অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে সুপার এইট শুরু বাংলাদেশের
১৪০ রানের মামুলি পুঁজি দাঁড় করানোর পর দ্রুতই উইকেটের দরকার ছিল বাংলাদেশের। তবে সেটি পারেননি টাইগার বোলাররা। ওপেনিংয়ে হেড ও ওয়ার্নারের ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ১১ দশমিক ২ ওভারের পর অ্যান্টিগায় বৃষ্টিতে আর খেলা হয়নি। ১১ দশমিক ২ ওভার পর ডিএলএস পদ্ধতিতে ২৮ রানে এগিয়ে ছিল অজিরা। শেষ পর্যন্ত ফলে সে ব্যবধানেই অজিদের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২১ জুন) স্যার ভিভিয়ান রিচার্ড স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নাজমুল হাসান শান্তর ৩৬ বলে ৪১ রান এবং হৃদয়ের ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংসে ভর করে ১৪০ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১১ দশমিক ২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০০ রান তোলে অজিরা। এরপর খেলা শুরু না হওয়ায় বৃষ্টি-আইনে ২৮ রানে জিতেছে মিচেল মার্শের দল।
তাওহীদ হৃদয়ের ক্যাচ মিসের সুবাদে উড়ন্ত সূচনা পায় অস্ট্রেলিয়া। তানজিমকে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তুলেছিলেন ওয়ার্নার। তবে ক্যারি করা সেই ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি হৃদয়। এতে ৫ রানে জীবন পান এই ওপেনার।
জীবন পেয়েই আগ্রাসী হয়ে উঠেন ওয়ার্নার। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৯ রান তুলে নেন হেড-ওয়ার্নার জুটি।
এরপর উইকেটের খোঁজে রিশাদকে আক্রমণে এনেছিলেন শান্ত। তবে বেরসিক বৃষ্টিতে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। প্রায় ৩০ মিনিট পর ফের খেলা শুরু হয়। এই ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদের হাত ধরে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ট্রাভিস হেডের বিদায়ে ভাঙে তাদের ৬৫ রানের জুটি।
হেডের পর অজি অধিনায়কের উইকেটও নিজের ঝুলিতে পুরেন রিশাদ। সুইপের চেষ্টা করে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন মার্শ। রিভিউ নিলেও তা কাজে আসেনি। আম্পায়ার্স কলে প্যাভিলিয়নে পথ ধরেন তিনি। এতে ৪ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় অজিরা।
এরপর বিশ্বমঞ্চে নিজের অষ্টম ফিফটি তুলে নেন ওয়ার্নার। ৩৪ বলে এই মাইলফলকে পৌঁছান অজি ওপেনার।
অজিদের দলীয় ১০০-এর পরই ফের হানা দেয় বৃষ্টি। ১১ দশমিক ২ ওভার শেষে ডিএলএস পদ্ধতিতে ২৮ রানে এগিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। পরে বৃষ্টিতে আর খেলা না হওয়ায় ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে সে ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অজিরা।
এর আগে, টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি লাল-সবুজ শিবিরের। রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার তানজিদ। মিচেল স্টার্কের প্রথম দুটি বল লো ফুলটস ছিল, তৃতীয়টি ফুললেংথে। তাতে ব্যাট নামিয়েও আটকাতে পারেননি তরুণ এই ওপেনার। ব্যাটের নিচের অংশে লেগে সরাসরি স্ট্যাম্পে ঢুকে বল।
দ্বিতীয় উইকেটে লিটনকে নিয়ে ৫৮ রানের জুটি গড়েন শান্ত। তবে দশম বলে রানের দেখা পাওয়া লিটনও বেশিক্ষণ টেকেননি। ২৫ বলে মাত্র ১৬ রান করে ফেরেন তিনি। জাম্পার ওপর চড়াও হতে গিয়ে স্লগ সুইপের চেষ্টা করেছিলেন। মিস হয়ে বলটি ঢুকে স্ট্যাম্পে।
সারপ্রাইজ প্যাকেজ হিসেবে চারে ব্যাট করতে রিশাদ হোসেনকে পাঠানো হয়েছিল। তিনিও সুবিধা করতে পারেননি। ম্যাক্সওয়েলকে জোরের ওপর খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে থাকেন তিনি।
এরপর ৫ চার ও এক ছক্কায় ৩৬ বলে ৪১ রান করে শান্ত বিদায় নিলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। জাম্পাকে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে হয়নি শান্তর। আবেদনে সাড়া দেন রিচার্ড ইলিংওর্থ। তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত রিভিউ করার প্রয়োজন বোধ করেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক।
এরপর ১০ বল মোকাবিলা করেও দুই অঙ্কের কোটা পেরোতে পারেননি সাকিব। এদিন মাত্র ৩ বল থিতু হতে পেরেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চলতি টুর্নামেন্টে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে গোল্ডেন ডাক উপহার দেন মেহেদী হাসান।
শেষ ওভারে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে রানের চাকা সচল রাখা হৃদয়কে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন কামিন্স। হৃদয়ের দুটি করে চার-ছক্কায় ২৮ বলে ৪০ রানে ভর করে টেনেটুনে সম্মানজনক পুঁজি পায় টাইগাররা।
মন্তব্য করুন