ঢাকাশুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশকে ভালোবাসি: বিদায় বার্তায় সেই জাপানি ফুটবলার

কুশল ইয়াসির

বুধবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ০৭:৫৭ পিএম


loading/img
ছবি: ইউসুকে কাতোর ফেসবুক থেকে

পেশাদার ফুটবলে দল চালানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে বিপাকে পড়তে হয় ঐতিহ্যবাহী দলটির। পৃষ্ঠপোষকের অভাবে প্রিমিয়ার লিগে অংশ নিতে না পারার শঙ্কা জেগেছিল। কিন্তু এমন সময় ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান ইউসুকে কাতো। জাপানি ফুটবলারের হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়ায় মুক্তিযোদ্ধা।

বিজ্ঞাপন

ফেসবুকে ‘সেভ মুক্তিযোদ্ধা’ নামে পেজ খুলে আকুতি জানিয়ে নজরে এসেছিলেন কাতো। ব্যাপক সাড়াও পেয়েছিলেন এই মিডফিল্ডার। ফেডারেশন কাপ দিয়ে করোনা পরবর্তী ফুটবলে ফিরে বাংলাদেশ। শুরুতে বিকাশের মাধ্যমে অনেকেই মুক্তিযোদ্ধার সহায়তায় এগিয়ে আসে। একটি জাপানি প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে মাঠে নেমেছিল তারা। কোনোমতে টুর্নামেন্টে অংশ নেয় দলটি। 

সামনেই অপেক্ষা করছিল প্রিমিয়ার লিগ। মৌসুম জুড়ে বড় ধরণের খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। তবে বাস্তবতা ছিল ভিন্ন, বড় অংকের অর্থ না থাকায় অনিশ্চিত ছিল সর্বোচ্চ লিগে অংশগ্রহণ।

বিজ্ঞাপন

ইউসুকে কাতোর প্রচেষ্টায় স্থায়ী পৃষ্ঠপোষকতা প্রতিষ্ঠান খুঁজে পায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। ‘হিসাব’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে দলটির হাল ধরতে। পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপও পাশে দাঁড়ায় তাদের। কোচ হিসেবে মালয়েশিয়া থেকে যোগ দেন রাজা ইসা। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে অবনমন এড়াতেও সক্ষম হন কাতো। ১৩ দলের লিগে দশম দল হিসেবে শেষ করেন মৌসুম। 

এখানেই শেষ নয়। দলের ধার-দেনা অনেক ছিল। নিজ দেশে জাপানেও সহায়তা চান কাতো। আত্মীয়, বন্ধু ছাপিয়ে অনেক জাপানি এগিয়ে আসেন। ঢাকায় বসেই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জার্সি বিক্রি করেন এশিয়ার দেশটিতে। সেখান থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা উঠে আসে। তাছাড়া জাপান দূতাবাস ও একাধিক এনজিওর মাধ্যমে দেশের নানা প্রান্তে সেবামূলক কার্যক্রমেও অংশ নিয়েছেন তিনি। মৌসুম শেষ। ছুটি কাটাতে পরিবারের কাছে উড়ে গেছেন দলের অধিনায়ক। তবে মুক্তিযোদ্ধার প্রাণভোমরার ফেরাটা অনেকটা অনিশ্চিত।

‘ফেরার ইচ্ছা আছে। তবে আমার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’ বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) ওসাকার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার আগে আরটিভি নিউজকে বলছিলেন কাতো।  

বিজ্ঞাপন

আর্জেন্টিনা, জাপান, ভারত, থাইল্যান্ড, হংকং, মঙ্গোলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ঘরোয়া ফুটবলে খেলেছেন তিনি। তবে বাংলাদেশিদের ফুটবল প্রেমে মজেছেন তিনি। বয়স এখন ৩৫। চার বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে জাপানে অপেক্ষা করছেন তার স্ত্রী।

নতুন মৌসুমে আবারও বাংলাদেশের মাঠ মাতাতে দেখা যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কাতো বলেন, ‘যদি আমার স্ত্রী না চান, তাহলে আমার কিছু করার থাকবে না। আমি আবার ফিরতে চাই। তার আগে স্ত্রীকে মানাতে হবে।’

২০১৮-১৯ মৌসুমে মুক্তিযোদ্ধার হয়েই বাংলাদেশি ফুটবলে যাত্রা শুরু। ঢাকায় কর্মরত জাপানি বন্ধুর হাত ধরে মুক্তিযোদ্ধায় ট্রায়াল দেন তিনি। এক মৌসুমে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে কাটিয়ে আবারও নাম লেখান মুক্তিযোদ্ধায়। 

‘আশা করি আবারও আসবো। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। সবসময় চেষ্টা করবো বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে অবদান রাখার। আমার জন্য প্রার্থনা করবেন।’

ওয়াই

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |