বছরের শুরুতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ব্যয় বাড়বে সংসারে
উচ্চ পণ্যমূল্যের বাজারে এমনিতেই সংসারে টানাটানি। তার ওপর বছরের শুরুতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ব্যয় বাড়বে সংসারে। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত্ব আয়ের মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইএমএফ ঋণের শর্তের কারণেই ভাট বাড়ানো হচ্ছে। এতে সবক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
যেসব পণ্য বা সেবায় ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে এরমধ্যে ওষুধে দুই দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়ছে ৫ শতাংশ, এলপিজি গ্যাসে পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, তৈরি পোশাকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ বিমান টিকিটে ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা এবং আন্তর্জাতিক বিমান টিকিটে ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া বছরে ৩০ লাখ টাকার বেশি টার্নওভার থাকলে ভ্যাটের খাতায় (টার্নওভার করের তালিকাভুক্তি) নাম লেখাতে হবে। বর্তমানে টার্নওভার করের তালিকাভুক্তির সীমা ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০ লাখ টাকা কমানো হয়েছে। এতে ছোট ব্যবসায়ীরাও ভ্যাটের আওতায় চলে আসবে। একইসঙ্গে ভ্যাট নিবন্ধনের সীমা ৩ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে। এতে পণ্য ও সেবার মূল্য বেড়ে যাওয়ায় জনজীবনে ও ব্যবসায়ীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ঋণ দিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে কর-জিডিপির অনুপাত দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে, টাকার অঙ্কে যা ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। বলা হচ্ছে, এই টাকা জনগণের কাছ থেকে আদায় করতেই বাড়ানো হচ্ছে ভ্যাট ও কোনো ক্ষেত্রে আবগারি শুল্ক।
অর্থনীতিবিদ ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী আমাদের যে পরিমাণ কর হার বাড়ানো দরকার, সেটা বাংলাদেশ পারছে না। এ ছাড়া সাধারণ মানুষ কর প্রদান করেন, কিন্তু সেটি সরকারের কোষাগারে যায় না।
অন্যদিকে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলছেন, ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যের দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে নয়, বরং রাজস্ব বাড়ানোর স্বার্থেই বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, উপদেষ্টা পরিষদ নতুন ভ্যাট হারের বিষয়টি এরইমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। যা আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
আরটিভি/আরএ/এস
মন্তব্য করুন