২২ গজে ছাড়াও অবসর সময়ে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে ক্রিকেট গেম খেলে থাকে ভক্তরা। সারা বিশ্বে প্রায় ১০০টি কোম্পানি খেলোয়াড়দের ছবি-নাম ব্যবহার করে এই গেম বানাচ্ছে অনুমতি ছাড়াই। এর থেকে খেলোয়াড়রা কোনো আয়ও পাচ্ছেন না।
তাই প্রথমবারের মতো মোবাইল ক্রিকেট গেম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে আইসিসি। যা ভবিষ্যতে সম্প্রচার স্বত্ব থেকে রাজস্বের সম্ভাব্য মন্দায় আয়ের বিকল্প উৎস হিসেবে কাজ করবে।
বুধবার (৯ এ্রপ্রিল) জিম্বাবুয়ের হারারেতে আইসিসির বোর্ড মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রধান নির্বাহী কমিটির (সিইসি) কাছে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তাব করবে আইসিসির ডিজিটাল টিম।
২০২৪ সালে ভারতের মোবাইল গেমিং বাজারের আকার ছিল প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটিই আইসিসিকে নতুন গেম চালুর পরিকল্পনার দিকে এগিয়ে যেতে সবচেয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ করছে।
ক্রিকেট গেমিংয়ের ইতিহাস বহু বছর ধরে থাকলেও এবারই প্রথম আইসিসি নিজস্ব গেম তৈরি করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে দ্রুত বর্ধনশীল ও লাভজনক বাজারে অংশ নিতে চায় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
গেম চালুর ধারণাটি আগেই আলোচনা হয়েছে। মিটিং থেকে সবুজ সংকেত আসলে আলোর মুখ দেখতে শুরু করবে এই পরিকল্পনা। এর জন্য আইসিসি পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর অনুমোদন লাগবে। সেটি পেলে গেম ডেভেলপার নিয়োগের জন্য টেন্ডার ছাড়বে আইসিসি।
আইসিসি তাদের টুর্নামেন্টগুলোতে অংশগ্রহণকারী সব দলের এনআইএল অধিকার অর্জন করে। কিন্তু সেটি শুধু ওই টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ের জন্য প্রযোজ্য। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তারা এ অধিকার পায় না।
যদি গেমটিতে জাতীয় দলের পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি বা ঘরোয়া দলগুলোকেও যুক্ত করতে চায়, তবে আইসিসিকে বিভিন্ন বোর্ডের (যেসব দেশে খেলোয়াড়দের অ্যাসোসিয়েশন নেই, যেমন ভারত ও পাকিস্তান) এবং বিশ্বব্যাপী খেলোয়াড়দের সংগঠন ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিউসিএ) সঙ্গে আলাদা করে চুক্তি করতে হবে।
২০২৪ সালের শুরুতে ডব্লিউসিএ একটি দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব চুক্তি করে ‘উইনার্স অ্যালায়েঞ্জ’ এর সঙ্গে। যা পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়দের সংগঠন পিটিপিএ’র একটি অঙ্গ সংগঠন। এখন থেকে ডব্লিউসিএ ভুক্ত দেশগুলোর (অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা) খেলোয়াড়দের পক্ষে এনআইএল চুক্তির বিষয়গুলো দেখাশোনা করবে উইনার অ্যালায়েঞ্জ।
আইসিসির পরিকল্পনার বিষয়টি জানলেও এখনও প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি ডব্লিউসিএ। আইসিসিও জানে ডব্লিউসিএর সঙ্গে কোনো না কোনো লাইসেন্সিং চুক্তিতে আসতেই হবে। কিন্তু তাদের সম্পর্কের অতীত ইতিহাস বিবেচনায় এমন কোনো চুক্তি সহজ হবে না বলেই ধরা হচ্ছে।
কারণ, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ভারতীয় খেলোয়াড়দের এনআইএল অর্জন। যেহেতু সেখানে কোনো খেলোয়াড়দের সংগঠন নেই এবং ডব্লিউসিএর সঙ্গেও কোনো সম্পর্ক নেই, তাই ভারত গেম নির্মাণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নামের অধিকার পাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ক্রিকেটের সবচেয়ে লাভজনক টুর্নামেন্ট। এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক আলোচনায় আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো আইসিসির গেমে তাদের নাম ব্যবহার করতে দিতে অনিচ্ছুক।
আরটিভি/এসআর