চরম নাটকীয়তা আর রোমাঞ্চে টইটম্বুর অ্যাশেজের প্রথম দিনটা। টেস্ট ফরম্যাটের নতুন রাজা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই-ই করেছে বাজবলে বলীয়ান ইংল্যান্ড। শেষ বিকেলে ইনিংস ঘোষণা করেও ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দিয়েছে ইংলিশরা।
বার্মিংহামের এজবাস্টনে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইংলিশরা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ঝলক দেখাতে থাকে ইংল্যান্ড দল। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং নৈপুণ্যে শুরুটা হলেও খুব বেশি সময় ক্রিজে থিতু হতে পারেননি ওপেনার বেন ডাকেট। দলীয় ২২ রানে ১০ বলে মাত্র ১২ রানেই ফিরেন এই ওপেনার।
ডাকেট ফিরলে ক্রিজ আঁচরে ঠিকই টিকে ছিলেন আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রাউলি। তিনে নামা ওলি পোপকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালাতে থাকেন তিনি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে নৈপুণ্যে এই জুটি থেকে আসে ৭০ রান। ভালো শুরু করলেও ব্যক্তিগত ইনিংসটা খুব বেশি লম্বা করতে পারেননি টপ-অর্ডারের পোপ। ৪৪ বলে ৩১ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে দলীয় ৯২ রানের মাথায় ফিরে যান তিনি।
তবে ক্রিজে বেশ শক্তভাবে থিতু হন ক্রাউলি। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দ্রুতই ফিফটি হাঁকান। তবে ব্যক্তিগত ৫০ রানের কোটা পেরিয়েই এ যাত্রায় প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন এই ওপেনার। ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস উপহার দিয়ে ফিরেন তিনি।
ক্রাউলি ফিরলেও ততক্ষণে ক্রিজে জমে গেছেন জো রুট। অন্য ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মেলায় ঠিকই নিজের সেরাটার আভাস দিচ্ছিলেন তিনি। তাড়াহুড়া না করে স্বভাবসুলভ গতির ক্রিকেট খেলতে থাকেন রুট। এরপর ৩২ রানে হ্যারি ব্রুক ও মাত্র ১ রানে অধিনায়ক বেন স্টোকস ফিরলে ১৭৬ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারায় ইংলিশরা।
এরপর ক্রিজে আসেন জনি বেয়ারস্টো। এসেই ঝড় তুলেন দীর্ঘদিন পর মাঠে ফেরা এ মিডল-অর্ডার ব্যাটার। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বেশ ভালোভাবেই চাপ সামাল দেয় ইংলিশরা। অন্যদিকে ফিফটি হাঁকিয়ে দ্রুতই ছুটতে থাকেন রুট। এ ছাড়া দ্রুতই ফিফটির কোটা ছুঁয়ে ফেলেন বেয়ারস্টোও। এই দুই ব্যাটারের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকে ইংল্যান্ড।
দলীয় ২৯৭ রানে ৭৮ বলে ৭৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আউট হন বেয়ারস্টো। তবে সাবলীল ব্যাটিং নৈপুণ্যে ঠিকই তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পান রুট। এরপর মঈন আলী, স্টুয়ার্ড ব্রডদের ছোট ছোট অবদানে বড় সংগ্রহের পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল ইংলিশরা। তবে রুটের সেঞ্চুরির পরই ঘটল হতবাক করার মতো এক ঘটনা।
ক্রিজে তখন ১১৮ রানে রুট ও ১৭ রানে রবিনসন অপরাজিত। দুজনেই তখন বেশ সাবলীল ব্যাটিং করছিলেন। ঠিক তখনই ইনিংসের ঘোষণা দেয় ইংলিশ দল। এতেই যেন হতবাক গোটা ক্রিকেট বিশ্ব! ৮ উইকেটে দলীয় ৩৯৩ রান তুলেই ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড।
অন্যদিকে অজিদের হয়ে ১৪৯ রান খরচায় নাথান লায়নের শিকার ৪ উইকেট। এ ছাড়া জশ হ্যাজলউড দুটি এবং স্কট বোল্যান্ড ও ক্যামেরন গ্রিন একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এরপর শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৪ ওভার সুযোগ পায় অজিরা। কোনো উইকেট না হারিয়ে অজিদের সংগ্রহ ১৪ রান। ১৩ বলে ৮ রানে ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং ১২ বলে ৪ রানে আরেক ওপেনার উসমান খাজা ক্রিজে টিকে আছেন।