ঐক্যের শক্তি ধ্বংস করতে ছড়ানো হচ্ছে বিভেদের বিষ: মুশফিক আনসারী
দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসানের পর দেশের মানুষের মাঝে যে সম্ভাবনার দ্বার তৈরি হয়েছে তা ধ্বংস করতে একটি বিশেষ শ্রেণি নিজেদের স্বার্থে অশান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এম্বাসেডর অ্যাটলার্জ মুশফিকুল ফজল আনসারী। এই মুহূর্তে গড্ডালিকা প্রবাহে গা না ভাসিয়ে দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে যেতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেছেন। শুরুতেই তিনি লিখেছেন, ‘নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিশ্বাস, শান্তির ললিত বাণী শোনাইবে ব্যর্থ পরিহাস।’
পরে তিনি লিখেছেন, বুলেটের আঘাতে ছাত্র-জনতার বুক বিদীর্ণ করার পরও ষড়যন্ত্রকারীদের দল থেমে নেই। আমাদের ঐক্যের শক্তি ধ্বংস করার জন্য প্রতিনিয়ত ছড়ানো হচ্ছে বিভেদের বিষ। রক্তের দাগ শুকানোর আগেই আমরা চাওয়া-পাওয়া, দোষারোপ আর স্বার্থের হিসাব-নিকাশে মগ্ন হয়ে যাই। অথচ খুনীদের জন্য যেনো সবকিছু সহজ হয়ে যায়। তাদের রক্তপিপাসু হায়েনাদের ফুলের মালা পরানো হচ্ছে—এ দৃশ্য দেখার জন্যও আমাদের বেঁচে থাকতে হলো!
দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের জনগণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায়। কিন্তু একটি বিশেষ শ্রেণি নিজেদের স্বার্থে অশান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে, উসকানি দিচ্ছে, বিভাজন তৈরি করছে। আমরা যেন ক্রমেই অসহিষ্ণু জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছি, যা আমাদের জন্য লজ্জার এবং অপমানের।
এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস আগামীর বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের চরম সংকটময় পরিস্থিতিতে বিশ্বের সর্বাধিক সমাদৃত ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূস সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণে সম্মত হওয়াটা ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বস্তিদায়ক। এতে সামান্য ভূমিকা রাখতে পেরে আমি গর্বিত। তবে আমি করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করি—এই গর্ব যেন আমার আমিত্বে রূপ না নেয়। কারণ, আমিত্বই আমাদের জাতির সংকটের মূল কারণ।
আজ আমাদের সামনে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের তাবৎ রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছাড়াও ইলন মাস্ক যখন ড. ইউনূসের সঙ্গে কথা বলায় আগ্রহী ওঠেন, সেরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেল যখন তাদের চিপ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের কারখানা বাংলাদেশে স্থাপন করতে তোড়জোড় শুরু করেছে, বিশ্বের বৃহত্তম শিল্পদ্যোক্তরা যখন আগ্রহ নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ঝুঁকছে, তখন আমাদের দেখতে হচ্ছে, তিতুমির কলেজ কিংবা সোহরাওয়ার্দী, কবি নজরুল, ও মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের পরস্পরের সংঘর্ষের ঘটনা।
সবশেষে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান, হে তরুণ! তোমরাই স্বৈরাচার হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিয়েছ। এবার তোমাদের দেশ গড়ার উপযুক্ত সময়। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ো না। লক্ষ্য বিস্তৃত করো, আবদ্ধ থেকো না। তোমাদের হাতের মুঠোয় রয়েছে সারা বিশ্ব। শুধু এগিয়ে চেয়ে দেখো!
আরটিভি/এআর
মন্তব্য করুন