• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১
logo

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়াদের নিয়ে যা বললেন সারজিস

আরটিভি নিউজ

  ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩৫
ফাইল ছবি

৪৩তম বিসিএসের ভেরিফিকেশনে বাদ পড়েছেন ২৬৭ জন প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

সারজিস আলম লিখেছেন, ৪৩তম বিসিএসের পুনরায় ভেরিফিকেশন হয়েছে। ১৬৮ জনকে এই ধাপে বাদ দেওয়া হয়েছে। ১ম ও ২য় ভেরিফিকেশন মিলে মোট বাদ পড়েছে ২৬৭ জন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার নেগেটিভ রিপোর্ট। অর্থাৎ পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড। কিন্তু এখানে অনেকগুলো প্রশ্ন আছে।

তিনি লিখেছেন, আওয়ামী লীগের সময়ে আওয়ামী লীগ পরিবার ব্যতীত অন্যান্য পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা যে কারও জন্য এই প্রথম শ্রেণির সরকারি ভালো চাকরি পাওয়া কঠিন বিষয় ছিল। একই ধরনের একটি চিত্র যদি এখন দেখা যায়, তাহলে পার্থক্যটা কোথায়?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক লিখেছেন, কোনো চাকরিপ্রার্থী যদি নিজ যোগ্যতায় প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পাস করে সুপারিশপ্রাপ্ত হন এবং তার যদি পূর্বে কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকে, তাহলে তার বাবা, চাচা, মামা, নানার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হবে কেন? আমি কী করবো সেটা কি আমার চাচা নির্ধারণ করতে পারে? কিংবা আমার চাচা কী করবে সেটা কি আমি নির্ধারণ করতে পারি?

তিনি আরও লিখেছেন, একটা সময় পরে সবাইকে ব্যক্তিগত জীবন গোছাতে হয়। ইভেন আমার বাবার রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে আমার চিন্তা-ভাবনার মিল না-ও থাকতে পারে। তাহলে পরিবারের কোনো একজন সদস্যের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে অন্য একজন সদস্যকে বঞ্চিত করার অধিকার রাষ্ট্র পায় কি না?

সবচেয়ে বাজে ব্যাপারটা এবার হয়েছে উল্লেখ করে সারজিস লিখেছেন, গোয়েন্দা সংস্থার অনেকে গিয়ে এবার ইউনিয়ন আর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি-সেক্রেটারির কাছে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের পরিবারের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা জানতে চেয়েছে! তার মানে সারাজীবন অধ্যবসায় করা বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট এক মেধাবী তরুণ প্রায় তিনবছর দিনরাত এক করে পড়াশোনা করার পর প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা পাস করে ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর কোনো এক ওয়ার্ড সভাপতি বা সেক্রেটারির মতামতের কাছে জিম্মি হয়ে যাবে? সে তার কর্ম নির্ধারণ করবে? তাহলে এতো আয়োজনের কি দরকার ছিল? এই ভেরিফিকেশন তো প্রিলির আগে হয়ে যাওয়া উচিত। তাহলে তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নষ্ট হতো না। আর কোন যোগ্যতা ভিত্তিতে সে এই মতামত দেয়? স্থানীয়ভাবে এমনিতেই নেতিবাচক একটা পলিটিকস দেখা যায়, কে কারে ল্যাং মেরে উঠতে পারে! যদি একজন চাকরিপ্রত্যাশী এমন স্থানীয় পলিটিকসের স্বীকার হয়, তাহলে সে দায় সরকার নেবে কি না?

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের এই সাধারণ সম্পাদক লিখেছেন, আমার অমর একুশে হলের জাকারিয়া ভাই অ্যাডমিন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। ডিপার্টমেন্ট ফার্স্ট, MS এ CGPA 4.00 out of 4.00। ১ম ভেরিফিকেশনে উতরে গেলেও রি-ভেরিফিকেশনে তাকে বাদ দেওয়া হয়। যারা ওনাকে চেনেন তাদের সবার আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা। আমি ভেবেছিলাম আওয়ামী আমলে ওনাকে আটকানো হতে পারে। কারণ, ওনার দাঁড়ি আছে, নুরানী চেহারা, ৫ ওয়াক্ত নামাজও পড়েন। জামায়াত-শিবির ট্যাগ দেওয়া সহজ। কিন্তু ওনাকে আটকানো হলো এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে। কিন্তু এখন তো নিয়োগের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড প্রক্রিয়া নতুন করে সেট হওয়ার কথা ছিল।

তিনি লিখেছেন, এটা শুধু একটা এক্সামপল, এমন আরও অনেকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরে দেখলাম যারা বাদ পড়েছে তাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নতুন করে পুনর্বিবেচনার আবেদন করার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু এই ভেরিফিকেশন খেলা কেন? এখানে অনেকেই আছে যারা পূর্বের চাকরি ছেড়ে এসেছে, অনেকের ছিল জীবনের শেষ চাকরির পরীক্ষা, অনেকের সামনের জীবন নির্ভর করছে এই চাকরির ওপর। সেখানে যদি এমন রিয়েলিটি সেট করা হয়, তবে যে প্রজন্ম আগামীর চাকরিপ্রার্থী তারা আপনাদের ওপর আস্থা রাখতে পারবে না, দোদুল্যমান অবস্থায় না থেকে দেশ ছেড়ে চলে যাবে। অলরেডি এটা নিয়ে কথা শুরু হয়েছে। যেটা কখনোই কাম্য নয়।

সবশেষে জাতীয় নাগরিক কমিটির এই মুখ্য সংগঠক লিখেছেন, চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। যে মতাদর্শেরই হোক না কেন, যদি পূর্বে ক্ষমতার অপব্যবহার, অন্যায়, অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকে, তাহলে নাগরিক হিসেবে সরকারি চাকরি পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। কোনো অহেতুক এক্সকিউজে যেটা ক্ষুণ্ন করা কখনোই ভালো বার্তা বহন করে না।

আরটিভি/আইএম

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • সোশ্যাল মিডিয়া এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
খুনি হাসিনা দেশের সিস্টেমগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে: সারজিস আলম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির কর্মসূচি শুরু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা কমিটির ৮ সদস্যের পদত্যাগ
সেভেন সিস্টার্স রক্ষার জন্য ভারত মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল: সারজিস