লিয়াকতের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ (ভিডিও)
টেকনাফে চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় আলোচনার ঝড় বইছে এসআই লিয়াকত হোসেনকে নিয়ে। এর আগেও চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে টাকা না পেয়ে উল্টো তাকে নির্যাতন এবং ক্রসফায়ারে নেয়ার চেষ্টাও করেন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ। অপকর্মের কারণে তার নামে আছে বিভাগীয় মামলাও।
চট্টগ্রামে পটিয়া উপজেলার হাবিলাস দ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হুলাইন গ্রামে লিয়াকতের বাড়ি। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিয়াকত পঞ্চম। ওই গ্রামের মৃত মো. সাহাব মিয়ার ছেলে লিয়াকত ২০১০ সালে পুলিশে যোগ দেন। লিয়াকত প্রথমে ডিবি পরে সোয়াত ও অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটে কাজ করেন।
২০১৪ সালে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন মামলা করতে গেলে মামলার তদন্ত ভার পান তখন ডিবিতে কর্মরত এই লিয়াকত। আসামিদের সঙ্গে আঁতাত করে ডিবি অফিসে নিয়ে এই ব্যবসায়ীর কাছে টাকা দাবি করে লিয়াকত। এক পর্যায়ে তাকে ক্রসফায়ারের জন্য নিয়ে গেলে তিনি জীবন বাঁচাতে দুই লাখ টাকা তুলে দেন লিয়াকতের হাতে। ওই টাকা নেয়ার পরও তাকে সদরঘাট থানাহাজতে নিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে চরম নির্যাতন করে ভুয়া একটি পরোয়ানা মূলে জেলে পাঠানো হয়।
মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, এসআই লিয়াকত আমাকে সদরঘাট থানায় নিয়ে আসামি দিয়ে মামলা করে সারারাত নির্যাতন করেছে এবং ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়েছে। সেই নির্যাতনের কারণে আমার হার্টে তিনটি ব্লক হয়ে গেছে এবং সেখানেই আমি হার্ট অ্যাটাক করেছি। আমার পুরো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমি আজকে পথে পথে ঘুরতেছি। আমি চাই এসআই লিয়াকতের একটা উপযুক্ত শাস্তি হোক।
অভিযোগ আছে, শুধু নৌকার ঘাট থেকেই ৬ লাখ টাকা চাঁদা নিতেন এই সাব-ইন্সপেক্টর। পরিবার জানায়, লিয়াকতের এতো বিত্ত-বৈভব কিভাবে হয়েছে কিছুই জানেন না তারা।
লিয়াকতের মা জানান, আমার পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নাই আমার ছেলে কী করে না করে সত্য-মিথ্যা আমি জানি না।
দুই বছর আগে পুলিশের এসআই পদে পদোন্নতি পান এবং এক বছর আগে টেকনাফ থানায় যোগদান করেন তিনি। সিনহা হত্যাকাণ্ডে ফেঁসে যাবার পর গণমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে সাহস করে বাহারছড়ায় লিয়াকতের অত্যাচারের শিকার মানুষ। তাদের অভিযোগ, মাছ ব্যবসায়ী, নৌকার মাঝি এবং সাধারণ মানুষকে কখনো ইয়াবা দিয়ে তো কখনো ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছে এ সাব-ইন্সপেক্টর। তারা বলছেন, আইনের পোশাক গায়ে দেয়া এ দুর্বৃত্তের উপযুক্ত বিচার চান তারা।
এনএম/জিএ/সি
মন্তব্য করুন