ফার্নান্দেজের বর্ণবাদী কাণ্ডে ফ্রান্সের কাছে ক্ষমা চাইল আর্জেন্টিনা
কোপা আমেরিকার ৪৮তম আসরের ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে ১৬তম শিরোপা ঘরে তুলেছে আর্জেন্টিনা। এই জয়ের পর ফ্রান্সের ফুটবলারদের নিয়ে অত্যন্ত অপমানজনক ও বর্ণবাদী ভাষা ব্যবহার করে গান গেয়েছিলেন আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ ও তার দুই সতীর্থ।
এরপরই ফ্রান্সকে ‘ঔপনিবেশিক’ ও ‘দ্বিচারী’ রাষ্ট্র বলেছিলেন আর্জেন্টিনার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্তোরিয়া ভিয়ারুয়েল। এ ঘটনায় ফ্রান্স সরকারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে আর্জেন্টিনা সরকার।
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের দপ্তর জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিয়ারুয়েলের বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাপারে ব্যাখ্যা করতে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ফরাসি দূতাবাসে পাঠানো হয়েছিল। সেই কর্মকর্তা দূতাবাসকে জানান, ভিয়ারুয়েলের মন্তব্য ছিল একান্ত ব্যক্তিগত।
গত ১৫ জুলাই কোপার ফাইনাল ম্যাচ শেষে টিম বাসে করে হোটেলে ফেরার সময় ফরাসি ফুটবলারদের উদ্দেশে বর্ণবাদী মন্তব্য করেন আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা। এ সময় আবার ভিডিও লাইভ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে পোস্টটি মুছে ফেলে ক্ষমাও চেয়ে নেন ২৩ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
কিন্তু ফার্নান্দেজের বিরুদ্ধে ফিফা ও আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানায় ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ)।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আর্জেন্টিনার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্তোরিয়া ভিয়ারুয়েল এনজো ফার্নান্দেজকে সমর্থন জানিয়ে গত বুধবার এক্সে লেখেন, ‘স্টেডিয়ামে সমর্থকদের স্লোগান দেওয়া ও সত্যি বলার জন্য কোনো ঔপনিবেশিক দেশ আমাদের ভয় দেখাতে পারে না। দ্বিচারী দেশের মেকি বিক্ষোভ অনেক সহ্য করেছি।’
ভিয়ারুয়েল এমন এক সময় ফরাসিদের নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করেছেন, যখন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
তবে ভিয়ারুয়েলের মন্তব্যে দুই দেশের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি হবে না বলেই মনে করে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের দপ্তর। এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র মানুয়েল আদোরনি বলেছেন, ‘ফ্রান্সের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক অটুট থাকবে।’
এদিকে এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন না আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। তবুও তাকে দলের হয়ে ক্ষমা চাইতে বলেন আর্জেন্টাইন ক্রীড়া কর্মকর্তা জুলিও গারো। সঙ্গে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লদিও তাপিয়াকেও ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গারো বলেছিলেন, জাতীয় দলের অধিনায়কের এর জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। এএফএ সভাপতিরও ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমার মনে হয় এটা ঠিক না। এটা আমাদের দেশকে বাজে পরিস্থিতিতে ফেলেছে।
গারোর এই বক্তব্যের পর ফুঁসে ওঠে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট। এরপরই আর্জেন্টিনা সরকারের অফিশিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্টের মাধ্যমে তাকে বরখাস্তের খবর জানানো হয়।
মন্তব্য করুন