পিসিবি সভাপতির মান রাখছেন আমির, তবুও অসন্তুষ্ট হাফিজ
ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থতা পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়ে ছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। যার মধ্যে অন্যতম ছিল মোহাম্মদ আমির এবং ইমাদ ওয়াসিমকে দলে ফেরানো। ইমাদ দলে নিয়মিত না হলেও প্রতিনিয়ত পিসিবি সভাপতি মাহসিন নাকভির বিশ্বাসের প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন আমির।
২০২০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মোহাম্মদ আমির। সেসময় কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের প্রতি পক্ষপাত আচরণের অভিযোগ তুলে ক্যারিয়ার গুটিয়ে নিয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার। অবসর ঘোষণার সময় জানিয়েছিলেন, কোচিং প্যানেল ও ম্যানেজমেন্ট সরে গেলে আবারও ফিরতে পারেন।
এরপর বিশ্বকাপের আগে অবসর ভেঙ্গে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে দলে ফিরেছিলেন আমির। সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলেও পরের ম্যাচে দুর্দান্ত জয় পায় পাকিস্তান। যেখানে তিন ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচ করে ২ উইকেট তুলে নেন এই বাঁহাতি পেসার। পরের দুটি ম্যাচে সুযোগ পেলে ১ উইকেট তুলতে পারেন।
আয়ারল্যান্ডের সিরিজের দুই ম্যাচে তুলে নেন আরও দুটি উইকেট। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো উইকেট পাননি তিনি। উইকেট না পেলেও বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা যে আমির ভালোভাবেই নিয়েছিলেন তার পারফরম্যান্স দেখলেই বোঝা যায়।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে মাত্র ২৫ রান খরচ করে শিকার করেন ১ উইকেট। তবে ১৯ ওভারে মাত্র ৬ রান খরচ করে দলের জয় অনেকটায় নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন আমির। তবে শেষ ১৫ রান হাতে রেখেও জয় তুলতে পারেননি হারিস রাউফ।
সুপার ওভারে আমির বলে একটি বাউন্ডারি এবং ৩ টি ওয়াইট দিলেও বাবরের অগোছালো ফিল্ডিংয়ে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯ রান। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হারে পাকিস্তান। এই ম্যাচে যেখানে নায়কের ভূমিকায় থাকার ছিল, সেখানে হারিসের দুই ফুলটসে ভিলেন বনে যান আমির।
দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে শুরুতেই থেকেই আগ্রাসী ছিলেন আমির। প্রথম ওভারে পেতে পারতেন উইকেট। কিন্তু তিন বার সুযোগ পেলেও পান্থের ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন পাক ফিল্ডাররা। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ভালোভাবেই ভোগাচ্ছিল পান্থ।
তবে নিজের তৃতীয় ওভারে এসে এই বাঁহাতি ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান আমির। পরের বলে জাদেজা আউট করে পাকিস্তানকে আবারও খেলায় ফেরান এই বাঁহাতি ব্যাটার। এদিন চার ওভারে মাত্র ২৫ রান খরচ করে ২ উইকেট নেন। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় সেই ম্যাচও হেরে যায় পাকিস্তান। সেই সঙ্গে আমিরের এই অবদান গুলোও মাটিতে মিশে যায়।
নিজেদের তৃতীয় এবং বাঁচা মরার ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। এদিন শুরু থেকে শাহিন আফ্রিদি এবং নাসিম শাহর উপর চড়াও হন কানাডার দুই ওপেনার। তৃতীয় ওভারে আমিরের হাতে বল তুলে দেন বাবর আজম। ৭ বলে ৪ রান করা ঢালিওয়ালকে বোল্ড আউট করে পাকিস্তানকে ব্রেকথ্রু এনে দেন এই বাঁহাতি পেসার।
১৭তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন আমির। চার ওভারে ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন তিনি। যা ম্যাচের সেরা বোলিং ফিগার। আমিরের এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরই খুশি হন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজ।
হাফিজ বলেন, পিসিবি লোভে পড়ে তাদের দলে নিয়ে এসেছে। যারা পাকিস্তানের ক্রিকেটকে ধ্বংস করেছে, এমন খেলোয়াড়দের (আমির ও ইমাদ) সঙ্গে তারা লেনদেনের চুক্তি করেছে। আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলাম, কিন্তু কেউ ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে চাইত না।
‘কারণ, তারা আমাকে বলত আমাদের মধ্যে যে কেউ নির্বাচিত হলেই আমরা মেনে নেব। এটা কীভাবে সম্ভব যে, পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে না এমন ক্রিকেটারদের নির্বাচিত করা হলো।’
তিনি আরও বলেন, ছয় মাস আগে, যখন এই দুইজনকে পাকিস্তানের হয়ে খেলার জন্য পিসিবি প্রস্তাব দেয়, তারা সেটা ফিরিয়ে দেয়। কারণ তারা টি-টোয়েন্টি লিগ খেলতে আগ্রহী ছিল। জুনে যখন কোনো লিগ নেই, সেই দুই জন এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলছে এবং এটাকে আরেকটি লিগ মনে করছে।
মন্তব্য করুন