এ যেন আরেক জাহেলিয়াত! ইসলামের ইতিহাসে প্রাচীন যুগে মানুষ সূর্য, পাহাড়, নদী কিংবা সমুদ্রের পূজা করত, আজও পৃথিবীর কিছু প্রান্তে সেই প্রথার অনুরূপ চিত্র দেখা যাচ্ছে। এখন ভিডিওতে যে চিত্র দেখছেন এখানেও চলছে এমন কর্মকাণ্ড।
উত্তাল সমুদ্রের চারপাশে মানুষের ঢল। বর্ণিল পোশাক পরা মানুষ, হাতে ফুল আর খাবারের থালা। কেউ নৌকা ভাসাচ্ছেন তো কেউ ফুল আর নানা উপহার নিয়ে ব্যস্ত। দেখে যেন মনে হয় বিয়ের বড় আচার-অনুষ্ঠান চলছে। কিন্তু ঘটনা আরেকটু ভিন্ন! এরা সবাই সমুদ্রদেবীর পূজায় মগ্ন। তাদের বিশ্বাস, এই দেবী সৌভাগ্য আর জীবনের নিরাপত্তা এনে দেন। তাই প্রতিবছর এই সময় তারা একত্র হন, সমুদ্রের কোলে নিবেদন করেন তাদের বিশ্বাস আর ভালোবাসা।
ব্রাজিলের কোপাকাবানা সমুদ্রতটে আফ্রো-ব্রাজিলীয় সম্প্রদায় প্রতিবছর সমুদ্রদেবী ইয়েমাঞ্জার আরাধনায় এই সমুদ্রের তীরে সমবেত হন। তাদের বিশ্বাস এই দেবী জীবনে কল্যাণ, সৌভাগ্য এবং শান্তি নিয়ে আসেন।
মাদুরেইরা বাজার থেকে শুরু হয় এই জমকালো শোভাযাত্রা। স্থানীয়রা বলেন, ইয়েমাঞ্জা শুধু সমুদ্রের রক্ষকই নন, তিনি নাবিক, জেলে, স্ত্রী এবং মায়েদেরও রক্ষাকর্ত্রী। সমুদ্রতটে পৌঁছে তারা ফুল সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দেন। এর সঙ্গে মিশে থাকে প্রার্থনার আওয়াজ শক্তি, স্বাস্থ্য আর ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষা।
ভিডিওতে দেখা যায়, উপাসকেরা সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে সমবেত গান গাইছেন, নাচছেন, আর একে অপরের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন। তারা আশাবাদী যে এর মাধ্যমে তারা শক্তি, স্বাস্থ্য আর অনেক ভালোবাসা পাবেন এই দেবীর কাছ থেকে। আরেকজন জানান, তিনি প্রতিবছরই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন, কারণ ইয়েমাঞ্জা তাদের মা।
ইয়েমাঞ্জা আফ্রো-ব্রাজিলীয় ধর্ম উম্বান্ডার এক প্রধান দেবী। উম্বান্ডা হলো এক বিশেষ ধর্ম যা আফ্রিকান প্রথা, রোমান ক্যাথলিক ধর্ম, স্পিরিটিজম এবং স্থানীয় আমেরিকান সংস্কৃতির মিশ্রণে গড়ে উঠেছে। ইয়েমাঞ্জাকে ওড়িশাদের মা হিসেবে সম্মান জানানো হয়।
যেখানে বিজ্ঞান ও আধুনিক জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে এখনও মানুষ প্রাকৃতিক শক্তিকে দেবতার রূপ দিয়ে পূজা করছে এটা এক ধরনের হতাশাজনক চিত্র। এমন আচার-অনুষ্ঠান কি সত্যিই সৌভাগ্য বা জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে?
আরটিভি/জেএম/এআর