প্রস্তুতি ক্যাম্পের স্কোয়াড নিয়ে যা বললেন সুজন
আসন্ন বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে ক্রিকেটারদের জন্য তিনদিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প করাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এজন্য ১৭ সদস্যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। আগামী শুক্রবার থেকে চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের তত্ত্বাবধানে শুরু হবে এই ক্যাম্প।
এই ক্যাম্পকে ঘিরে বাড়তি আগ্রহ থাকার কারণ আইসিসির বেধে দেওয়া সূচি অনুযায়ী, পহেলা মে’র মধ্যে বিশ্বকাপের ১৫ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করতে হবে। এরপর ২৫ মে’র মধ্যে স্কোয়াডে পরিবর্তন করা যাবে কোন কারণ ছাড়াই। ফলে জিম্বাবুয়ে সিরিজ শুরুর আগে বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করতে হবে বিসিবিকে। ফলে এই ক্যাম্পটি ক্রিকেটারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন নির্বাচক প্যানেলের ঘোষিত এই স্কোয়াডকে বেশ ব্যালেন্স বলে মন্তব্য করেছেন বিসিবি পরিচালক এবং আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমকে খালেদ মাহমুদ বলেন, যেই দলটা লিপু ভাইরা (নির্বাচক প্রধান) এরই মধ্যে ঘোষণা করেছেন, দারুণ ব্যালেন্স টিম। হয় তো কথা থাকতে পারে, এ নাই- ও আছে। যারা আছে তারা সবাই পারফর্মার। তারা প্রত্যেকে ভালো খেলোয়াড়। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে দেওয়ার মতো অনেক কিছু আছে এই ছেলেদের মধ্যে। শুধু আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমরা আশা করি যে এই ছেলেরা বিস্ময়কর কিছু করে দেবে।
প্রস্তুতি ক্যাম্পের দলে নেওয়া হয়েছে পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনকে। ২০২২ সালের অক্টোবরের পর জাতীয় দলের রাডারে পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ফেরানো হয়েছে পারভেজ হোসেন ইমন, আফিফ হোসেন ও তানভীর ইসলামকে। এছাড়া ওয়ানডে দলের নিয়মিত মুখ তানজিদ হাসান তামিমও রয়েছেন। এছাড়া নিয়মিত সব ক্রিকেটারই রয়েছেন। সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমানকে এই ক্যাম্পে রাখা হয়নি। অটোমেটিক চয়েজ হিসেবেই তারা বিবেচিত হচ্ছেন।
প্রিমিয়ার লিগে ভালো পারফর্ম করে নির্বাচকদের নজর কেড়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। ২০২২ সালে তার অভিষেক হয়েছিল জাতীয় দলে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ২ রান করে থেমে যায় তার পথ। এরপর দেশের জার্সিতে খেলেছিলেন এশিয়া কাপ। যেখানে তার রান ছিল শূন্য ও ২৩।
প্রিমিয়ার লিগে ১২ ইনিংসে ৫৮৫ রান করে শীর্ষে থাকা এ ক্রিকেটারকে কোচ দেখতে চেয়েছেন নিজের আগ্রহে। তার ওপর ভরসা রাখছেন সুজনও। ইমনকে নিয়ে তিনি বলেন, ইমন যেভাবে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে, তার মতো ক্রিকেটারই আমাদের প্রয়োজন এই ফরম্যাটে। আইপিএলের খেলা যদি দেখেন এখন ২৩০-২৪০ রানও কিন্তু ডিফেন্ডেবল না। হয়ে যাচ্ছে কিন্তু। এজন্য শুরুর দিকে কিন্তু ওরকম বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানই দরকার যারা ৬ ওভারে ৭০-৮০ রান করে দেবে। আগে ভাবনায় ছিল ৬ ওভারে ৪০। এখন কিন্তু ওই বেঞ্চমার্ক আর নেই।’
তিনি আরও বলেন, বিশ্বকাপে গিয়ে যে প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলবেন তাদের বিপক্ষে দুই’শর কাছাকাছি রান না করলে আপনি ম্যাচে টিকে থাকতে পারবেন না। এরকম খেলোয়াড়রা যখন সুযোগ পাবে তখন তাদের জন্য ভালো সুযোগ। আমি মনে করি, ইমনকে ওভাবেই (স্বাধীনতা দেওয়া উচিৎ)।
‘আমার পরামর্শ থাকবে ঢাকা লিগে যেভাবে খেলেছে জাতীয় দলে খেললেও যেন কোনো বাড়তি চাপ না নেয়। স্বাভাবিক খেলাটাই যেন খেলে। আমি বিশ্বাস করি ও বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। ও যদি শুরু করে ভালো সেটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে তানজিদ তামিম। ছোট ফরম্যাটে তানজিদও ডেঞ্জারাস ক্রিকেটার হতে পারে।’
ব্যাটিংয়ে নিজেদের পুরো শক্তি নিয়েই আশাবাদী খালেদ মাহমুদ, ‘লিটন আছে। বেশ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। যে কোনো পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারে। খারাপ সময় গেছে। সেটা পরিবর্তন হচ্ছে। ভালো সময় ফিরে আসবে। আশা করছি সামনে সে বাংলাদেশকে অনেক ম্যাচ জেতাবে। বাকি যারা আছে মাঝে, শান্ত, তাওহীদ, মাহমুদউল্লাহ, জাকের, সাকিব আসলে সে; তারা প্রত্যেকে ম্যাচ উইনার। আমাদের ব্যাটিং ইউনিট বেশ ভালো।’
দলের বোলিং নিয়ে এই বিসিবি পরিচালক বলেন, বোলিংয়ে আমাদের তিন পেসারের সঙ্গে সাকিব এবং সাইফউদ্দিন রয়েছে। শেখ মেহেদী এই ফরম্যাটে ভালো বোলার। মিরাজকে নিয়ে অনেক কথা থাকতে পারে। আমি মিরাজকে এখানে একটু আনলাকি ভাববো। নির্বাচকরা যে দল দিয়েছে সেটা ব্যালেন্স। আমি রিশাদকে নিয়ে বেশ খুশি। ঢাকা লিগে খুব ভালো পারফর্ম করবে। এই ধারাবাহিকতা যদি থাকে খুব ভালোভাবেই বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতাবে বলে বিশ্বাস করি।
মন্তব্য করুন