• ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১
logo

ভয়ংকর নৃত্য, মৃত্যুকে জয় করা যাদের কাছে শিল্প! 

অর্পিতা জাহান

  ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:১৬

মনে করুন, আপনার পায়ের নিচে ১৫ মিটার লম্বা আর দুই টন ওজনের এক ধারালো তলোয়ার। আর আপনি দিব্যি হাটছেন সেই ধারালো তলোয়ারের ওপর। আশ্চর্যের বিষয় যেখানে পা কেটে কিমা হয়ে যাওয়ার কথা সেখানে পড়েছে না কোন দাগও। এমনই এক রোমাঞ্চকর এবং বিপজ্জনক প্রদর্শনীতে কিয়াং জাতির ঐতিহ্যবাহী শিল্পী ওয়াং ইয়াংকে দেখা গেছে চীনের ন্যানিং শহরে। প্রাচীনকালের এই 'তলোয়ার নৃত্য' আজও কিয়াং জাতির সংস্কৃতির অন্যতম অংশ।

শুরুতেই ওয়াং তার প্রথাগত প্রস্তুতি নেন আগুনের মশাল জ্বালিয়ে ধূপকাঠি পুড়িয়ে, দেবতার কাছে দানা ছিটিয়ে শুরু হয় তার প্রার্থনা। ওয়াং জানান, প্রতিটি পরিবেশনার আগে তিনি এই আচার পালন করেন। তিনি নিজের হাতে ঐতিহ্যবাহী কাপড় তুলে নিয়ে বড় তলোয়ারের চারপাশে হাঁটেন, মঞ্চে গিয়ে আলোকের দেবতার কাছে প্রার্থনা করেন। তার প্রার্থনায় থাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তি, শান্তি ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ।

এরপরই তিনি শুরু করেন 'বেয়ারফুট ব্রডসোর্ড' নৃত্য, যেখানে এক পায়ে দাঁড়িয়ে একের পর এক বিপজ্জনক কৌশল দেখান। ‘ঈগলের পাখা মেলা’ কিংবা ‘সাগরের ওপার খোঁজা’ এমন কঠিন কৌশলগুলো করেই তিনি দর্শকদের মুগ্ধ করেন। তার পায়ের নিচে বিশাল তলোয়ারের ধার, আর সামান্য ভুল মানে ভয়ংকর পরিণতি, তবুও ওয়াংয়ের পায়ের কাঁপন নেই। এ যেন সাহস আর ধৈর্যের এক চরম পরীক্ষা।

প্রাচীন কিয়াং জাতির মানুষরা মূলত সিচুয়ানের উত্তর-পশ্চিমে বসবাস করত। তখন শত্রুর আক্রমণ ঠেকাতে তারা শহরের প্রবেশমুখে বিশাল তলোয়ার বসিয়ে তার ওপর এই নৃত্য করত। এই বিপজ্জনক পরিবেশনা তাদের সাহস আর শক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছিল।

ওয়াং জানান, এই নাচ তাদের আঞ্চলিক সংস্কৃতির অঙ্গ, যা বর্তমান সময়েও ‘অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

ন্যানিং শহরের উক্সু এয়ারপোর্ট কনভেনিয়েন্স মার্কেটে আয়োজিত প্রথম ‘ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ কার্নিভ্যাল’ এ বছরের মূল আকর্ষণ ওয়াংয়ের তলোয়ার নৃত্য। উৎসবে আরও রয়েছে আতশবাজির ঝলক, বিশাল খাবারের মেলা। পর্যটকরা এখানে কিয়াং জাতির ঐতিহ্য সম্পর্কে জেনে নিচ্ছেন, আর প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানের এই সংস্কৃতির নিদর্শন দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।

এই প্রাচীন নৃত্য শুধু দর্শকদের বিনোদন নয়; বরং তা হলো সাহস, ধৈর্য আর বিশ্বাসের এক অমূল্য প্রতীক।

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
খালেদা জিয়াকে এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হবে: জাহিদ 
‘গরিব হতে পারি, কিন্তু কট খাইলে এয়ারপোর্টেই খামু’
আজ থেকে এয়ারপোর্ট রোডে যানজটের শঙ্কা