক দিনে নিশ্চয় স্পষ্ট হয়েছে। এরা স্বাধীন বাংলাদেশ এর অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করবে না। তাই দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা যেখানে যুদ্ধ করবে তাদের সাথে অগ্রিম একাত্মতা প্রকাশ করছি।
আরটিভি/এসএপি/এস