শুরু হচ্ছে সিসিমপুরের নতুন মৌসুম, সিজন ১৬
শুরু হচ্ছে শিশুদের জনপ্রিয় শিক্ষা ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান সিসিমপুরের নতুন মৌসুম, সিজন-১৬। নতুন এই মৌসুমে হালুম, টুকটুকি, ইকরি, শিকু ও জুলিয়া হাজির হবে নতুন মজার সব গল্প নিয়ে। আর তাদের সঙ্গে এই সিজনে যুক্ত হবে নতুন আরেক বন্ধু আমিরা। আমিরা চরিত্রটি সিসিমপুরে বিশেষ সংযোজন। ইউএসএআইডি বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতায় নির্মিত নতুন এই সিজনের স্লোগান- ‘১৫ শেষে ১৬ আসে, থাকবো সবাই সবার পাশে’।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সিসিমপুরের সিজন-১৬ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. উত্তম কুমার দাশ ও ইউএসএআইডি’র মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান।
এ সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান বলেন, আরটিভি এটা দায়িত্ব মনে করে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শিশুদের মনের আকাঙ্ক্ষা ও উৎসাস ধরে রাখার জন্য ভবিষ্যতেও সিসিমপুরের সঙ্গে থাকবে আরটিভি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. উত্তম কুমার দাশ বলেন, সিসিমপুর বাংলাদেশের ব্যাপক সফল প্রজেক্ট। এটি শিশুকে উৎসাহিত করবে। শিশুর বৃদ্ধি বিকাশে সহায়তা করবে। নতুন শিক্ষা কারিকুলামের যে ডাইমেনশন সেটা বাস্তবায়নে সাহায্য করবে।
ইউএসএআইডি’র মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান বলেন, প্রতিষ্ঠানটি গর্বিত সিসিমপুরের সঙ্গে থাকতে পেরে।
সিসিম ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, মানুষের যে কতটা ভালোবাসা সিসিমপুর পেয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। এর জনপ্রিয়তা কতখানি তা বইমেলা গেলে বুঝতে পারবেন এটা কতটা জনপ্রিয়।
সবাইকে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া- এই বিষয় দুটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সাজানো হয়েছে সিসিমপুরের ১৬তম মৌসুম। এছাড়া মজার মজার গল্পের মাধ্যমে প্রাক-গণিত, প্রাক-পঠন, অটিজম, পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব, বিশ্লেষণী চিন্তা-ভাবনা, জেন্ডার বিষয়ক প্রচলিত সংস্কারকে জয় করা এবং ভিন্ন ভিন্ন ভাবপ্রকাশের উপায়কে সম্মান দেখানোর মতো বিষয়গুলোকে তুলে ধরা হবে। থাকবে গণিত, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও বিজ্ঞান নিয়ে দারুণ সব অ্যানিমেশন। আর শিশুদের নিয়ে লাইভ অ্যাকশন ফিল্ম। এছাড়া ‘ইকরির সাথে বর্ণ চেনা’ এবং ‘টুকটুকির সঙ্গে সংখ্যা চেনা’র প্রতিটি পর্বে ইকরি একটি করে বর্ণ এবং টুকটুকি একটি করে সংখ্যা চেনাবে।
১৬তম সিজনের পর্বগুলো বর্ণনামূলক, ‘টুকটুকির বানিয়ে খেলি’ এবং ‘হালুমের তুমিও পারো’ এই তিন ধরনের ফরমেটে তৈরি। এবারের পর্বগুলোতে সিসিমপুরের বন্ধু হালুম, টুকটুকি, ইকরি, শিকুর সাথে নতুন বন্ধু জুলিয়া ছাড়াও অংশ নিয়েছে আমিরা। এছাড়া থাকছে প্রতিবন্ধী, প্রান্তিক এবং আদিবাসী শিশুরাও। আর সিসিমপুরের নিয়মিত অন্যান্য চরিত্ররা তো থাকছেই। এই সিজনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য কিছু পর্বে ব্যবহার করা হয়েছে ইশারা ভাষা।
ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহযোগিতায় নির্মিত ‘সিসিমপুর’ ২০০৫ সাল থেকে প্রাক-প্রাথমিক শিশু বিকাশ কার্যক্রমের আওতায় ‘সর্বত্র শিশুরা হয়ে উঠুক আরও সম্পন্ন, আরও সবল এবং আরও সদয়’ এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সিসিমপুর অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারে সহায়তা করছে ‘মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়’ এবং বিদ্যালয়ভিত্তিক কার্যক্রমে সহায়তা করছে ‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়’। গত ১৮ বছরে ৭শটি ভিডিও এপিসোড তৈরি ও টেলিভিশনে সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছে সিসিমপুর।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেঙ্গল স্টুডিও মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নতুন সিজনের উদ্বোধনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউএসএআইডি বাংলাদেশ-এর ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর র্যান্ডি আলী, শিক্ষা অফিস পরিচালক সোনিয়া রেনল্ডস্ কুপার, এশিয়াটিকের কো-চেয়ারম্যান সারা যাকের, বিটিভির পরিচালক জগদীশ এষ, আরটিভি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান এবং ‘ইউএসএআইডি সিসিমপুর’ প্রজেক্টের চিফ অব পার্টি মোহাম্মদ শাহ আলমসহ অনেক গুণীজন। সঙ্গে ছিল সিসিমপুরের বন্ধু বাহাদুর, ইকরি, শিকু, টুকটুকি, হালুম, জুলিয়া ও নতুন বন্ধু আমিরা।
মন্তব্য করুন