রিভার্স সুইং নিয়ে ফিরছেন রাজু
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১২ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল পেস বোলিং অলরাউন্ডার আবুল হাসান রাজুর। অভিষেকের পর খেলেছেন ৬টি ম্যাচ। কিন্তু একটি উইকেটের দেখাও তিনি পাননি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এবার সিলেট সিক্সার্সের হয়ে খেলেছেন। আর এ দলটির মেন্টর ছিলেন পাকিস্তানের কিংদন্তি পেসার ওয়াকার ইউনিস। তাই বিপিএল জুড়েই এ কিংবদন্তির ছোঁয়া পেয়েছেন রাজু। আর তাতেই নিজেকে আরো শাণিত করতে পেরেছেন বলেও বিশ্বাস যুবা পেসারের। বিশেষ করে ওয়াকারের সেরা অস্ত্র রিভার্স সুইং নিয়ে বেশি কাজ করেছেন তিনি। এবার মাঠে সেটা প্রয়োগ করেই নিজেকে প্রমাণ করতে চান রাজু।
২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল ঘরের মাঠ মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন রাজু। এরপর আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে। মাঝে প্রায় প্রতিবারই প্রাথমিক দলে থাকলেও মূল দলে জায়গা হয়নি। দীর্ঘদিন পর ফিরে এসেছেন মূল দলে। মূলত ফেরার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলেন। আর বিপিএলে পারফর্ম করেই এগিয়ে গিয়েছেন। বুলাওয়া এক্সপ্রেস নামে একসময় পরিচিত সাবেক পেসার ও পাকিস্তানের সাবেক কোচ ওয়াকারের সঙ্গে কাজ করে বেশ উন্নতিও করেছেন রাজু। এবার জাতীয় দলের হয়ে তা দেখানোর ব্যাপারে দারুণ আত্মবিশ্বাসী এ পেসার।
নিজের সেরা প্রসঙ্গে রাজু বলেন, বিপিএল আসলে এই জায়গায় আসার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল আমার কাছে। ওয়াকার ভাই ছিল আমাদের দলে। আমার অনেক আত্মবিশ্বাস ছিল যে ওয়াকার ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করে স্কিলগুলোর উন্নতি করতে পারব। আমি যেটা পারসোনালি অনূভব করি, আমার রিভার্স সুইংটা নিয়ে অনেক বেশি কাজ করেছি ওয়াকার ভাইয়ের সঙ্গে। স্লো বল নিয়েও। আমি আত্মবিশ্বাসী। এখানে প্রমাণ করার সময় আসছে। আমি প্রমাণ করতে পারছি, সবচেয়ে বড় জিনিস হলো আমি আত্মবিশ্বাসী।
অভিষেক বোলার হিসেবে হলেও অভিষেকেই ব্যাট হাতে গড়েছিলেন অনন্য কীর্তি। খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টেই ১০ নম্বরে নেমে দারুণ এক সেঞ্চুরি করেন। তবে বল হাতে বরাবরই বিবর্ণ ছিলেন। ৩ টেস্টে উইকেট মাত্র ৩টি। আর ৬টি ওয়ানডে খেলে এখনো কোনো উইকেটের দেখা পাননি তিনি। শুধু তাই নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটেও ব্যাটিংয়ে তার উন্নতি দেখা যাচ্ছে নিয়মিতই। কিন্তু সে অর্থে বোলিংয়ের উন্নতি ততটা দৃশ্যমান নয়।
ওয়াকার কি শেখালেন জানতে চাইলে রাজু বলেন, সবকিছুর মেইন অস্ত্র হলো স্ট্রেংথ। ওয়াকার জাস্ট একটি কথাই বলেছিল আমাকে মেইনটেইন করে যাও। বোলিং করতে থাকো। কিছুতো তা ব্যবধান আছেই। বল ধরার মধ্যে বা অন্যকিছুর মধ্যে।
এদিকে জাতীয় দলে বর্তমানে বোলিং কোচ রয়েছেন তিনজন। তাদের কাছ থেকেও শিখছেন বলে জানালেন রাজু, উমমম..,এখানে পেস বোলিং ক্যাম্পে তো চম্পাকার সঙ্গে অকে দিন কাজ করছি। এমনকি এখনও করছি। (কোর্টনি) ওয়ালশের সঙ্গে আগে ওরকম কাজ করার সে সুযোগ হয়নি আমার। তার সঙ্গে কাজ করছি। চাচার (খালেদ মাহমুদ সুজন) সঙ্গে তো আগে থেকেই আছি। তিনজনই একই কথাই বলেন। লাইন অ্যান্ড লেংথ। তাই ওইটা নিয়েই বেশি কাজ করছি।
এবার মূল একাদশে সুযোগ পেলে ভিন্ন কিছু করে দেখাবেন বলে আত্মবিশ্বাসী রাজু, ইনশাল্লাহ, আমি আত্মবিশ্বাসী। আসলে আগে একটু ভিন্ন ছিলাম। এখন অনেক কিছুই বদলেছে। দেখি যদি চান্স পাই তাহলে নিজেকে প্রমাণ করব।
ঠিক কোথায় কোথায় নিজের উন্নতি করেছেন জানতে চাইলে বলেন, লাইন অ্যান্ড লেংথ। বোলিং নিয়ে অনেক বেশি কাজ করেছি অফ সিজনে। বিপিএলেও অনেক বেশি কাজ করেছি। ওয়াকার ভাই...চম্পাকা, সুজন ভাই সবার সঙ্গে কাজ করেছি।
আড়াই বছর জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও পারফরম্যান্সের কারণে বাইরে ছিলেন তা মানতে নারাজ রাজু। জানালেন ইনজুরির কারণেই বাইরে ছিলেন তিনি, কারণটা ইনজুরি। আমি আসলে তিন বছর ক্রিকেটের বাইরে ছিলাম ইনজুরির কারণে। আল্লাহর রহমতে এখন সবকিছু ওভারকাম করেছি। সুতরাং, দেখি এখন কি হয়। আবার এখানে এসেছি। এটা নিজেকে প্রমাণ করার সময়।
শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজকে (১৫ জানুয়ারি শুরু) সামনে রেখে ঘোষিত ১৬ সদস্যের স্কোয়াডে সুযোগ মিলেছে ২৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের। এবার অপেক্ষা সেরা একাদশের।
এএ
মন্তব্য করুন