বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) অব্যবস্থাপনায় হাজারীবাগের মতো এখন হেমায়েতপুরও দূষিত হচ্ছে। পৌনে ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকায়। তারপরও বন্ধ হয়নি দূষণ। অকার্যকর সেন্ট্রাল অ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা সিইটিপি কাজ না করায় এই দশা বলে অভিযোগ শিল্প মালিক ও বিশেষজ্ঞদের।
তথ্যমতে, ১৯৫০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ট্যানারি শিল্পের প্রধান ঠিকানা ছিল রাজধানীর হাজারীবাগ। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে ওই এলাকা দূষণে বিপর্যস্ত হয়, আর দূষিত হয় বুড়িগঙ্গা নদী। ফলে, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প সরাতে ২০০৩ সালে সাভার চামড়া শিল্পনগরীর প্রকল্প হাতে নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। ১২ দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ১৭৫ কোটি টাকার প্রকল্পে খরচ হয় ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা। কিন্তু সিইটিপির কাজ শেষ না করেই বিসিকের তত্ত্বাবধানে ২০১৭ সালে ট্যানারি শিল্প হেমায়েতপুরে স্থানান্তর করা হয়। সিইটিপি ছাড়া ১০০ এর বেশি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাওয়ায় দূষিত হতে থাকে ধলেশ্বরী নদী।
স্থানীয়রা বলছেন, ট্যানারির বর্জ্যের কারণে মাছ তো দুরের কথা এই নদীতে একটা ব্যাঙও নেই। নদীর পরিবেশটাই বিলীন হয়ে গেছে। এখনও প্রতিরোধ করা গেলে নদীটা বাঁচানো সম্ভব।
এদিকে ২০০ ট্যানারি কারখানার জন্য ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় বেহাল দশা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়। শিল্পনগরীর পশ্চিমে ধলেশ্বরী নদীর তীরে খোলা আকাশের নিচে ফেলা রাখা হয়েছে সব বর্জ্য। প্রতিনিয়ত এলাকার পরিবেশ দূষিত হলেও মানতে নারাজ বিসিকের চেয়ারম্যান মুহ. মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, দূষণটা কোনো সমাজ বা মানুষকে প্রভাবিত করছে না। ওখানেতো কোনো মানুষ বসবাস করছে না। এগুলো নিয়ে এতো চিন্তা করার কিছু নেই। ওইটা তো ফুলের বাগান নয় যে আপনি ফুলের ঘ্রাণ পাবেন। এটা চামড়া পচার কারখানা, এখানে চামড়া পচা গন্ধই পাবেন।
পরিবেশ দুষণের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান, পরামর্শক ও প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব।
তিনি বলেন, দক্ষতা এবং গঠনগতভাবে একটি ব্যর্থ সংগঠন বিসিক। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তা শতভাগ প্রমাণিত।