পিন্টুর নামে গ্যালারির নামকরণ প্রসঙ্গে সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন তাবিথ আউয়াল
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন ফুটবলের জাদু দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরির কাজ করেছিল ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’। সেই দলের অকুতোভয় অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার পর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কিংবদন্তি এই ফুটবলারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাকারিয়া পিন্টুর প্রিয় প্রাঙ্গন ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ক্লাবে ঢাকা জেলা প্রশাসন তাকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অফ অনার দিয়েছে। সেখানে জানাজা শেষে বাফুফে ভবনে পিন্টুর আরও একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাদ জোহর জাতীয় প্রেস ক্লাবে পিন্টুর দিনের তৃতীয় ও শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক ও বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়ক হলেও জাকারিয়া পিন্টুর বিশেষ কোনো মুহূর্তের ছবি নেই বাফুফে ভবনে। অন্তত একটি স্মৃতি ফেডারেশনে জায়গা পাওয়ার দাবি রাখে।
বিষয়টিকে সমর্থন করে নতুন বাফুফে সভাপতি বলেন, তিনি আমাদের ফুটবল ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম কিংবদন্তী। বাফুফে নির্বাহী সভায় আমরা এটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
বিশ্বের অনেক ক্রীড়া স্টেডিয়াম, গ্যালারির নামকরণ হয় কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের নামে। বাংলাদেশে এই চর্চা খুব কম। তাই বাংলাদেশের কোনো ফুটবল স্থাপনায় পিন্টুর নাম ব্যবহার করবেন কিনা এই প্রশ্ন করা হয় তাবিথ আউয়ালকে। এ বিষয়ে সরকারের কোর্টেই বল ঠেলেছেন তিনি।
তাবিথ বলেন, স্টেডিয়ামগুলো সরকারের অধীনে। আমরা নির্বাহী সভায় আলোচনা করে এই বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারি।
জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ভারতের নদীয়াসহ বিভিন্ন রাজ্য ও জেলায় ১৬টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ১২টিতে জিতেছিল। ওই ম্যাচগুলো খেলে যে অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল, তা তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধ তহবিলে দিয়েছিলেন তারা।
পরে ১৯৭২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি একাদশ ও মুজিবনগর একাদশের মধ্যে প্রথম ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সেই ম্যাচে মুজিবনগর একাদশের অধিনায়ক ছিলেন এই ডিফেন্ডার। এ ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়কও ছিলেন তিনি।
এরপর ১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯তম মারদেকা ফুটবলে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন পিন্টু। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে সংগঠকও ছিলেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের পরিচালক পদেও কাজ করেছেন সাবেক এই তারকা ফুটবলার।
১৯৪৩ সালে অবিভক্ত ভারতবর্ষের নওগাঁয় জন্ম নেওয়া এই ফুটবলার বাংলাদেশ সরকার থেকে ১৯৯৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
আরটিভি/এসআর
মন্তব্য করুন