ঢাকাশনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আর ৭৫ বছর পরেই বিশ্ব মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে মালদ্বীপ! 

কানিজ ফাতেমা শিমু

শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ০২:০৮ পিএম


পর্যটকদের স্বপ্নের মালদ্বীপ! যেখানে স্বচ্ছ নীল জলের সৌন্দর্য যে কারোই মন কাড়ে। এছাড়া কাঁচা নারিকেলের গন্ধ ভেসে আসা বাতাস, আর সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য সারা পৃথিবীর ভ্রমণপিপাসুদের মন জয় করে নেয় যে দেশ। সে দেশটিই কি না হারিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব মানচিত্র থেকে। প্রতিনিয়ত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার তলানিতে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন গুনছে পুরো দ্বীপপুঞ্জ।

বিজ্ঞাপন

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি কার্বন নিঃসরণের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকে, তবে ২১০০ সালের শেষের দিকে মালদ্বীপ সমুদ্রের অতল গহ্বরে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মালদ্বীপের গড় উচ্চতা মাত্র দেড় মিটার, যা পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু বসবাসযোগ্য এলাকা। এমনকি ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে, যদি সমুদ্রের স্তর আর এক মিটার বাড়ে, তবে মালদ্বীপের অসংখ্য দ্বীপপুঞ্জ পানির নিচে তলিয়ে যাবে। কেমন হবে তখন? যেখানে লাখ লাখ মানুষ জীবনের ছন্দে, সংস্কৃতির আদলে এই স্বপ্নের দেশে বেড়ে উঠেছে, সেই স্থান একসময় হয়তো শুধুই জলরাশির বুকে মিলিয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু, মালদ্বীপের মানুষরা আজও বেঁচে আছেন নিজেদের কিছু ঐতিহ্যের গল্পে। প্রচলিত আছে মালদ্বীপের মানুষ মনে করেন, তাদের দ্বীপগুলো প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের সঙ্গে এক অতিপ্রাকৃত রহস্যও লুকিয়ে রেখেছে। স্থানীয়দের কাছে প্রচলিত গল্প অনুসারে, এক ভিনদেশি জাদুকর দ্বীপের এক মেয়ে রাজকুমারীকে মুগ্ধ করে বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু রাজকুমারী রাজি না হওয়ায়, জাদুকর ভয়ংকর অভিশাপ দেয় এই দ্বীপকে, যাতে এখানকার লোকজন সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে তলিয়ে যায়। এই মিথ আজও অনেকের মনে গেঁথে আছে। 

আবার আরেকটি গল্পে শোনা যায়, মালদ্বীপে প্রাচীনকালে সমুদ্রের নিচে এক সমুদ্র দেবতার বাস ছিল, যিনি প্রতি বছর মানুষের কাছ থেকে উৎসর্গ দাবি করতেন। স্থানীয় জনগণ তাকে সন্তুষ্ট রাখতে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট দিনের রাতে পানিতে আলোকিত নৌকা পাঠাত। বর্তমানে এটি প্রচলিত না থাকলেও এখনও মালদ্বীপে মালিকি রাত্রি নামের একটি উৎসব পালিত হয়, যেখানে স্থানীয়রা সমুদ্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশেষ নৌকা সাজিয়ে পানিতে ভাসায়।

মালদ্বীপের অন্যতম আকর্ষণ প্রবালপ্রাচীরের মধ্যেও রয়েছে রহস্যময় জীবনের গল্প। তারা বিশ্বাস করেন, এই প্রবালপ্রাচীর হলো তাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষদের আত্মার প্রতীক, যারা আজও তাদের রক্ষা করছে। এই কারণে, প্রবালপ্রাচীরের ক্ষয়ক্ষতি হওয়াকে তারা মনে করেন নিজেদের ভবিষ্যতের ওপর বিপদের ছায়া হিসেবে।

বিজ্ঞাপন

তবে এতকিছুর পরেও মালদ্বীপ হাত গুটিয়ে বসে নেই। দেশটির সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছে। এরজন্য কৃত্রিম দ্বীপ গড়ে তোলা হচ্ছে। এছাড়া প্রবালপ্রাচীরগুলোকে পুনঃসংস্কার করে তারা সাগরের ঢেউয়ের ধাক্কা থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছে।

বিজ্ঞাপন

আরটিভি/এফআই

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |