তামিমের অবসরে যা বললেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ
নানা নাটকীয়তার পর শেষমেশ জাতীয় দলে না ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন এই দেশসেরা ওপেনার। গতকাল শুক্রবার রাতে ফেসবুকে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়ে অবসরের কথা জানান তামিম।
বাঁহাতি এই ওপেনারের অবসর ঘোষণার পর চুপ থাকতে পারেননি জাতীয় দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে তামিমকে উদ্দেশ্য করে বার্তা দিয়েছেন তারা।
পোস্টে মুশফিক লিখেছেন, তামিম তোমার অবসরে আমি প্রকাশ করতে চাই যে, তুমি যা অর্জন করেছো, তার জন্য আমি কতটা গর্বিত। বন্ধু, তুমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন অসামান্য দূত এবং একজন বিশ্বমানের ব্যাটার।
২০১৮ সালে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আঙুলের চোট নিয়ে খেলতে নেমে কোটি ভক্তের হৃদয় জিতেছিলেন তামিম। সেই বীরত্বের স্মৃতিচারণ করে মুশফিক লিখেছেন, আমি সবসময় দুবাইয়ে আমাদের জুটির কথা মনে রাখবো। বিশেষ করে যখন তুমি একটি ভাঙা আঙুল দিয়ে ব্যাট করেছিলে। এটি দেশের প্রতি তোমার উত্সর্গ এবং খেলার প্রতি আবেগকে প্রকাশ করে।
এদিকে মাহমুদউল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তামিম, দীর্ঘ ও চমৎকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তোমার বিস্ময়কর অর্জনের জন্য অনেক অভিনন্দন। তুমি অনেক কিছু অর্জন করেছো এবং বাংলাদেশ দলের জন্য অনেক অবদান রেখেছেঅ। আমার মনে হয় এটাই ছিল শেষবারের মতো আমরা বাংলাদেশ দলের হয়ে একসঙ্গে ব্যাটিং করেছি।
‘তোমার সঙ্গে খেলাটা আনন্দের ছিল। মাঠ ও মাঠের বাইরে তোমার সঙ্গে অনেক স্মৃতি শেয়ার করেছি। আমি তোমার সুখী অবসর কামনা করি এবং তোমার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই। আপনাকে সর্বদা মনে থাকবে।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণার আগে তামিমকে পরিবারে সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। তবে তিনি না ফেরা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।
তামিম তার পোস্টে লিখেছেন, অনেক দিন ধরেই এটা নিয়ে ভাবছিলাম। এখন যেহেতু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় একটি আসর সামনে, আমি চাই না আমাকে ঘিরে আবার অলোচনা হোক এবং দলের মনোযোগ ব্যাহত হোক। এটা অবশ্য আগেও চাইনি। চাইনি বলেই অনেক আগে নিজেকে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছি। যদিও অনেকেই বলেছেন, অনেক সময় মিডিয়ায় এসেছে, আমিই নাকি ব্যাপারটি ঝুলিয়ে রেখেছি। কিন্তু বিসিবির কোনো ধরনের চুক্তিতে যে নেই, এক বছরের বেশি সময় আগে যে নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, তাকে পরিকল্পনায় রাখা বা তাকে নিয়ে আলোচনারও তো কিছু নেই। তার পরও অযথা আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও লিখেছেন, অবসর নেওয়া বা খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একজন ক্রিকেটার বা যেকোনো পেশাদার ক্রীড়াবিদের নিজের অধিকার। আমি নিজেকে সময় দিয়েছি। এখন মনে হয়েছে, সময়টা এসে গেছে।
২০২৩ সালে আফগানিস্তান সিরিজ চলাকালীন আচমকা সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নেন তামিম। তখন তিনি ছিলেন দলের অধিনায়ক। এই সময় তুমুল আলোড়ন তৈরি করে এই ঘটনা। পরদিন ঢাকায় তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন তিনি, বেরিয়ে এসে জানান সিদ্ধান্ত বদলের কথা।
এরপর ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দুই ম্যাচ খেলেন তিনি। তবে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তার দূরত্বের খবর ঘটনা অন্য দিকে মোড় নিয়ে নেয়। তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ।
আরটিভি/এসআর/এস
মন্তব্য করুন